ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৬ এপ্রিল ২০২৫, ১৩ বৈশাখ ১৪৩২

সুদানের দারফুরে দুই সপ্তাহে নিহত প্রায় ৪৮০ বেসামরিক নাগরিক: জাতিসংঘ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশিত: ১০:৩৯, ২৬ এপ্রিল ২০২৫; আপডেট: ১০:৪৪, ২৬ এপ্রিল ২০২৫

সুদানের দারফুরে দুই সপ্তাহে নিহত প্রায় ৪৮০ বেসামরিক নাগরিক: জাতিসংঘ

ছবিঃ আল জাজিরা

সুদানের উত্তর দারফুর অঞ্চলে মাত্র দুই সপ্তাহের ব্যবধানে ৪৮০ জনেরও বেশি বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। জাতিসংঘের মানবাধিকার দপ্তর শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) জানায়, ১০ এপ্রিল থেকে অন্তত ৪৮১ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে, তবে প্রকৃত সংখ্যা আরও অনেক বেশি হতে পারে।

জাতিসংঘ আরও জানিয়েছে, ওই এলাকায় নারী, শিশু, এমনকি কিশোর-কিশোরীদের ওপর ভয়াবহ যৌন নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে, যা ‘ভয়ংকর ও অগ্রহণযোগ্য’।  

জাতিসংঘ মানবাধিকার প্রধান ভলকার তুর্ক বলেন, “সুদানি জনগণের কষ্ট কল্পনার বাইরে, হৃদয়ে ধারণ করাও কঠিন এবং কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।”

উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ১৫ এপ্রিল থেকে সুদানে সেনাবাহিনী ও আধাসামরিক বাহিনী র‍্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (RSF)-এর মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। সেনাপ্রধান আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান ও তার সাবেক উপপ্রধান মোহাম্মদ হামদান দাগলোর বাহিনীর মধ্যে চলমান এই সংঘাতে ইতিমধ্যেই হাজার হাজার মানুষ নিহত হয়েছেন এবং লাখ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত।

জাতিসংঘ জানায়, ১১-১৩ এপ্রিলের মধ্যে জামজাম শরণার্থী ক্যাম্পে সংঘটিত এক হামলায় ২১০ জন নিহত হন, যাদের মধ্যে ৯ জন চিকিৎসক ছিলেন। তুর্ক বলেন, “ওই সময় নারী, শিশু, কিশোরদের ধর্ষণ বা গণধর্ষণের শিকার হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।” 

এছাড়া রবিবার থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত এল-ফাশের শহর, উম কেদাদা জেলা ও আবু শোক শরণার্থী ক্যাম্পে আরও ১২৯ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে কিছু হামলা জাতিগতভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ছিল বলেও জানিয়েছে জাতিসংঘ।

RSF-এর নিয়ন্ত্রিত বন্দিশিবিরে খাদ্য, পানি ও চিকিৎসার অভাবে অনেক মানুষ মারা গেছে বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। অনেকে সহিংসতা এড়িয়ে নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে দিনের পর দিন হাঁটতে গিয়ে চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন।

এই সংকটে জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (WFP) জানিয়েছে, অর্থাভাবের কারণে অচিরেই খাদ্য সহায়তা কমিয়ে আনার আশঙ্কা রয়েছে। ইতিমধ্যে দুর্ভিক্ষপ্রবণ এলাকায় রেশন ৭০ শতাংশ কমিয়ে দেওয়া হয়েছে।

সহায়তাকারী ও চিকিৎসা কর্মীদের ওপর বারবার হামলার ফলে মানবিক সহায়তা কার্যক্রমও হুমকির মুখে পড়েছে বলে জানান ভলকার তুর্ক। “ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তার ব্যবস্থা প্রায় ভেঙে পড়েছে,” তিনি বলেন।

এরই মধ্যে যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ল্যামি দারফুর অঞ্চলের সহিংসতাকে জাতিগত নিধনের লক্ষণ এবং মানবতাবিরোধী অপরাধের পর্যায়ে ফেলে মন্তব্য করেছেন। তিনি উভয় পক্ষকে অবিলম্বে উত্তেজনা প্রশমনের আহ্বান জানান এবং দোষীদের জবাবদিহির আওতায় আনার কথা বলেন।

সূত্র: আল জাজিরা

মুমু

×