
ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। ছবিঃ সংগৃহীত
ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) সমস্ত রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে ফোনে কথা বলেন এবং তাদের নির্দেশ দেন, নিজ নিজ অঞ্চলে অবস্থানরত পাকিস্তানি নাগরিকদের শনাক্ত করে পূর্বঘোষিত সময়সীমার মধ্যে তাদের দেশত্যাগ নিশ্চিত করতে।
এই নির্দেশ আসে ২২ এপ্রিল পেহেলগামে ঘটে যাওয়া বর্বর সন্ত্রাসী হামলার প্রেক্ষিতে, যেখানে ২৫ জন পর্যটক এবং এক স্থানীয় বাসিন্দাকে কাছ থেকে গুলি করে হত্যা করা হয় এবং ১২ জন গুরুতরভাবে আহত হন। তদন্তে জানা গেছে, পাকিস্তানভিত্তিক সন্ত্রাসী সংগঠনের সঙ্গে সম্পৃক্ত অস্ত্রধারীরা এই হামলা চালিয়েছে।
এই ঘটনার পর ভারত সরকার পাকিস্তানি নাগরিকদের জন্য ১৪ ধরনের ভিসা বাতিল করেছে। এর মধ্যে ব্যবসা, সম্মেলন, ভ্রমণ ও তীর্থযাত্রা ভিসা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। ২৭ এপ্রিল থেকে এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হচ্ছে। শুধুমাত্র দীর্ঘমেয়াদি, কূটনৈতিক ও সরকারি ভিসাধারীরা এর আওতার বাইরে থাকবেন। বর্তমানে ভারতে অবস্থানরত যেসব পাকিস্তানি নাগরিক চিকিৎসা ভিসায় এসেছেন, তাদের জন্য ২৯ এপ্রিল পর্যন্ত সংক্ষিপ্ত সময়ের এক্সটেনশন দেওয়া হয়েছে।
শাহের নির্দেশনার পর স্বরাষ্ট্র সচিব গোবিন্দ মোহন ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সব রাজ্যের মুখ্যসচিবদের সঙ্গে বৈঠক করেন এবং নির্দেশনার কঠোর বাস্তবায়নের উপর জোর দেন। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের দ্রুত পাকিস্তানি নাগরিকদের শনাক্ত করে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তাদের ভারত ছাড়ার প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করতে বলা হয়েছে।
এই ভিসা বাতিলের পাশাপাশি, ভারত সরকার বেশ কিছু কূটনৈতিক ও কৌশলগত পদক্ষেপ নিয়েছে—যেমন পাকিস্তানি সামরিক অ্যাটাশিদের বহিষ্কার, ১৯৬০ সালের ইন্দাস জলচুক্তি স্থগিত এবং অবিলম্বে অটারি স্থলসীমান্ত ট্রানজিট পয়েন্ট বন্ধ।
এই নতুন ব্যবস্থা ভারত সরকারের পাকিস্তানের প্রতি কড়া বার্তা দেয়-কাশ্মীরে বেসামরিক নাগরিকদের লক্ষ্য করে চালানো "পূর্বপরিকল্পিত ও নৃশংস হামলার" দায়ভার তাদেরই নিতে হবে।
উল্লেখ্য, প্রতিবছর শত শত পাকিস্তানি নাগরিক ভারতে চিকিৎসার জন্য ভিসা পান, বিশেষ করে দিল্লি, মুম্বাই, চেন্নাই ও হায়দরাবাদের উন্নত হাসপাতালে কিডনি প্রতিস্থাপন, শিশুদের হৃদরোগ সার্জারির মতো জটিল চিকিৎসার জন্য। মানবিক দিক বিবেচনায় এসব ভিসা সাধারণত ভারতীয় হাই কমিশন ইসলামাবাদ থেকে ইস্যু করে থাকে।
সূত্র: দ্যা ট্রিবিউন
মুমু