
ছবিঃ সংগৃহীত
ভারতের জম্মু-কাশ্মীরের জনপ্রিয় পর্যটন এলাকা পেহেলগামে ঘটে গেল এক ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলা। প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ২৬ জন নিরীহ পর্যটক। হামলার পরপরই ভারত সরাসরি পাকিস্তানের দিকে অভিযোগের আঙুল তোলে। দেশটির পক্ষ থেকে উঠে আসে কঠোর প্রতিক্রিয়া—সিন্ধু চুক্তি বাতিল, আটারির সীমান্ত বন্ধ, পাকিস্তানিদের ভিসা বাতিলসহ পাঁচটি কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক পদক্ষেপ নেওয়ার ঘোষণা দেয় ভারত।
তবে এই ঘটনার মাঝে সামনে এসেছে এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। হামলাটি আদৌ বাইরের সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর কাজ ছিল কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন স্বয়ং এক ভারতীয় সেনা কর্মকর্তা।
চাঞ্চল্যকর ভিডিও বার্তায় সেনা কর্মকর্তার দাবি
অশোক কুমার নামের ওই সিনিয়র ভারতীয় সেনা কর্মকর্তা একটি ভিডিও বার্তায় বলেন, “এই হামলা বাইরের কোনো জঙ্গি হামলা নয়। এটা ভারতের ভেতরের রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত একটি সাজানো হামলা।” তিনি আরও বলেন, “মিডিয়াতে যেটা দেখানো হয়েছে তার অধিকাংশই মিথ্যা। আমি যদি সত্যটা না বলি, তাহলে নিজের বিবেকের কাছে অপরাধী হব।”
তার ভিডিওতে উঠে আসে আরও কিছু গুরুতর অভিযোগ। তিনি বলেন, হামলার পর আহত সৈনিকরা দীর্ঘ সময় ধরে পড়ে থাকলেও তাদের উদ্ধারে কেউ এগিয়ে আসেনি। ঘটনাস্থলে কোনো মেডিকেল টিম বা কমান্ডো ইউনিটও পাঠানো হয়নি বলে দাবি করেন তিনি।
ভৌগোলিক বাস্তবতা ও সন্দেহ
অশোক কুমারের ভাষ্যমতে, যেখানেই হামলাটি হয়েছে, তা পাকিস্তান সীমান্ত থেকে অনেক দূরে ও ভৌগোলিকভাবে অত্যন্ত দুর্গম এলাকা। তার দাবি, বাইরের কেউ সেখানে সহজে প্রবেশ করে এমন হামলা চালানো সম্ভব নয়।
ভিডিওটি সরিয়ে ফেলা ও প্রশ্নবিদ্ধ সরকার
ভিডিওটি প্রথমে একটি “এনালিস্ট” নামের এক্স (সাবেক টুইটার) একাউন্ট থেকে পোস্ট করা হয়। কিন্তু কিছুক্ষণের মধ্যেই তা সরিয়ে ফেলে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ। ভিডিওর সেনা কর্মকর্তার ভবিষ্যত কী হয়েছে, তা এখনও জানা যায়নি।
এই ঘটনার পর পাকিস্তানও ক্ষোভ প্রকাশ করে জানায়, তদন্ত ছাড়াই তাদের ওপর দায় চাপানো অন্যায়। তাদের ভাষায়, এটি ছিল ভারত সরকারের সাজানো একটি ঘটনা, যার মাধ্যমে তারা রাজনৈতিক ফায়দা নিতে চায় এবং আন্তর্জাতিক মহলের নজর ঘোরাতে চায়।
এই ঘটনার জেরে মোদি সরকারের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। পাশাপাশি কাশ্মীরে দীর্ঘদিন ধরে চলা দমন-পীড়নের প্রকৃত রূপ নিয়েও নতুন করে বিতর্ক শুরু হয়েছে।
মারিয়া