
ছবি : সংগৃহীত
ওয়ার্ল্ড পপুলেশন রিভিউয়ের গবেষণার ভিত্তিতে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি ঘৃণিত ১০টি দেশের তালিকা তুলে ধরা হয়েছে, যেখানে শীর্ষে রয়েছে চীন এবং ১০ম স্থানে রয়েছে ভারত। নিউজউইক-এর বরাতে ফিন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেস জানিয়েছে, এই র্যাংকিং আন্তর্জাতিক বিভিন্ন প্রতিবেদন এবং বৈশ্বিক জনমত জরিপের সম্মিলিত ফলাফলের ওপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই জরিপের ফল বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন দেশের সরকার ও তাদের নীতিনির্ধারণী ব্যবস্থার প্রতি বাড়তে থাকা অসন্তুষ্টি ও হতাশার প্রতিফলন।
প্রতিবেদনে চীনের বিষয়ে উল্লেখ করা হয়েছে যে, দেশটির কর্তৃত্ববাদী শাসনব্যবস্থা, কড়া সেন্সরশিপ, এবং বৈশ্বিক পরিবেশ দূষণে ভূমিকার কারণে বারবার সমালোচনার মুখে পড়েছে তারা। হংকং, তাইওয়ান ও ম্যাকাওয়ের স্বাধীনতা প্রশ্নে চীনের অনড় অবস্থান এবং উইঘুর মুসলিমদের প্রতি দমনমূলক আচরণ আন্তর্জাতিক পর্যায়ে দেশটির প্রতি অবিশ্বাস আরও বাড়িয়ে তুলেছে।
তালিকার দ্বিতীয় ও তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে যথাক্রমে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়া। যুক্তরাষ্ট্র নানা বৈশ্বিক হস্তক্ষেপ, রাজনৈতিক দ্বিমুখিতা ও সামরিক আগ্রাসনের জন্য সমালোচিত হয়, আর রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধসহ বিভিন্ন কূটনৈতিক ও সামরিক উত্তেজনার কারণে সমালোচনার শীর্ষে।
চতুর্থ স্থানে রয়েছে উত্তর কোরিয়া, যাদের একনায়কতান্ত্রিক শাসন, পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষার হুমকি এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ দীর্ঘদিন ধরে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে উদ্বেগের কারণ। গাজায় গণহত্যা এবং ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে দমননীতির কারণে পঞ্চম স্থানে রয়েছে ইসরাইল।
তালিকার ছয় থেকে নয় নম্বরে রয়েছে যথাক্রমে পাকিস্তান, ইরান, ইরাক ও সিরিয়া। প্রতিটি দেশই তাদের অভ্যন্তরীণ সংঘাত, মৌলবাদী কর্মকাণ্ড, মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং রাজনৈতিক অস্থিরতার জন্য আন্তর্জাতিকভাবে সমালোচিত হয়ে আসছে।
ভারত সম্পর্কে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশে ক্রমবর্ধমান ধর্মীয় উত্তেজনা, সংখ্যালঘুদের প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণ এবং ইন্টারনেট সেন্সরশিপের ফলে ভারতের বৈশ্বিক ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর পাশাপাশি সীমান্ত বিরোধ এবং রাজনৈতিক অস্থিরতা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলছে।
সার্বিকভাবে, এই তালিকা বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলের সরকার ও তাদের নীতির প্রতি নাগরিকদের আস্থাহীনতা এবং বৈশ্বিক অসন্তোষের একটি প্রতিফলন হিসেবেই উঠে এসেছে।
আঁখি