
ছবি: সংগৃহীত
কাশ্মীরের পেহেলগামে সাম্প্রতিক সন্ত্রাসী হামলাকে ঘিরে উঠেছে নানা প্রশ্ন। রাজ্যটিতে বিপুল সেনা উপস্থিতি থাকা সত্ত্বেও জনপ্রিয় পর্যটন এলাকা পেহেলগ্রামে নিরাপত্তার এত ঘাটতি কেন—তা নিয়েই সরব হয়েছে ভারতীয়রাই। বিশেষ করে প্রশ্ন উঠেছে, কিভাবে হামলাকারীরা নির্বিঘ্নে পালিয়ে যেতে পারলো? গোয়েন্দা ত্রুটি ও নিরাপত্তা ব্যবস্থার শৈথিল্যকে দায়ী করছেন বিশ্লেষকরা।
সেনা উপস্থিতির পরও নিরাপত্তার অভাব
পাকিস্তানের সঙ্গে মালিকানা নিয়ে দীর্ঘদিনের দ্বন্দ্বে ভারত-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে কয়েক দশক ধরে মোতায়েন রয়েছে বিপুল পরিমাণে সেনা ও আধা-সামরিক বাহিনী। যদিও ভারত সরকার নির্দিষ্ট সংখ্যা প্রকাশ করেনি, তথাপি ধারণা করা হয়, কাশ্মীরে প্রায় সাড়ে তিন লাখ নিরাপত্তা সদস্য রয়েছেন। এটি বিশ্বের অন্যতম সামরিকভাবে মোতায়েন অঞ্চলে পরিণত হয়েছে।
তবে এত সেনা থাকা সত্ত্বেও পেহেলগামের মতো গুরুত্বপূর্ণ পর্যটন এলাকায় কেন পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ছিল না, তা নিয়ে উঠেছে ব্যাপক বিতর্ক। জানা যায়, হামলার সময় এলাকায় প্রায় ২,০০০ পর্যটক অবস্থান করছিলেন, অথচ আশপাশে কোনও সেনা সদস্য তো দূরের কথা, একজন পুলিশ সদস্যও উপস্থিত ছিলেন না।
ধর্ম দেখে হত্যার অভিযোগ
প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে জানা গেছে, হামলাকারীরা পর্যটকদের ধর্ম ও পরিচয় নিশ্চিত করে তবেই হামলা চালায়। এরপর কোনও বাধা ছাড়াই এলাকা ত্যাগ করে। এই ঘটনায় ভারত সরকারের দায়িত্ব পালনের প্রশ্ন তুলেছেন রাজনীতিকরা। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী বলেন, “এতক্ষণ সময় লেগেছে বেছে বেছে বের করেছে! ওখানে অনেক আর্মি ছিল। এমনিতেই তো বর্ডার এরিয়া সেনসিটিভ। আমরা চাই, সত্যিকারের দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হোক।”
অন্যদিকে এআইএমআইএম প্রধান আসাদউদ্দিন ওয়াইসিও বলেন, “পেহেলগাম সবসময় পর্যটকে ভরা থাকে। সেখানে একজন পুলিশও ছিল না? কুইক রেসপন্স টিম আসতে এক ঘণ্টা লাগলো? হামলাকারীরা ধর্ম দেখে হত্যা করেছে। যদি তারা পাকিস্তান থেকে এসে থাকে, তাহলে সীমান্ত পেরিয়ে এল কীভাবে? এর দায় কার?”
ষড়যন্ত্র তত্ত্ব ও অতীতের নজির
এই হামলার পেছনে ষড়যন্ত্র তত্ত্বও আলোচনায় এসেছে। কেউ কেউ সরাসরি ভারত সরকারের দিকেই আঙুল তুলছেন। আবার অনেকেই গোয়েন্দা সংস্থার ব্যর্থতাকে দায়ী করছেন।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি’র এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, অতীতেও মার্কিন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের ভারত সফরের সময় কাশ্মীরে এমন হামলার নজির রয়েছে। ২০০০ সালে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিন্টনের সফরের একদিন আগে অনন্তনাগে হত্যা করা হয় ৩৬ জন শিখকে। ২০০০ সালে মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ভারত সফরের সময় কালুচোকে হামলায় নিহত হন ২৩ জন। এবারও ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভান্সের সফরকালেই ঘটল পেহেলগামের এই হামলা।
এই ধারাবাহিকতায় অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন—কেন মার্কিন প্রতিনিধিদের উপস্থিতির সময়েই বারবার অস্থিতিশীল হয়ে ওঠে কাশ্মীর?
সূত্র: https://www.youtube.com/watch?v=2BD-fAcNsSw
আবীর