
ছবি: সংগৃহীত
ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে নতুন করে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। কাশ্মীরের পেহেলগামে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার পর ভারতের পক্ষ থেকে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে একাধিক কড়া সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। নয়াদিল্লিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিসরি জানিয়েছেন, পাকিস্তানের সঙ্গে আটারি-ওয়াঘা সীমান্ত অবিলম্বে বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। তবে যাদের কাছে বৈধ কাগজপত্র রয়েছে, তারা আগামী ১ মে’র আগেই পাকিস্তানে ফেরার সুযোগ পাবেন।
নিচে ভারতের নেওয়া পাঁচটি সিদ্ধান্ত তুলে ধরা হলো:
১. সিন্ধু পানি বণ্টন চুক্তি স্থগিত:
১৯৬০ সালে স্বাক্ষরিত ঐতিহাসিক সিন্ধু পানি চুক্তি ভারতের পক্ষ থেকে স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে। নয়াদিল্লি জানিয়েছে, পাকিস্তান যতদিন সীমান্তে সন্ত্রাসবাদে সমর্থন দেওয়া বন্ধ না করবে, ততদিন এ চুক্তি কার্যকর থাকবে না।
২. আটারি-ওয়াঘা সীমান্ত বন্ধ:
সীমান্ত অবিলম্বে বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে বৈধ ভিসা ও কাগজপত্রধারী ব্যক্তিরা ১ মে’র আগে পারাপারের সুযোগ পাবেন।
৩. সার্ক ভিসা এক্সেম্পশন স্কিম বাতিল:
পাকিস্তানি নাগরিকদের জন্য সার্ক ভিসা এক্সেম্পশন স্কিম (SVES) স্থগিত করা হয়েছে। পূর্বে জারি করা সব SVES ভিসা বাতিল বলে গণ্য হবে। বর্তমানে এই ভিসায় ভারতে অবস্থানরত পাকিস্তানিদের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে দেশ ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
৪. হাইকমিশনের সামরিক উপদেষ্টাদের বহিষ্কার:
নয়াদিল্লিতে পাকিস্তানি হাইকমিশনের সামরিক, নৌ ও বিমান উপদেষ্টাদের ‘পার্সোনা নন গ্রাটা’ ঘোষণা করা হয়েছে এবং এক সপ্তাহের মধ্যে ভারত ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি ইসলামাবাদে ভারতের হাইকমিশন থেকেও সমমানের উপদেষ্টাদের প্রত্যাহার করা হচ্ছে।
৫. হাইকমিশনের কর্মীসংখ্যা হ্রাস:
উভয় দেশের হাইকমিশনে কর্মরত কর্মীদের সংখ্যা ৫৫ থেকে কমিয়ে ৩০ জনে নামিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, যা ১ মে’র মধ্যে কার্যকর হবে।
পেহেলগামের হামলা এবং আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া:
মঙ্গলবার কাশ্মীরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলায় অন্তত ২৬ জন নিহত হয়েছেন বলে নিরাপত্তা বাহিনীর সূত্র জানিয়েছে। হামলায় অস্ত্রধারীরা পর্যটকদের লক্ষ্য করে নির্বিচারে গুলি চালায়। এই হামলার দায় স্বীকার করেছে পাকিস্তানভিত্তিক নিষিদ্ধ সংগঠন লস্কর-ই-তৈয়েবার সহযোগী সংগঠন দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট (TRF)।
হামলার ঘটনায় পাকিস্তানের পক্ষ থেকেও নিন্দা জানানো হয়েছে। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, “অবৈধভাবে দখলকৃত কাশ্মীরের” পেহেলগামে হামলার ঘটনায় তারা উদ্বিগ্ন এবং নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা প্রকাশ করছে।
এদিকে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে পাঠানো এক বার্তায় গভীর শোক প্রকাশ করেন এবং বাংলাদেশের সন্ত্রাসবিরোধী অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেন।
আসিফ