
ছবি: সংগৃহীত
গাজা উপত্যকায় দীর্ঘদিন ধরে চলমান সংঘর্ষ, রক্তপাত এবং মানবিক বিপর্যয়ের মধ্যেও হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে শান্তি আলোচনার নতুন একটি সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে। ইসরায়েলি গণমাধ্যম ও কূটনৈতিক সূত্র জানিয়েছে, চলমান যুদ্ধের একটি নতুন পর্বে ইসরায়েল হামাসকে যে প্রস্তাব দিয়েছে, তা কার্যত একতরফা আত্মসমর্পণের রূপরেখা।
ইসরায়েলের প্রস্তাব অনুযায়ী, হামাসের কাছে দাবি করা হয়েছে—তারা যেন সব ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দেয় এবং নিজেদের নিরস্ত্র করার প্রক্রিয়া শুরু করে। বিনিময়ে গাজা উপত্যকার নাগরিকদের জন্য ৪৫ দিনের মতো খাদ্য ও পানীয় সরবরাহের অনুমতি দেওয়া হবে।
এই প্রস্তাবের জবাবে হামাস পাল্টা প্রস্তাব দিয়েছে, যেখানে তারা ইসরায়েলের কারাগারে আটক নির্দিষ্ট সংখ্যক ফিলিস্তিনি বন্দির মুক্তির বিনিময়ে সব ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দিতে রাজি হয়েছে। সেইসঙ্গে, তারা দীর্ঘমেয়াদি একটি যুদ্ধবিরতিরও প্রস্তাব করেছে, যার আওতায় হামাস প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে—তারা নতুন করে অস্ত্র তৈরি করবে না, সুড়ঙ্গ খনন করবে না এবং গাজার প্রশাসনিক নিয়ন্ত্রণ অন্যান্য ফিলিস্তিনি দলের হাতে হস্তান্তর করবে।
তবে হামাস তাদের মূল দুটি অবস্থান থেকে পিছু হটেনি। প্রথমত, তারা নিরস্ত্র হবে না। দ্বিতীয়ত, তারা ইসরায়েলি বাহিনীর গাজা থেকে সম্পূর্ণ প্রত্যাহার এবং চলমান যুদ্ধের চূড়ান্ত ও স্থায়ী সমাপ্তি দাবি করছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু হয়তো হামাসের মনোভাব ও কৌশলকে এখনও পুরোপুরি উপলব্ধি করতে পারেননি। কারণ, অনেকের মতে গাজার জনগণের দুঃখ-কষ্ট, টানা অনাহার ও যুদ্ধবিধ্বস্ত পরিস্থিতির মাঝেও হামাস নেতৃত্ব কোনো ধরনের আত্মসমর্পণের লক্ষণ দেখাচ্ছে না।
গাজা পরিস্থিতিকে বিশ্লেষকেরা বর্ণনা করছেন ‘বিশ্বের বৃহত্তম খোলা বন্দিশালা’ হিসেবে, যেখানে মৃত্যুর মিছিল আর মানবিক বিপর্যয়ের মধ্যেও কোনো সমাধানের আলোর রেখা এখনো সুস্পষ্ট নয়।
ফারুক