ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২২ এপ্রিল ২০২৫, ৮ বৈশাখ ১৪৩২

কান্নার কর্মশালা...

জাপান টাইমস

প্রকাশিত: ২৩:৪১, ২১ এপ্রিল ২০২৫

কান্নার কর্মশালা...

জাপানে ‘রুই’ শব্দের অর্থ হচ্ছে কাঁদা

জাপানে ‘রুই’ শব্দের অর্থ হচ্ছে কাঁদা। ‘কাতসু’ মানে এমন কাজ বা ক্রিয়াকলাপ যাতে আত্মোন্নতি হয়। একসঙ্গে যুক্ত করলে এর অর্থ দাঁড়ায়- আত্মোন্নতির স্বার্থে কাঁদা। জাপানে এটি শুধু একটি ভাবনা নয়, ‘রুইকাতসু’ একটি আন্দোলন।
কেঁদে ভালো থাকার যে পদ্ধতি, তার একটি নামও দিয়েছে জাপান- ‘রুইকাতসু’। যার মূল মন্ত্রÑ কাঁদো, কাঁদার অভ্যাস কর। তবে, দুর্বলতা থেকে নয়। কষ্টকর আবেগ থেকে মুক্তির জন্য, নিজেকে আবার নতুন করে উঠিয়ে দাঁড় করানোর জন্য এবং আবেগ আর মনের ছেঁড়া তার আবার জোড়া লাগানোর জন্য।
জাপানে এটি শুধু একটি ভাবনা নয়, প্রতিমুহূর্তে ছুটে চলা দেশটায় যেখানে একটা সময় মানুষ তাদের আবেগকে প্রকাশ করতে পারছিলেন না, তাদের কাছে প্রাথমিকভাবে ‘রুইকাতসু’ ছিল একটা আন্দোলন। ২০১৩ সালে প্রথম রুইকাতসুর ভাবনা হয়, যা ক্রমে আবেগের বহির্প্রকাশের একখানি কার্যকরী উপায় হিসাবে গণ্য হতে শুরু করে।
জাপানে রুইকাতসুর ভাবনা যারা প্রথম এনেছিলেন, তাদের অন্যতম হিডেফুমি ইওশিডা। হাইস্কুলের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক হিডেফুমি মনে করেন, কান্না মানুষের দুর্বলতা নয়; বরং শক্তি। আবেগ প্রকাশের অত্যন্ত কার্যকরী একটি পদ্ধতি। যদি কখনো অনেকক্ষণ ধরে প্রাণভরে কেঁদে কারও মন হালকা হয়ে থাকে, তবে তিনি এর মর্ম উপলব্ধি করবেন।
হিডেফুমি ইওশিডা ওই ভাবনা থেকে ২০১৩ সাল থেকে কান্নার কর্মশালা শুরু করেন। যারা আবেগের বহির্প্রকাশ করতে পারছেন না, যাদের বুকের ভেতর কষ্ট দলা পাকিয়ে আছে, কাজ করতে দিচ্ছে না, তাদের সাহায্য করার জন্য। সেই কর্মশালায় কাঁদতে শেখানো হতো। 
জাপানের তোহো বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণাও একই কথা বলছে। সেখানে বলা হয়েছে, নিয়মিত কাঁদলে মানসিক উদ্বেগ কমে, হৃৎস্পন্দন স্বাভাবিক হয়Ñ এমনকি কাঁদলে ঘুমও ভালো হয়। কিন্তু কান্নার জন্য কর্মশালা কেন, বাড়িতে একা কাঁদলেও কি একই লাভ হবে না? হিডেফুমি বলেন, দুটোর মধ্যে পার্থক্য আছে। বাড়িতে একা কাঁদলে একাকিত্ব বোধ হবে। পাশে অনেকে থাকলে কান্নাটা একার হলেও একাকী বোধ হবে না। 
সূত্র: জাপান টাইমস

×