
ছবিঃ সংগৃহীত
৮৮ বছর বয়সে প্রয়াত হলেন রোমান ক্যাথলিক চার্চের পোপ ফ্রান্সিস। আজ ২১ এপ্রিল, পৃথিবীর খ্রিষ্টান সমাজ হারালো এক শক্তিমান ধর্মীয় নেতাকে, যিনি ২০১৩ সালের মার্চ মাসে পোপ হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিলেন।
পোপ ফ্রান্সিস, যার জন্মনাম ছিল হোর্হে মারিও বেরগোগলিও, কৈশোরে প্রেমে পড়েছিলেন এক সমবয়সী মেয়ের। নাম ছিল এমিলিয়া দামন্তে। আর্জেন্টিনার বুয়েনস আইরেস শহরের ফ্লোরেস এলাকায় তাদের বসবাস ছিল। সেই সময় মাত্র বারো বছর বয়সে বেরগোগলিও একদিন সাহস করে এমিলিয়াকে একটি চিঠি দেন। চিঠিতে স্পষ্ট করে লেখেন, যদি এমিলিয়া তাকে বিয়ে না করেন, তবে তিনি জীবন উৎসর্গ করবেন ঈশ্বরের সেবায়।
প্রেমে প্রত্যাখ্যানের যন্ত্রণা হৃদয়ে নিয়ে বেরগোগলিও বেছে নেন এক কঠিন, নিঃসঙ্গ পথ। হয়ে ওঠেন ধর্মযাজক। আর অবশেষে দীর্ঘ সাধনার ফসল হিসেবে, তিনি নির্বাচিত হন পোপ হিসেবে—ইউরোপের বাইরের প্রথম পোপ, লাতিন আমেরিকার এবং আর্জেন্টিনার প্রথম প্রতিনিধি হিসেবে।
পোপের ছোট বোন মারিয়া এলেনা বেরগোগলিও জানান, ভাইয়ের কখনোই পোপ হওয়ার ইচ্ছা ছিল না। বরং তার স্বভাব ছিল নির্লিপ্ত ও শান্ত। তবে তিনি যখন পোপ নির্বাচিত হন, তখন পরিবার গর্বিত হয়, যদিও একই সঙ্গে তাকে হারানোর বেদনাও ছিল গভীর।
২০১৩ সালে, দুজনের বয়স যখন ৭৬ বছর, সেই সময় এমিলিয়া প্রথমবারের মতো প্রকাশ করেন তাদের কিশোর বয়সের গোপন প্রেমের কথা। তিনি বলেন, ‘ওর স্বপ্ন ছিল আমাদের জন্য একটি লাল ছাদের ঘর বানানো। কিন্তু আমার বাবা-মা সেই প্রেমের ঘোর বিরোধিতা করেছিলেন। চিঠি দেখে বাবা প্রচণ্ড রেগে গিয়েছিলেন, আমায় শাস্তি দিয়েছিলেন। এরপর থেকেই আমাদের দেখা হওয়া বন্ধ হয়ে যায়। একসময় আমিও চাইতাম, সে যেন আমার জীবন থেকে একেবারেই মুছে যায়। আর সেটাই ঘটেছিল।’
এভাবেই এক অপ্রাপ্ত প্রেমিক হৃদয়ের ব্যথা থেকে জন্ম নিয়েছিল এক ধর্মনেতা। পোপ ফ্রান্সিসের জীবন একদিকে ভালোবাসার অপূর্ণতা, অন্যদিকে তা থেকেই গড়ে ওঠা এক মহৎ যাত্রার অনন্য দৃষ্টান্ত।
মারিয়া