
ছবি: সংগৃহীত
ইরান-ইরাক যুদ্ধকালীন প্রতিরোধ যুগ থেকেই ইরানের প্রতিরক্ষা শিল্পে অগ্রাধিকার পেয়ে আসছে ট্যাংক বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র প্রযুক্তি। আট বছরব্যাপী ইরান-ইরাক যুদ্ধের সময় পর্যাপ্ত গাইডেড ক্ষেপণাস্ত্রের ঘাটতির অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে যুদ্ধ-পরবর্তী সময়েই ইরান এই খাতে জোরালো মনোযোগ দেয়। এরই ধারাবাহিকতায় ‘তুফান’ প্রকল্পের উন্নয়ন ঘটিয়ে ইরান টিওডব্লিউ প্রযুক্তির ট্যাংক বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি করে। পরে আরও আধুনিক প্রযুক্তি সংযোজনের মাধ্যমে ক্ষেপণাস্ত্র উৎপাদনে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করে দেশটি।
প্রথম প্রজন্মের ট্যাংক বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্রগুলো পরিচালনার জন্য মানব-নির্ভরতা ছিল বেশি, ফলে সেগুলো সহজেই শত্রুপক্ষের ড্রোন ও রাডারে শনাক্ত হয়ে পরিচালকদের জন্য হুমকি হয়ে উঠত। এই সীমাবদ্ধতা দূর করতে ইরান শুরু করে 'ফায়ার অ্যান্ড ফরগেট' প্রযুক্তিভিত্তিক ক্ষেপণাস্ত্রের নির্মাণ। এরই ফসল হিসেবে ২০২০ সালে ইরান আলমাস সিরিজের ক্ষেপণাস্ত্রের ঘোষণা দেয়। প্রথমবার এটি ড্রোন 'আবাবিল-থ্রি' থেকে ছোড়া হয়।
আলমাস সিরিজের বৈশিষ্ট্য ও ধরন:
আলমাস ওয়ান, ২০০ মিটার থেকে ৪ কিলোমিটার পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র। ডুয়েল পয়েন্ট গাইডেড সিস্টেমের মাধ্যমে এটি দুর্গ জাতীয় স্থাপনাকে লক্ষ্যবস্তু করে। আলমাস টু, সর্বোচ্চ ৭ কিলোমিটার পাল্লার এই ক্ষেপণাস্ত্র শত্রুর ফ্রন্ট লাইনে আঘাত হানে। কোবরা হেলিকপ্টার থেকেও এটি নিক্ষেপ করা সম্ভব। আলমাস থ্রি, সর্বাধুনিক প্রযুক্তির গাইডেড ক্ষেপণাস্ত্র, যার পাল্লা ১০ কিলোমিটার। এটি ছোড়ার সঙ্গে সঙ্গেই নির্ধারিত লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম।বদর, আলমাস সিরিজের সহায়ক ক্ষেপণাস্ত্র হিসেবে ব্যবহৃত হয়। ২ কিলোমিটার পাল্লার এই ক্ষেপণাস্ত্র ৬০০ মিলিমিটার ইস্পাত বর্ম ভেদ করতে সক্ষম এবং এটি 'ফায়ার অ্যান্ড ফরগেট' শ্রেণীর। আলমাস ফোর ও এনএলওএস, এই দুই প্রযুক্তির সমন্বয়ে তৈরি নতুন প্রজন্মের ক্ষেপণাস্ত্র অন্তত ২০ কিলোমিটার দূরত্ব অতিক্রম করতে পারে এবং শত্রুর স্বল্প পাল্লার আকাশ প্রতিরক্ষা ভেদ করে লক্ষ্যবস্তুতে পৌঁছাতে পারে।
যদিও আলমাস ফোর এবং এনএলওএস সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য ইরান এখনো প্রকাশ করেনি, তবে ভবিষ্যতে তা প্রকাশের ইঙ্গিত দিয়েছে দেশটির প্রতিরক্ষা কর্তৃপক্ষ।
সূত্র: https://www.youtube.com/watch?v=GrjVORQibgI
আবীর