
ছবিঃ সংগৃহীত
"প্রত্যেক ইসরায়েলি হয় নিজে সন্ত্রাসী, না হয় সন্ত্রাসীর সন্তান"—এমনটাই মনে করতেন ব্রিটিশ রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথ। এক অনুষ্ঠানে এ তথ্য জানিয়েছেন ইসরায়েলের সাবেক প্রেসিডেন্ট রেওভেন রিভলিন। তিনি আরও জানান, রানী এলিজাবেথ কখনোই বাকিংহাম প্যালেসে ইসরায়েলিদের প্রবেশ করতে দিতেন না।
রিভলিন বলেন, ইসরায়েলের সঙ্গে রানীর সম্পর্ক একটু জটিল ছিল। রিভলিন ২০১৪ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত ইসরায়েলের দশম প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। সাবেক প্রেসিডেন্টকে তাঁর এই বক্তব্য সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি তথ্যগুলো আবারও নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, “এই কথাগুলো আমারই, এবং আমি ঠিকই বলেছি।”
রানীর সঙ্গে ইসরায়েলের সম্পর্ক অনেক সময় জটিল ছিল বলে মনে করা হয়। ৭০ বছরের শাসনকালে তিনি ১২০টিরও বেশি দেশ সফর করলেও কখনো ইসরায়েল যাননি।
২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে রানীর মৃত্যুর পর কনজারভেটিভ ফ্রেন্ডস অফ ইসরায়েল গ্রুপের অনারারি প্রেসিডেন্ট স্টুয়ার্ট পোলাক দাবি করেন, ব্রিটিশ পররাষ্ট্র দপ্তর রাজপরিবারকে ইসরায়েল সফরে যেতে বাধা দিত। তবে অন্য ব্যাখ্যাও রয়েছে।
২০১২ সালে ইসরায়েলি মূলধারার সংবাদপত্র হারেটজ-এর সাবেক সম্পাদক ডেভিড ল্যান্ডাও লিখেছিলেন—এই দুর্দান্ত, নিষ্ঠাবান রানী কারো পুতুল নন। তাঁর যদি ইচ্ছা থাকত, তাহলে নিজে বা রাজপরিবারের কাউকে ইসরায়েল সফরে পাঠাতে পারতেন।
অনেকেই মনে করেন, ব্রিটিশ ম্যান্ডেট শাসনের সময় ১৯৪০-এর দশকে ইহুদি চরমপন্থী গোষ্ঠীগুলোর সহিংসতার কারণে রানীর মনে ইসরায়েল সম্পর্কে নেতিবাচক মনোভাব গড়ে উঠেছিল।
১৯৮৪ সালে জর্ডান সফরের সময় পশ্চিম তীরের ওপর দিয়ে ইসরায়েলি যুদ্ধবিমান উড়ে যাওয়ার সময় তিনি নাকি বলেছিলেন, “কি ভয়ানক!” জবাবে জর্ডানের রানী নূর বলেছিলেন, “হ্যাঁ, এটা সত্যিই ভয়ানক।” পরে রানী একটি মানচিত্র দেখিয়েছিলেন, যেখানে পশ্চিম তীরে অবৈধ ইসরায়েলি বসতিগুলোর অবস্থান দেখানো ছিল। তখন তিনি মন্তব্য করেছিলেন, “কি বিষণ্ন একটা মানচিত্র!”
রিভলিনের এই মন্তব্য ঘিরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে রানীর একটি মিম ছড়িয়ে পড়ে, যাতে দেখা যায় রানী ফিলিস্তিনের ঐতিহ্যবাহী স্কার্ফ ‘কিফায়া’ পরে আছেন।
২০১৮ সালের আগে পর্যন্ত কোনো ব্রিটিশ রাজপরিবারের সদস্য ইসরাইল সফর করেননি। সেবার প্রিন্স উইলিয়াম—রানীর নাতি, ইসরায়েলের স্বাধীনতার ৭০ বছর উপলক্ষে সেখানে যান।
রিভলিন বলেন, রানীর ছেলে রাজা চার্লস বরাবরই ইসরায়েলের প্রতি অনেক বেশি বন্ধুসুলভ ছিলেন। চার্লস ২০২০ সালে প্রিন্স অফ ওয়েলস হিসেবে ইসরায়েল সফর করেন। তখন তিনি অধিকৃত পশ্চিম তীরও সফর করেন এবং বলেছিলেন, “আমার সবচেয়ে বড় ইচ্ছা হলো ভবিষ্যতে সব ফিলিস্তিনির জন্য স্বাধীনতা, ন্যায়বিচার ও সমতা আসুক।”
ইমরান