ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ৬ বৈশাখ ১৪৩২

যে চিঠি এক শতাব্দী ধরে ফিলিস্তিনিদের রক্তঝরার কারণ হয়ে আছে !

প্রকাশিত: ১৯:১৬, ১৮ এপ্রিল ২০২৫

যে চিঠি এক শতাব্দী ধরে ফিলিস্তিনিদের রক্তঝরার কারণ হয়ে আছে !

ছবি: সংগৃহীত

ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের মধ্যে সংঘাত বিশ্ব রাজনীতির অন্যতম পুরনো ও সহিংস দ্বন্দ্ব। এর শুরু ১৯১৭ সালে, যখন ব্রিটেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী লর্ড আর্থার বালফোর একটি চিঠিতে ফিলিস্তিনে ইহুদিদের জন্য "জাতীয় আবাস" প্রতিষ্ঠার প্রতিশ্রুতি দেন। ইতিহাসে এটি "বালফোর ঘোষণাপত্র" নামে পরিচিত। এই ঘোষণাই ফিলিস্তিনি জনগণের জন্য এক গভীর সংকটের সূচনা করে এবং এর প্রতিক্রিয়া এখনো মধ্যপ্রাচ্যে প্রতিধ্বনিত হচ্ছে।

প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর অটোমান সাম্রাজ্যের পতনে ফিলিস্তিন ব্রিটিশ শাসনের অধীনে আসে। এরপর ব্রিটেন ইহুদিদের জন্য ফিলিস্তিনে বসতি স্থাপনের পথ সুগম করে। এতে ফিলিস্তিনি আরবদের মধ্যে ক্ষোভ দানা বাঁধে, কারণ তারা এটি নিজেদের ভূমি ও অধিকার হরণের প্রচেষ্টা হিসেবে দেখত।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় এবং পরবর্তীকালে হলোকাস্টের ভয়াবহতা ইহুদিদের একটি স্বাধীন রাষ্ট্রের দাবি আরও তীব্র করে তোলে। এরই প্রেক্ষিতে, ১৯৪৭ সালে জাতিসংঘ ফিলিস্তিনকে দুটি রাষ্ট্রে ভাগ করার প্রস্তাব দেয়। তবে আরব দেশগুলো সেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে।

১৯৪৮ সালে ব্রিটিশ শাসনের অবসান হলে ইহুদি নেতারা ইসরায়েল রাষ্ট্র গঠনের ঘোষণা দেন। এর পরপরই আরব-ইসরায়েল যুদ্ধ শুরু হয়, যেখানে ইসরায়েল জয়ী হয় এবং ফিলিস্তিনের অনেক এলাকা তাদের দখলে চলে যায়। এই ঘটনায় প্রায় সাড়ে সাত লাখ ফিলিস্তিনি তাদের ঘরবাড়ি ছাড়তে বাধ্য হন, যা ‘নাকবা’ বা ‘বিপর্যয়’ নামে পরিচিত।

১৯৬৭ সালের ছয় দিনের যুদ্ধে ইসরায়েল গাজা, পশ্চিম তীর, পূর্ব জেরুজালেম ও গোলান মালভূমি দখল করে নেয়। এসব দখল আজও বজায় রয়েছে। ফিলিস্তিনিদের ওপর দীর্ঘদিন ধরে শোষণ ও দমনমূলক পরিস্থিতি চলতে থাকে।

বিশ্বের অন্যতম ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসন ও হামাসের সঙ্গে সংঘাত দীর্ঘদিন ধরে চলছে। এখানকার মানুষ দারিদ্র্য, বেকারত্ব ও মানবিক সংকটে জর্জরিত। অধিকাংশ মানুষ আন্তর্জাতিক সাহায্যের ওপর নির্ভরশীল।

ফিলিস্তিনিদের স্বাধীনতা সংগ্রাম এখনও অব্যাহত। এক শতাব্দী পেরিয়ে গেলেও এই সংঘাতের কোনো স্থায়ী সমাধান আজও দৃষ্টিগোচর নয়। 

আসিফ

×