
ছবি: সংগৃহীত
যুক্তরাষ্ট্রে বেআইনিভাবে শিক্ষার্থী ভিসা বাতিল করার অভিযোগে ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন ১৩০ জনের বেশি আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী। তারা অভিযোগ করেছেন, কোনো সুনির্দিষ্ট কারণ না দেখিয়েই তাদের ভিসা বাতিল করা হয়েছে, ফলে যুক্তরাষ্ট্রে তাদের অবস্থান চরম অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছে।
প্রথমে জর্জিয়া অঙ্গরাজ্যে ১১ জন শিক্ষার্থী এই মামলা দায়ের করেন। পরে ধাপে ধাপে আরও ১১৬ জন শিক্ষার্থী এতে যুক্ত হন। মামলায় বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (ICE) সংস্থা হঠাৎ করেই স্টুডেন্ট অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ ভিজিটর ইনফরমেশন সিস্টেম (SEVIS) থেকে শিক্ষার্থীদের স্ট্যাটাস বাতিল করে দেয়। এতে শিক্ষার্থীরা গ্রেপ্তার, আটক কিংবা নির্বাসনের ঝুঁকিতে পড়ে যান।
শিক্ষার্থীদের মধ্যে অনেকেই জানিয়েছেন, তারা হঠাৎ করেই জানতে পারেন যে, তাদের স্টুডেন্ট ভিসা বাতিল করা হয়েছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এই সিদ্ধান্তের পেছনে কোনো নির্দিষ্ট কারণ জানানো হয়নি।
চীনের একজন শিক্ষার্থী, যিনি জর্জিয়া ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজিতে অধ্যয়ন করছেন, জানান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে তাকে জানানো হয় তার ভিসা বাতিল করা হয়েছে। তিনি মনে করছেন, অতীতে ঘটে যাওয়া একটি ট্রাফিক আইন লঙ্ঘনের ঘটনা—যা ইতিমধ্যেই নিষ্পত্তি হয়েছে—এটির কারণ হতে পারে। তার দাবি, এই ঘটনা ছাড়া তার নামে আর কোনো অপরাধের রেকর্ড নেই।
একই ধরনের অভিযোগ করেছেন নিউইয়র্ক ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির এক ভারতীয় শিক্ষার্থী। তিনি জানান, একসময় তার বিরুদ্ধে দোকানে চুরির একটি অভিযোগ ছিল, তবে মামলাটি পরে বাতিল হয়ে যায়। তা সত্ত্বেও তার ভিসা বাতিল করা হয়েছে।
শিক্ষার্থীদের আইনজীবীরা বলছেন, এসব ভিসা বাতিলের ঘটনাগুলো ট্রাম্প প্রশাসনের সময়কার একটি সুপরিকল্পিত ভীতি প্রদর্শনমূলক কৌশলের অংশ। শিক্ষার্থীরা আরও অভিযোগ করেছেন, বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে অর্থায়ন বন্ধ করার হুমকি দিয়ে প্রশাসন অনেক সময় এই ভিসা বাতিলের প্রক্রিয়ায় প্রভাব ফেলেছে।
আইনি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা বাতিলের বিষয়টি যুক্তরাষ্ট্রের প্রশাসনিক নিয়ম-কানুন অনুযায়ী স্বচ্ছভাবে পরিচালিত হওয়া উচিত। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে এমন আচরণ আন্তর্জাতিক শিক্ষানীতির পরিপন্থী এবং বৈষম্যমূলক বলেও মন্তব্য করেছেন তারা।
মামলাটি এখন বিচারাধীন। আইনি লড়াইয়ের ফলাফল কী হয়, তা আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী এবং অভিবাসন নীতির ভবিষ্যতের ওপর গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
ফারুক