
ছবি : সংগৃহীত
চীনের প্রেসিডেন্ট সি জিনপিং এবং রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন গাজা ও ফিলিস্তিন ইস্যুতে তাদের দৃঢ় অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেছেন। মালয়েশিয়া সফরে সি জিনপিং স্পষ্ট করে বলেন, "গাজা ফিলিস্তিনের অবিচ্ছেদ্য অংশ, এবং এখানে শুধুমাত্র ফিলিস্তিনিদেরই অধিকার রয়েছে।" তিনি ইসরাইলের আগ্রাসন বন্ধে দ্বিরাষ্ট্র সমাধানের পক্ষে জোরালো সমর্থন জানান এবং জাতিসংঘে ফিলিস্তিনের পূর্ণ সদস্য পদদানের আহ্বান জানান।
এদিকে, রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন ইরান-সমর্থিত ফিলিস্তিনি ইসলামী প্রতিরোধ গ্রুপ হামাসের প্রশংসা করে বিতর্ক সৃষ্টি করেছেন। ইসরাইলের জিম্মি হিসেবে আটক একটি পরিবারকে মুক্তিদানের জন্য তিনি হামাসকে ধন্যবাদ জানান এবং ফিলিস্তিনি জনগণের সাথে রাশিয়ার দীর্ঘমেয়াদী সম্পর্কের কথা তুলে ধরেন। পুতিনের এই মন্তব্য ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর প্রশাসনে তীব্র ক্ষোভ সৃষ্টি করেছে।
যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের ব্যাপক চাপ সত্ত্বেও চীন ও রাশিয়া তাদের অবস্থান থেকে সরে আসেনি। বরং তারা ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলনকে সমর্থন অব্যাহত রেখেছে। গত ফেব্রুয়ারিতে মস্কোতে হামাস নেতাদের সাথে রাশিয়ার ডেপুটি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বৈঠক এই সম্পর্কেরই ইঙ্গিত দেয়। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, মধ্যপ্রাচ্যে ইরানের নেতৃত্বাধীন ইসলামী প্রতিরোধ গ্রুপগুলোর পেছনে চীন ও রাশিয়ার কূটনৈতিক ও সামরিক সমর্থন রয়েছে, যা আঞ্চলিক শক্তিসাম্যকে নতুন মাত্রা দিচ্ছে।
ইসরায়েলী প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু বারবার দাবি করেছেন যে হামাস ও অন্যান্য প্রতিরোধ গ্রুপগুলোর শক্তি বৃদ্ধির পেছনে ইরান, চীন ও রাশিয়ার সমর্থন কাজ করছে। তবে চীন ও রাশিয়া তাদের সমর্থনকে ফিলিস্তিনি জনগণের ন্যায্য দাবির প্রতি একাত্মতা হিসেবে ব্যাখ্যা করে আসছে।
চীন ও রাশিয়ার এই অবস্থান গাজার সংকটে বৈশ্বিক বিভাজনকে আরও স্পষ্ট করে তুলেছে। একদিকে পশ্চিমা দেশগুলো ইসরাইলের সমর্থনে এগিয়ে আসছে, অন্যদিকে চীন-রাশিয়া নেতৃত্বাধীন ব্লক ফিলিস্তিনিদের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। এই বিভাজন জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ফোরামে স্পষ্টভাবে দেখা যাচ্ছে, যেখানে গাজার যুদ্ধবিরতি ও মানবিক সহায়তা নিয়ে আলোচনা বারবার অচলাবস্থার মুখোমুখি হচ্ছে।
বিশ্লেষকরা সতর্ক করে দিয়েছেন যে, এই সংঘাত এখন শুধুমাত্র ইসরায়েল-ফিলিস্তিন ইস্যু নয়, বরং এটি বিশ্বের পরাশক্তিগুলোর মধ্যে একটি প্রক্সি যুদ্ধে রূপ নিতে পারে, যা পুরো মধ্যপ্রাচ্য অঞ্চলের স্থিতিশীলতার জন্য হুমকিস্বরূপ।
আঁখি