
ছবি: প্রতীকী
গাজা ইস্যুতে কিছুটা হলেও বেকায়দায় পড়েছে ইসরায়েল। মিশর এবং কাতারের মধ্যস্থতায় ইসরায়েল শর্তসাপেক্ষে যে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দিয়েছে, তা অবশ্য প্রত্যাখ্যান করেছে হামাস। কারণ যুদ্ধ বন্ধে কোনো শর্ত মানবে না সংগঠনটি।
তাছাড়া হামাসের কাছে এমন এক তুরুপের তাস রয়েছে, নেতানিয়াহুকে নত হতেই হবে বলে মনে করছেন কূটনীতিকরা। ইসরায়েলের ৭০ ভাগ জনগণ গাজায় হামলার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। অন্যদিকে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী থেকে শুরু করে সশস্ত্র বাহিনীর একটি অংশ এরই মাঝে ফিলিস্তিনি হামলা চালাবে না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তারপরও নেতানিয়াহু কারো কথাই শুনছে না।
এমন অবস্থায় ইসরায়েল বিদ্রোহ দেখা দিতে পারে। তবে হামাসের হাতে এখন বড় এক মাস্টারস্ট্রোক চলে এসেছে, যা নিশ্চিত বেকায়দায় ফেলবে ইসরায়েলকে, নত হতেই হবে নেতানিয়াহুকে। হামাস তার তুরুপের তাস হিসেবে জিম্মি করেছে ৫৯ জন ইসরায়েলিকে। আর তাদের ছাড়িয়ে আনতেই নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধেই বিদ্রোহ দানা বেঁধেছে দেশটিতে।
হামাসের এই মাস্টারস্ট্রোকের কারণেই কাতার আর মিশরের মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব পাঠিয়েছে ইসরায়েল। কিন্তু সেই প্রস্তাব মানেনি হামাস, কারণ নেতানিয়াহুকে জব্দ করার মত অস্ত্র এখন হামাসেরই হাতে।
এদিকে ৫৯ জন জিমিকে ফিরিয়ে আনতে কিংবা জীবিত ফেরত পেতে ইসরায়েলের সশস্ত্র বাহিনীর বড় একটি অংশ যুদ্ধ বন্ধের জন্য দেশটির সর্বোচ্চ নেতাকে চাপ দিচ্ছে। সাধারণ জনগণও কোনোভাবে নিজেদের এই বর্বরতাকে মেনে নিতে পারছে না।
অন্যদিকে আরব বিশ্বও দিন দিন ইসরায়েলকে শত্রু মনে করে ফিলিস্তিনের পক্ষে অবস্থান নিচ্ছে। গত সপ্তাহে গোটা বিশ্ব ফিলিস্তিনের পক্ষে ইসরায়েলকে দুয়োধ্বনি দিয়েছে যা নেতানিয়াহুকে পর্যন্ত কাঁপিয়ে দিয়েছে। গত জানুয়ারিতে রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েলের সঙ্গে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে নতুন করে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস আরও ১০ থেকে ১৫ হাজার যোদ্ধা নিয়োগ দিতে সক্ষম হয়েছে।
মার্কিন গোয়েন্দা তথ্য সম্পর্কে অবহিত মার্কিন কংগ্রেসের দুজন সদস্য এ তথ্য জানিয়েছে। তাদের তথ্য অনুযায়ী, ইরান সমর্থিত হামাসের এসব যোদ্ধা ইসরায়েলের জন্য স্থায়ী হুমকি হিসেবে রয়ে যাচ্ছেন।
ইসরায়েলকে ক্রমাগত যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন আরও বেশি ক্ষেপিয়ে তুলছে ইরানকে। সম্প্রতি যোগ হয়েছে চীন। বলা যায়, যুক্তরাষ্ট্রের কারণেই ইসরায়েলের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে ফিলিস্তিন আর হামাসকে গোপনে সহযোগিতার প্রস্তুতি নিচ্ছে দেশ দুটি। যা হামাসের মাস্টারব্লাস্টার হিসেবে আত্মবিশ্বাস তৈরি করছে।
একদিকে চীন, অন্যদিকে ইরান, রয়েছে আরব বিশ্বের সহানুভূতিও। হামাসের সৈন্য সংখ্যা বেড়েই যাচ্ছে, কিন্তু কীভাবে? তাহলে কি চীন, ইরান আর আরব বিশ্ব থেকে গোপনে ঢুকছে সুপ্রশিক্ষিতরা? এ প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার মতো সময় এখনো আসেনি। তবে যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা প্রতিবেদন অনুযায়ী, হামাসের সৈন্য সংখ্যা মাত্র ৪০ হাজার।
অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের ওই প্রতিবেদনেই বলা হয়েছে, এই পর্যন্ত প্রায় ২০ হাজার হামাস যোদ্ধা নিহত হয়েছেন ইসরায়েলের আক্রমণে। গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের একই সংস্থা দাবি করেছে, হামাসের বর্তমান সৈন্য সংখ্যা ৪০ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। তার মানে কি একজন মারা গেলে দুইজন জন্মাচ্ছে?
তারপরও এতদিনে ইসরায়েল কিছুটা নমনীয় হয়ে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব যখন দিয়েছে, তখন সেটা হামাসের মেনে নেওয়া উচিত বলে মনে করছে অনেক দেশ। কেননা নিরীহদের প্রাণহানি কোনো দেশই মেনে নিতে পারছে না। এখন দেখা যাক, হামাস তাদের যুদ্ধবিরতি মেনে নেয়, নাকি পাল্টা চালে নেতানিয়াহুকে নত করতে বাধ্য করে?
সূত্র: https://www.youtube.com/watch?v=y_3DshsXcZA
রাকিব