ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ৬ বৈশাখ ১৪৩২

হিন্দি চাপিয়ে দেওয়ায় বিদ্রোহ! স্বায়ত্তশাসনের দাবিতে সরব তামিলনাড়ু

প্রকাশিত: ০৭:৪১, ১৭ এপ্রিল ২০২৫

হিন্দি চাপিয়ে দেওয়ায় বিদ্রোহ! স্বায়ত্তশাসনের দাবিতে সরব তামিলনাড়ু

ছবি : সংগৃহীত

ভাষা, শিক্ষা ও রাজনৈতিক স্বাধীনতার লড়াই, তামিলনাড়ু সরকারের এই সিদ্ধান্তের পেছনে দীর্ঘদিনের জমে থাকা ক্ষোভ কাজ করছে। বিজেপি নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় সরকারের হিন্দি চাপিয়ে দেওয়ার নীতি, শিক্ষা ও চিকিৎসা ক্ষেত্রে হস্তক্ষেপ এবং লোকসভায় দক্ষিণের রাজ্যগুলোর প্রতিনিধিত্ব কমিয়ে আনার উদ্যোগ—এসবই তামিলনাড়ুকে স্বায়ত্তশাসনের দাবিতে সোচ্চার করে তুলেছে। মুখ্যমন্ত্রী এমকে স্টালিনের নেতৃত্বে গঠিত এই কমিটি রাজ্যের স্বার্থ রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশ তুলে ধরবে বলে আশা করা হচ্ছে।  

 

 


কেন্দ্রীয় শিক্ষানীতিতে তিন ভাষার ফর্মুলা বাতিলের দাবি জানিয়ে আসছে তামিলনাড়ু। রাজ্যের দাবি, ইংরেজি ও তামিল ভাষাই যথেষ্ট, হিন্দি চাপিয়ে দেওয়া যাবে না। অন্যদিকে, মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষা নিট (NEET) বাতিলের দাবিতেও কেন্দ্রের সঙ্গে তীব্র বিরোধে জড়িয়েছে ডিএমকে সরকার। তাদের অভিযোগ, এই পরীক্ষায় শুধু ধনী পরিবারের ছাত্রছাত্রীরাই সুবিধা পাচ্ছে, যা রাজ্যের সাধারণ শিক্ষার্থীদের জন্য বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।  

 


জনসংখ্যার ভিত্তিতে লোকসভা আসন পুনর্বিন্যাসের প্রস্তাব নিয়েও তামিলনাড়ু সরব। রাজ্যের আশঙ্কা, এই পুনর্বিন্যাসের ফলে দক্ষিণের রাজ্যগুলোর প্রতিনিধিত্ব কমে যাবে এবং উত্তর ভারতের রাজ্যগুলোই বেশি সুবিধা পাবে। এ নিয়ে তামিলনাড়ু সরকারের পক্ষ থেকে জোরালো প্রতিবাদ জানানো হচ্ছে।  
২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে এই ইস্যুগুলো তামিলনাড়ুর রাজনীতিতে বড় প্রভাব ফেলতে পারে। ডিএমকে সরকার যদি স্বায়ত্তশাসনের দাবিকে জোরালোভাবে তুলে ধরে, তবে তা জনসমর্থন বাড়াতে সাহায্য করবে। অন্যদিকে, বিজেপিও এই ইস্যুকে কাজে লাগিয়ে তামিলনাড়ুতে নিজেদের অবস্থান শক্ত করার চেষ্টা করবে।  


কমিটি ২০২৬ সালের মধ্যে অন্তর্বর্তী রিপোর্ট এবং ২০২৮ সালের মধ্যে চূড়ান্ত রিপোর্ট জমা দেবে। এই রিপোর্টে তামিলনাড়ুর স্বায়ত্তশাসনের জন্য কী কী সুপারিশ করা হয়, তা ভারতের রাজনৈতিক ভবিষ্যতের জন্য গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশক হতে পারে। একই সঙ্গে, এই দাবি শুধু তামিলনাড়ু নয়, ভারতের অন্যান্য রাজ্যের জন্যও প্রভাব ফেলতে পারে।  

 


কেন্দ্র ও তামিলনাড়ুর এই দ্বন্দ্ব শুধু একটি রাজ্যের গণ্ডিতে সীমাবদ্ধ নেই—এটি ভারতের যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো ও রাজ্যগুলোর স্বায়ত্তশাসনের অধিকারের প্রশ্নে একটি বড় পরীক্ষা হয়ে দাঁড়িয়েছে। আগামী দিনগুলোতে এই ইস্যুটি জাতীয় রাজনীতিতে আরও উত্তপ্ত হতে পারে।

আঁখি

×