
ছবি : সংগৃহীত
সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন হোয়াইট হাউস ছাড়ার পর প্রথমবারের মতো প্রকাশ্যে ট্রাম্প প্রশাসনের সমালোচনা করে বড় ধরনের বক্তব্য দিয়েছেন। তিনি দাবি করেন, ট্রাম্প প্রশাসন ক্ষমতা নেওয়ার পর মাত্র কয়েক মাসের মধ্যেই যুক্তরাষ্ট্রের জন্য ধ্বংসাত্মক পরিস্থিতি তৈরি করেছে। বাইডেন বিশেষভাবে সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচি (সোশ্যাল সিকিউরিটি) এবং ফেডারেল কর্মী ছাঁটাইয়ের বিষয়টি তুলে ধরে বলেন, এসব সিদ্ধান্তের ফলে সাধারণ মানুষ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তার মতে, বর্তমান প্রশাসন "প্রথমে গুলি ছোড়ে, পরে লক্ষ্য নির্ধারণ করে", যার ফলে অযথা জনগণ ভোগান্তির শিকার হচ্ছে। তিনি আরও অভিযোগ করেন, ট্রাম্প প্রশাসন ১০০ দিনেরও কম সময়ে হাজারো মানুষের চাকরি কেড়ে নিয়ে "অবর্ণনীয় ক্ষতি" করেছে।
বাইডেনের এই বক্তব্যের পর ট্রাম্প প্রশাসন তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে। সামাজিক সুরক্ষা প্রশাসন (সোশ্যাল সিকিউরিটি অ্যাডমিনিস্ট্রেশন) একটি বিবৃতিতে বাইডেনের অভিযোগগুলোকে "মনগড়া" বলে আখ্যায়িত করে। তারা দাবি করে, বর্তমান সরকার যুক্তিসঙ্গত উপায়ে প্রশাসনিক কার্যক্রম পরিচালনা করছে এবং প্রযুক্তির উন্নয়নের মাধ্যমে সেবাকে আরও সহজলভ্য করার চেষ্টা চলছে। এক্স (টুইটার) প্ল্যাটফর্মে একটি পোস্টে তারা জানায়, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) এবং ফোন সেবার মাধ্যমে সোশ্যাল সিকিউরিটির কার্যক্রম উন্নত করা হচ্ছে। পাশাপাশি, তারা এই দাবিও করে যে প্রযুক্তি বিভাগের বেশিরভাগ কর্মীই ছাঁটাইয়ের মুখোমুখি হননি এবং কোনো কার্যালয় স্থায়ীভাবে বন্ধও করা হয়নি।
এদিকে, সিএনএনের এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে যে ট্রাম্প প্রশাসন ৩০টিরও বেশি বিদেশী দূতাবাস ও কনস্যুলেট বন্ধ করার পরিকল্পনা করছে। অভ্যন্তরীণ নথি অনুযায়ী, মাল্টা, লুক্সেমবার্গ, দক্ষিণ কোরিয়া, কঙ্গো, সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিক এবং দক্ষিণ সুদানের মতো দেশগুলোতে মার্কিন কূটনৈতিক মিশন বন্ধ হতে পারে। এই পদক্ষেপটি পররাষ্ট্র দপ্তরের পুনর্গঠন প্রক্রিয়ার অংশ বলে জানানো হয়েছে। ডিপার্টমেন্ট অফ গভর্নমেন্ট এফিশিয়েন্সি (DOGE) নামক একটি সংস্থার মাধ্যমে সরকারের আকার ছোট করার এই উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। তবে, কর্মী ছাঁটাই এবং কূটনৈতিক উপস্থিতি কমিয়ে আনার এই সিদ্ধান্ত নিয়ে ইতিমধ্যেই বিতর্ক তৈরি হয়েছে।
বাইডেনের এই সমালোচনা এবং ট্রাম্প প্রশাসনের জবাব মার্কিন রাজনীতিতে নতুন উত্তেজনা তৈরি করেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আগামী দিনগুলোতে দুই পক্ষের মধ্যে এই ধরনের বাকবিতণ্ডা আরও বাড়তে পারে। একদিকে, বাইডেনের মতো প্রভাবশালী নেতাদের সমালোচনা ট্রাম্প প্রশাসনের জন্য চাপ তৈরি করছে, অন্যদিকে সরকারের পক্ষ থেকে দেওয়া ব্যাখ্যাগুলো জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করছে। এছাড়া, বিদেশী দূতাবাস বন্ধের সিদ্ধান্তটি মার্কিন পররাষ্ট্রনীতিতে কী ধরনের প্রভাব ফেলবে, তা নিয়েও উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। সামগ্রিকভাবে, এই ঘটনাগুলো যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক নীতিতে বড় ধরনের পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিচ্ছে।
সূত্র:https://youtu.be/SE8YYGSIDxs?si=3Ae_nmzvUnm31HDR
আঁখি