
ভারতীয় লন্ডনপ্রবাসী উদ্যোক্তা ও সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সার এরিম কৌর। ছবিঃ সংগৃহীত
ভারতীয় প্রাচীন ঐতিহ্যের ভিত্তিতে বিলাসবহুল চুলের তেলের ব্র্যান্ড প্রতিষ্ঠা করে ৪ মিলিয়ন ডলার আয় করেছেন ভারতীয় লন্ডনপ্রবাসী উদ্যোক্তা ও সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সার এরিম কৌর।
২০১৯ সালে প্রতিষ্ঠিত তার ব্র্যান্ড ‘বাইএরিম’—যা আটটি বিশুদ্ধ উপাদানে প্রস্তুত মূল চুল বৃদ্ধির তেলের জন্য পরিচিত—বিশেষভাবে জনপ্রিয়তা পেয়েছে আমলা, আরগান, নারকেল ও ক্যাস্টর অয়েল সমৃদ্ধ তেল দিয়ে। কৌরের ইনস্টাগ্রাম ও টিকটক মিলিয়ে ৭ লাখের বেশি অনুসারী রয়েছে। ব্র্যান্ডটি চালুর পর থেকে ৩.৩ মিলিয়ন পাউন্ড বা প্রায় ৪.২ মিলিয়ন ডলার আয় করেছে।
কৌর তার সাফল্যের পেছনে সোশ্যাল মিডিয়া কৌশলের গুরুত্ব তুলে ধরেন। তিনি এমন এক প্রজন্মের ভারতীয় তরুণ-তরুণীদের উদ্দেশ্যে কনটেন্ট তৈরি করেন, যারা সৌন্দর্য ও জীবনযাপনবিষয়ক পরামর্শের জন্য সোশ্যাল মিডিয়ায় ঝুঁকে থাকে।
“আমার বার্তাটি সবসময়ই স্পষ্ট ছিল—আমি তাদের জন্য কিছু করতে চেয়েছি, যারা মা-বোন ছাড়া বড় হয়েছে,” CNBC কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন কৌর।
মাত্র আট বছর বয়সে তার মা স্তন ক্যান্সারে মারা যান। তার মনে গেঁথে থাকা স্মৃতি—মায়ের ঘন ও লম্বা চুল—তার জীবনের এক গভীর অনুপ্রেরণা হয়ে দাঁড়ায়।
“আমি সবসময় মায়ের মতো দেখতে চেয়েছি। তার সৌন্দর্যের এক বড় অংশ ছিল চুল, এবং সেটি হারানোর ভয় আমাকে তাড়িয়ে বেড়াত,” বলেন তিনি।
মায়ের মৃত্যুর পর তার বাবা, যিনি তখন মাত্র ২৯, কৌরের চুল কাটাতে নিয়ে যেতেন। “আমি চুল বাঁধতেও জানতাম না। শেখার আগেই তিনিও আমাদের ছেড়ে যান,” বলেন কৌর।
এই শূন্যতার মধ্যেই তিনি আশ্রয় নেন তার দাদীর কাছে। দাদীর তত্ত্বাবধানে কৈশোরকালজুড়ে নানা তেল ও প্রাকৃতিক উপাদান ব্যবহার করে চুলের যত্ন নিতে শিখেছিলেন কৌর। পরবর্তী সময়ে সেই অভিজ্ঞতার ভিত্তিতেই তিনি তৈরি করেন বাইএরিম তেলের মূল ফর্মুলা।
সেই অভিজ্ঞতাই ছিল তার সোশ্যাল মিডিয়ার যাত্রার মূল ভিত্তি, যেখানে তিনি শেয়ার করতেন মা ছাড়া বড় হওয়ার গল্প এবং একজন নারী হিসেবে আত্মযত্ন শেখার পথচলা।
“আমি এমন ছেলে-মেয়েদের জন্য একটি শর্টকাট তৈরি করতে চেয়েছিলাম যারা মা ছাড়া বড় হয়েছে। তাই আমি এই অভিজ্ঞতাগুলো শেয়ার করতে শুরু করি,” ব্যাখ্যা করেন তিনি।
২০১৯ সালে যখন তার ১ লাখ ফলোয়ার হয়, তখনই কৌর সিদ্ধান্ত নেন এই দৃষ্টিভঙ্গিকে একটি ব্র্যান্ডে রূপ দেওয়ার, যা হবে তার মা ও দাদীর প্রতি ভালোবাসার শ্রদ্ধাঞ্জলি।
মুমু