
ছবি: সংগৃহীত।
ফিলিস্তিনের প্রতি সংহতি জানানোর ‘অপরাধে’ এবার কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। দক্ষিণাঞ্চলীয় মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর অন্তত ১২২ জন বিদেশি শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিল বা প্রত্যাহার করা হয়েছে। এনবিসি নিউজের এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এই চাঞ্চল্যকর তথ্য।
গত বছর গাজায় ইসরাইলের সামরিক আগ্রাসনের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদে উত্তাল হয়ে উঠেছিল মার্কিন ক্যাম্পাসগুলো। সেই বিক্ষোভে শুধু আমেরিকান শিক্ষার্থীরাই নয়, উল্লেখযোগ্য সংখ্যক বিদেশি শিক্ষার্থীও ফিলিস্তিনের পক্ষে আওয়াজ তোলেন। তারা অংশ নেন পদযাত্রা, প্রতিবাদ সভা, ক্যাম্পাস আন্দোলনে। বিশেষত ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থী মাহমুদ খলিল-এর নেতৃত্বে গড়ে ওঠা আন্দোলন দৃষ্টি আকর্ষণ করে আন্তর্জাতিকভাবে।
কিন্তু এক বছরের মাথায় সেই প্রতিবাদের মূল্য দিতে হচ্ছে বহু শিক্ষার্থীকে।
টেক্সাস, ফ্লোরিডা, নিউ মেক্সিকো, নর্থ ক্যারোলাইনা প্রভৃতি অঙ্গরাজ্যের কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ৫৬ জন শিক্ষার্থীর নাম ইতোমধ্যেই মুছে ফেলা হয়েছে মার্কিন হোমল্যান্ড সিকিউরিটির ওয়েবসাইট থেকে। এর অর্থ হচ্ছে, তাদের হয় যুক্তরাষ্ট্র ছাড়তে হবে, নতুবা নতুন করে আবেদন করতে হবে—যার অনুমোদন আদৌ মিলবে কিনা তা অনিশ্চিত।
প্রতিবেদনে বলা হয়, "তারা মানুষকে ভয় দেখানোর চেষ্টা করছে, কিন্তু তারা বুঝতে পারছে না, তারা কাদের বিরুদ্ধে লড়ছে।" এক শিক্ষার্থীর বক্তব্য, "আমরা ভয় পাই না। আমরা এই দেশের নাগরিক, জনগণের জন্য সংগ্রাম করতেই এখানে এসেছি।"
সম্প্রতি মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও ঘোষণা দেন, ফিলিস্তিনপন্থী বিক্ষোভে অংশ নেওয়া ৩০০ শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিল করা হবে। ধারণা করা হচ্ছে, এখন বাদ পড়া ১২২ জন শিক্ষার্থী সেই ঘোষণারই অংশ।
এই পদক্ষেপকে "রাজনৈতিক নিপীড়ন" বলে আখ্যায়িত করছেন শিক্ষার্থী, অধিকারকর্মী ও বিশ্লেষকরা। অনেকেই বলছেন, যুক্তরাষ্ট্র মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকে বাধা দিয়ে ন্যায়সংগত একটি দাবিকে দমন করতে চাচ্ছে।
ভিসা বাতিল ও দেশে ফেরানোর হুমকির মাঝেও আন্দোলনের স্পৃহা থেমে নেই। শিক্ষার্থীরা বলছেন,
"আমাদের আন্দোলন থামবে না, বরং আরও বড় হবে, আরও সংগঠিত হবে। ঐক্যবদ্ধ সত্যের শক্তিকে দমন করা যায় না।"
নুসরাত