ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ১৪ এপ্রিল ২০২৫, ১ বৈশাখ ১৪৩২

মধ্যযুগীয় কৌশলে অবরুদ্ধ রাফাহ, ত্রাণ বন্ধ রেখে মৃত্যু ফাঁদ!

প্রকাশিত: ১১:৪৫, ১৩ এপ্রিল ২০২৫; আপডেট: ১১:৪৭, ১৩ এপ্রিল ২০২৫

মধ্যযুগীয় কৌশলে অবরুদ্ধ রাফাহ, ত্রাণ বন্ধ রেখে মৃত্যু ফাঁদ!

ইসরাইলি বাহিনী গাজা এলাকার রাফা শহরকে পুরোপুরি দখল করার জন্য বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করেছে। গাজাকে পুরোপুরি দখল করতেই রাফাকে অবরুদ্ধ করা হয়েছে। এ কারণে নিরাপত্তা জোন এবং করিডর তৈরির নামে ঘিরে ফেলা হয়েছে মিশর সীমান্তবর্তী এলাকা, এমনটাই বলছেন বিশ্লেষকরা। 

একদিকে মাটির সাথে মিশিয়ে দেয়া হচ্ছে বিভিন্ন স্থাপন, অন্যদিকে ত্রাণ বন্ধ করে খাদ্য ও পানির সংকট সৃষ্টি করে তিলে তিলে গাজাবাসীকে হত্যার পরিকল্পনা চালাচ্ছে নেতানিয়াহু প্রশাসন। তাই তেল আবিবের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হলো এই অঞ্চলটি।


রাফার পথে পথে চলছে ইসরাইলি বাহিনীর তাণ্ডব। ভারী সমরাস্ত্র থেকে চলছে মুহুর্মুহু হামলা। অন্যদিকে ট্যাংক আর বুলডোজার দিয়ে মিশিয়ে দেয়া হচ্ছে বিভিন্ন স্থাপনা। 

কৌশলগত গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চলটি পুরোপুরি অবরুদ্ধ করে ফেলেছে ইসরাইলি সামরিক বাহিনী। সম্প্রতি নিরাপত্তা জোনের নামে রাফা দখলের ঘোষণা দেন ইসরাইলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী। এরপর থেকেই অঞ্চলটিতে চলছে তাণ্ডব। দিনের পর দিন হামলার পরিধির সাথে বৃদ্ধি পায় নৃশংসতার মাত্রাও। বাসিন্দাদের দেয়া হয় রাফা থেকে সরে যাওয়ার নির্দেশ। এ অবস্থায় প্রশ্ন উঠেছে, কেন রাফা নিয়ন্ত্রণ নিতে চায় ইসরাইল?


সম্প্রতি রাফা ও খান ইউনিস মধ্যবর্তী স্থানে মোরা নিরাপত্তা করিডর স্থাপন করে ইসরাইল। এই করিডরকে মিশর সীমান্তের সাথে থাকা রাফা ক্রসিং এর সাথে যুক্ত করা হবে বলেও জানায় আইডিএফ। নবনির্মিত এই মোরাক করিডর নির্মাণের উদ্দেশ্য ছিল গাজার অন্যান্য স্থান থেকে রাফাকে পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন করা। হয়েছেও তাই। তবে দিগ্বিদিক্‌ ছুটে পালিয়ে গেলেও এখনো অঞ্চলটিতে আটকা পড়ে আছে বহু ফিলিস্তিনি। আইডিএফ এর বোমা ও গুলিবর্ষণে ঝুঁকছে তাদের প্রাণ।

মধ্যযুগীয় কায়দায় অবরোধ বাস্তবায়নের পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে ইসরাইল। যে তিনটি করিডর নির্মাণ করা হয়েছে, এর উদ্দেশ্য গাজাকে পুরোপুরি অবরুদ্ধ করে ফেলা। বিশ্লেষকরা বলছেন, গাজার আয়তন কমাতে রাফা থেকে নেটজারিম করিডর পর্যন্ত অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ নেয়ার পায়তারা করছে নেতানিয়াহু প্রশাসন। 

অবরুদ্ধ ফিলিস্তিনিরা আশ্রয় নিতে অন্য দেশে যেমন যেতে পারবেন না, তেমনি ত্রাণ প্রবেশ বন্ধ করায় না খেয়ে তিলে তিলে এই ভূখণ্ডেই মরতে হবে তাদের। ফলে গাজার নিয়ন্ত্রণ নেয়ার পথ আরো প্রশস্ত হবে নেতানিয়াহুর জন্য। ইসরাইলের এমন নীল নকশার আঁচ পেয়ে দেশটির বিরুদ্ধে আবারো জাতিগত নিধনের অভিযোগ তুলেছে জাতিসংঘ।


ওরা সীমান্ত বন্ধ করেছে যাতে কোন প্রকার ত্রাণ প্রবেশ করতে না পারে, ফিলিস্তিনীরা খাবারের অভাবে প্রাণ হারাচ্ছেন। এটি একটি দীর্ঘমেয়াদী কৌশলগত পরিকল্পনা হামাসের উপর চাপ বাড়াতে তা করা হচ্ছে।


রাফাকে পুরোপুরি দখলের আরো একটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্দেশ্য রয়েছে ইসরায়েলের। তা হলো হামাসের সুবিশাল টানেল নেটওয়ার্ককে বিচ্ছিন্ন করা। গাজার অভ্যন্তরিত বটেই, অবরুদ্ধ উপত্যকা থেকে বহির্বিশ্বের সাথে হামাসের যোগাযোগের মাধ্যম মাটির নিচে নির্মিত এই টানেল নেটওয়ার্ক। তেল আবিবের দাবি, মিশরের সিনাই উপদ্বীপ ও গাজার সংযোগকারী টানেলের সংখ্যা বহু। আর এই গোপন সুরঙ্গ পথে হামাসের অস্ত্র সরবরাহ বন্ধ করাও রাফা দখলের অন্যতম উদ্দেশ্য।

গাজা যুদ্ধের আগে প্রায় ২ লাখ ৮ হাজার মানুষের বসবাস ছিল রাফাতে।

 

 

সূত্র:https://tinyurl.com/3nn73n8e

আফরোজা

×