
মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের দীর্ঘদিনের পারমাণবিক উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে এবার নতুনভাবে যুক্ত হয়েছে রাশিয়া। সম্প্রতি রাশিয়া-ইরানের মধ্যে ২০ বছরের একটি কৌশলগত চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে, যা এই অঞ্চলে নতুন শক্তির ভারসাম্য গঠনের ইঙ্গিত দিচ্ছে।
রাশিয়ার সক্রিয়তা:
ক্রেমলিন সরাসরি ঘোষণা করেছে, তারা যুক্তরাষ্ট্র-ইরান উত্তেজনা নিরসনে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করতে প্রস্তুত। রাশিয়া শুধু পর্যবেক্ষকের ভূমিকায় নয়, বরং এখন একপ্রকার মধ্যস্থতাকারী হিসেবেই ভূমিকা রাখতে চাইছে। দেশটির উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী সেরগেই রিয়াবকভ বলেন, “ট্রাম্প প্রশাসনের যুদ্ধকামিতা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলছে, যা গোটা অঞ্চলের জন্য বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে।”
চুক্তির প্রভাব ও শর্তাবলি:
২০২৫ সালের জানুয়ারিতে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং ইরানি প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেসকিয়ান এই কৌশলগত চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। এর আওতায় সামরিক, প্রযুক্তি, নিরাপত্তা ও বাণিজ্যিক খাতে উভয় দেশের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সহযোগিতা চালিয়ে যাওয়ার কথা বলা হয়েছে। যৌথ সামরিক মহড়া এবং পারস্পরিক নিরাপত্তা সহায়তা এই চুক্তির গুরুত্বপূর্ণ দিক।
পারমাণবিক আলোচনা ও ওমানের ভূমিকা:
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা করেছেন, ইরানের সঙ্গে সরাসরি আলোচনা শুরু হবে। যদিও ইরান জানিয়েছে, এসব আলোচনা ওমানের মাধ্যমে পরোক্ষভাবে চালানো হবে। এই দৃষ্টিকোণ থেকে রাশিয়ার মধ্যস্থতা আরো গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে, কারণ মস্কো ও তেহরান এখন কৌশলগত অংশীদার হিসেবে কাজ করছে।
বিশ্ব প্রতিক্রিয়া ও আশঙ্কা:
ইরান দাবি করে, তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ। তবে ট্রাম্প প্রশাসনের অবস্থান ভিন্ন। ট্রাম্প হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, চুক্তি ব্যর্থ হলে ইরানকে সামরিক প্রতিরোধের মুখোমুখি হতে হবে। এ ধরনের হুমকি মধ্যপ্রাচ্যে নতুন করে উত্তেজনা বাড়িয়েছে।
পটভূমি ও ভূরাজনৈতিক বাস্তবতা:
ইউক্রেন যুদ্ধের পর রাশিয়া-ইরান সম্পর্ক আরও ঘনিষ্ঠ হয়েছে। রাশিয়া ইউক্রেনে ইরানি ড্রোন ব্যবহার করছে, যা সামরিক সহযোগিতাকে একটি বৈধ কাঠামোতে রূপ দিয়েছে। ফলে যুক্তরাষ্ট্র-ইরান কূটনীতির উত্তাপের মাঝে এবার শক্ত অবস্থান নিয়েছে রাশিয়া।
সবমিলিয়ে, রাশিয়া-ইরান চুক্তি মধ্যপ্রাচ্যে এক নতুন কূটনৈতিক খেলার সূচনা করেছে, যার প্রভাব শুধু এই অঞ্চল নয়, বরং বৈশ্বিক রাজনীতির ওপরও গভীরভাবে পড়তে পারে।
সূত্র : https://www.youtube.com/watch?v=qwrxu7794QA
রাজু