
ছবিঃ সংগৃহীত
যুদ্ধের ময়দান সরগরম, টকবক করে ফুটছে মাথার চাঁদি। উপরে বসে খুঁচাচ্ছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। বলছেন, সমঝোতার টেবিলে না এলেই হবে হামলা—পরিণতি হবে ভয়াবহ। ইরানকে তার পারমাণবিক কার্যক্রম ছাড়তেই হবে, বাধ্য ছেলের মতো নতজানু হতে হবে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে।
তবে এসব তোয়াক্কা করছে না ইরান। বলছে, চাপ নয়, সম্মান দিয়ে কথা বলুন। চাপে ফেলে ইরানকে জংধরা তরবারির মতো খাপে পোড়া যাবে না। তেহরান চাপের কাছে মাথা কখনও নোয়ায়নি, এখনো নোয়াবে না। ইরান তার পারমাণবিক অর্জন থেকে সরে আসবে না, করবে না কোনো আপোষ।
জাতীয় পারমাণবিক দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন দেশটির প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান। যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক হুমকির জবাবে তিনি বলেন, “তারা যত বেশি হুমকি দেবে, আমরা তত বেশি শক্তিশালী হব।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা শান্তি চাই, সংলাপেও প্রস্তুত, তবে সেটা মর্যাদা ও আত্মমর্যাদার ভিত্তিতে। আমরা আমাদের অর্জন ছাড়বো না এবং কেউ আমাদের চিন্তা বা উদ্ভাবনী শক্তিকে বাধা দিতে পারবে না।”
তেহরান পারমাণবিক বোমা তৈরি করতে চায় না বলেও দাবি করেন তিনি। বলেন, “পশ্চিমারা বলে ইরান বোমা বানাতে চায়, কিন্তু আমাদের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামিনী স্পষ্টভাবে বলেছেন, আমরা বোমা চাই না। এটা বহুবার যাচাইও হয়েছে। তবে পারমাণবিক জ্ঞান ও শক্তি আমাদের প্রয়োজন।”
ইরান যুদ্ধ চায় না—উল্লেখ করে প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “কেউ যদি যুদ্ধ চায়, তার জন্য প্রস্তুত ইরান। আমরা যুদ্ধ চাই না, তবে যেকোনো আক্রমণের মুখে দৃঢ়ভাবে দাঁড়াবো। আমরা কাউকে আক্রমণ করতে চাই না, তবে কেউ আমাদের মারলে আমরা আরও শক্তিশালী হয়ে তার জবাব দেব।”
এ সময় তিনি বলেন, “ইরান যুক্তরাষ্ট্রকে বিশ্বাস করে না।” প্রশ্ন তুলে বলেন, “যুক্তরাষ্ট্র একদিকে আমাদের উপর নিষেধাজ্ঞা দেয়, অন্যদিকে সংলাপ চায়—এটা কেমন ন্যায্যতা?”
পেজেশকিয়ানের বক্তব্যে উঠে আসে ২০১৫ সালের জেসিপিওএ চুক্তির কথাও। তিনি বলেন, “আমরা আমাদের প্রতিশ্রুতি পালন করেছিলাম, কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র একতরফাভাবে চুক্তি থেকে সরে গিয়ে আবার আমাদের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।”
তবে দুই দেশের মধ্যে চলমান বিরোধ ও অবিশ্বাস কূটনৈতিক ও রাজনৈতিক আলোচনার মধ্য দিয়েই মীমাংসা করা সম্ভব বলে মনে করেন তিনি। বলেন, “আমি বিশ্বাস করি, আমরা শক্তি ও সংলাপের মাধ্যমে এই সমস্যাগুলোর সমাধান করতে পারবো।”
উল্লেখ্য, ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিরা শনিবার (১২ এপ্রিল) ওমানের মাসকাটে পরোক্ষ আলোচনায় বসবেন, যেখানে পারমাণবিক কর্মসূচি ও নিষেধাজ্ঞা নিয়ে আলোচনা হবে।
ইমরান