
ছবি : সংগৃহীত
যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে চলমান বাণিজ্য যুদ্ধ নতুন মাত্রা পেয়েছে। গত ৯ এপ্রিল থেকে যুক্তরাষ্ট্র সরকার চীনা পণ্যের উপর ১০৪ শতাংশ আমদানি শুল্ক কার্যকর করেছে, যা বাণিজ্য সংঘাতকে আরও তীব্র করেছে। হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লেভিট এক ব্রিফিংয়ে এই সিদ্ধান্তের কথা আনুষ্ঠানিকভাবে নিশ্চিত করেছেন।
এই সিদ্ধান্তের পটভূমিতে দেখা যায়, গত ২ এপ্রিল যুক্তরাষ্ট্র চীনা পণ্যের উপর ৩৪ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছিল। এর আগে বিদ্যমান শুল্ক হার ছিল ২০ শতাংশ। অর্থাৎ মাত্র এক সপ্তাহের ব্যবধানে চীনা পণ্যের উপর আমদানি শুল্ক পাঁচ গুণেরও বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে। এই দ্রুতগতিতে শুল্ক বৃদ্ধি আন্তর্জাতিক বাণিজ্য বিশ্লেষকদের মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে।
চীন সরকার এই সিদ্ধান্তের তীব্র নিন্দা জানিয়ে পাল্টা ব্যবস্থা নিয়েছে। গত ৪ এপ্রিল বেইজিং মার্কিন পণ্যের উপর ৩৪ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেয়, যা ১০ এপ্রিল থেকে কার্যকর হচ্ছে। চীনা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে, "যুক্তরাষ্ট্রের এই একতরফা ও অন্যায্য সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে চীন প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ নেবে।"
বাণিজ্য বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে দিয়েছেন যে এই শুল্ক যুদ্ধ বিশ্ব অর্থনীতির জন্য মারাত্মক পরিণতি বয়ে আনতে পারে। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই সংঘাত বিশ্বজুড়ে সরবরাহ শৃঙ্খলকে ব্যাহত করতে পারে এবং মুদ্রাস্ফীতির চাপ বাড়াতে পারে। বিশেষ করে উন্নয়নশীল দেশগুলো যারা উভয় দেশের সাথে বাণিজ্যিক সম্পর্ক রাখে, তারা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
বর্তমান পরিস্থিতিতে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। অনেক দেশ এখন ডব্লিউটিওর হস্তক্ষেপ কামনা করছে। তবে বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই সংকটের তাৎক্ষণিক সমাধান হওয়া কঠিন। যুক্তরাষ্ট্র ও চীন উভয়েই তাদের অবস্থানে অনড় থাকলে বাণিজ্য যুদ্ধ আরও দীর্ঘায়িত হতে পারে, যা বৈশ্বিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য হুমকিস্বরূপ।
আঁখি