
ছবি: সংগৃহীত
বিশ্বের প্রথম সফলভাবে বিলুপ্ত প্রাণী ফিরিয়ে আনার ইতিহাস রচনা করেছে ডালাসভিত্তিক বায়োটেক কোম্পানি কোলসাল বায়োসায়েন্সেস। দীর্ঘ ১২,৫০০ বছর আগে পৃথিবী থেকে নিঃশব্দে বিলুপ্ত হয়ে যাওয়া ডায়ার উলফের পুনর্জীবন ঘটানো হয়েছে অত্যাধুনিক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির মাধ্যমে। কোলসাল বিজ্ঞানীরা প্রাচীন ডিএনএ, ক্লোনিং এবং জিন-সম্পাদনা প্রযুক্তি ব্যবহার করে গ্রে উলফের জিনে পরিবর্তন এনে এই শিকারী প্রাণীটির একটি হাইব্রিড প্রজাতি তৈরি করেছেন।
ডায়ার উলফ ছিল একসময় উত্তর আমেরিকার শীর্ষ শিকারী, যা তার বড় আকার, শক্তিশালী জিভ এবং মোটা পশমের জন্য পরিচিত ছিল। এই প্রাণীটির চরিত্র পর্দায় ফুটে উঠেছিল জনপ্রিয় টিভি সিরিজ “গেম অফ থ্রোনস”-এর মাধ্যমে, যেখানে এটি ছিল একটি শক্তিশালী, বিশাল আকৃতির শিকারী কুকুরের প্রতীক। কোলসাল বায়োসায়েন্সেস জানিয়েছে, তারা ১৩,০০০ বছর পুরনো একটি দাঁত এবং ৭২,০০০ বছর পুরনো একটি খুলি থেকে ডিএনএ সংগ্রহ করে সফলভাবে ডায়ার উলফের তিনটি শাবক তৈরি করেছে।
এটি শুধুমাত্র কোলসাল বায়োসায়েন্সেসের জন্য একটি মাইলফলক নয়, বরং একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ সারা বিশ্বের জন্য, যা প্রমাণ করে যে আধুনিক জিন-সম্পাদনা এবং ক্লোনিং প্রযুক্তির সাহায্যে বিলুপ্ত প্রজাতির পুনর্জন্ম সম্ভব। এ পর্যন্ত কোলসাল প্রাথমিকভাবে ম্যামথ, ডোডো পাখি এবং তাসমানিয়ান টাইগারের পুনর্জন্মের কাজ শুরু করলেও, ডায়ার উলফ ছিল তাদের প্রথম সফল প্রকল্প।
বর্তমানে এই ডায়ার উলফ শাবকগুলি একটি সুরক্ষিত পরিবেশে, যেখানে তাদের উপর নজর রাখা হচ্ছে অত্যাধুনিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা, ড্রোন এবং লাইভ ক্যামেরার মাধ্যমে। কোলসাল জানিয়েছে, এই বিশেষ স্থাপনাটি আমেরিকান হিউম্যান সোসাইটির দ্বারা সার্টিফায়েড এবং ইউএস ডিপার্টমেন্ট অফ এগ্রিকালচার দ্বারা নিবন্ধিত।
কোলসালের সহ-প্রতিষ্ঠাতা এবং সিইও বেন ল্যাম বলেন, "এই অর্জন কেবল আমাদের প্রযুক্তির সফলতা নয়, বরং এটি ভবিষ্যতে আরও অনেক বিলুপ্ত প্রাণীকে ফিরিয়ে আনার পথও উন্মোচিত করেছে।"
ডায়ার উলফের পুনর্জন্মের ঘটনা বিজ্ঞানী ও নীতিগতভাবে বড় ধরনের বিতর্কের সৃষ্টি করতে পারে, তবে এটি নিঃসন্দেহে জীববিজ্ঞান এবং প্রযুক্তির এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে
কানন