
ছবি : সংগৃহীত
যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে বাণিজ্য সংঘাত নতুন মাত্রা পেয়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প চীনকে ৩৪ শতাংশের পাল্টা শুল্ক প্রত্যাহারের জন্য মঙ্গলবার পর্যন্ত সময়সীমা বেঁধে দিয়েছেন। তিনি সতর্ক করেছেন, চীন এই শুল্ক প্রত্যাহার না করলে যুক্তরাষ্ট্রে চীনা পণ্যের ওপর অতিরিক্ত ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হবে। এই হুমকি বাস্তবায়িত হলে মার্কিন কোম্পানিগুলোকে চীনা পণ্য আমদানিতে মোট ১০৪ শতাংশ শুল্ক দিতে হতে পারে, কারণ ইতোমধ্যে ৫৪ শতাংশ শুল্ক কার্যকর রয়েছে।
এই সংঘাতের সূত্রপাত হয় গত সপ্তাহে যখন ট্রাম্প "অর্থনৈতিক স্বাধীনতা দিবস" উদ্যোগের অংশ হিসেবে চীনা পণ্যে ৩৪ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেন। এর জবাবে চীন রোববার পাল্টা শুল্ক ঘোষণা করে। ট্রাম্প সোমবার সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি পোস্টে চীনকে সতর্ক করে বলেন, শুল্ক প্রত্যাহার না করলে আলোচনা বন্ধ করে দেওয়া হবে। চীনা দূতাবাস এই পদক্ষেপকে "অর্থনৈতিক উৎপীড়ন" আখ্যা দিয়ে জানিয়েছে যে চীন তার স্বার্থ রক্ষায় দৃঢ় থাকবে।
এই সংঘাতের প্রভাব গ্লোবাল মার্কেটে ইতিমধ্যেই দেখা যাচ্ছে। ট্রাম্পের ঘোষণার পর বিশ্বব্যাপী শেয়ার বাজারে ধস নেমেছে। হংকংয়ের হ্যাং সেং সূচক ১৩ শতাংশ নেমে ১৯৯৭ সালের পর একদিনে সবচেয়ে বড় পতন রেকর্ড করেছে। যদিও মঙ্গলবার কিছুটা উন্নতি দেখা গেছে, তবুও অনিশ্চয়তা অব্যাহত রয়েছে। চীনের রপ্তানিকারকদের জন্য এটি বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ, কারণ যুক্তরাষ্ট্র তাদের প্রধান বাজার।
আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ও এই সংঘাত নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। ইইউ প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডের লেয়েন "জিরো-ফর-জিরো শুল্ক" চুক্তির প্রস্তাব দিয়েছেন, কিন্তু ট্রাম্প ইইউকে "মার্কিন বাণিজ্যের শত্রু" বলে আক্রমণ করেছেন। এদিকে, ইসরায়েল ও জাপানের মতো মিত্র দেশগুলোর সাথেও শুল্ক নিয়ে আলোচনা চলছে। বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন, এই সংঘাত যদি আরও তীব্র হয়, তাহলে বৈশ্বিক অর্থনীতিতে মন্দার আশঙ্কা রয়েছে।
ট্রাম্প তার অবস্থানের পক্ষে যুক্তি দিয়ে বলেছেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৩৬ ট্রিলিয়ন ডলার ঋণ কমানোর জন্য ন্যায্য বাণিজ্য চুক্তি প্রয়োজন। তিনি জানিয়েছেন, শুল্ক আরোপ এবং আলোচনা - উভয়ই একসাথে চলতে পারে। তবে চীন জোর দিয়ে বলেছে, চাপ বা হুমকির মাধ্যমে সমস্যার সমাধান হবে না। এই সংঘাত কতদূর গড়ায়, তা এখন সময়ই বলবে।
আঁখি