ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ০৮ এপ্রিল ২০২৫, ২৫ চৈত্র ১৪৩১

ইরানি ’মুখপত্রে’ ট্রাম্পকে হত্যার হুমকি, মাথায় চালানো হবে গুলি!

প্রকাশিত: ০৭:২৪, ৮ এপ্রিল ২০২৫; আপডেট: ০৭:২৬, ৮ এপ্রিল ২০২৫

ইরানি ’মুখপত্রে’ ট্রাম্পকে হত্যার হুমকি, মাথায় চালানো হবে গুলি!

ছবি : সংগৃহীত

ইরান তার সামরিক বাহিনীকে সর্বাত্মক যুদ্ধের প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে, যা আঞ্চলিক উত্তেজনা নতুন উচ্চতায় নিয়ে গেছে। ইসলামী বিপ্লবী গার্ডসহ ইরানের সকল সামরিক শাখাকে পূর্ণ প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে। এবারই প্রথম ইরান সরাসরি হুঁশিয়ারি দিয়েছে যে, কেবল যুক্তরাষ্ট্রই নয়, যেসব দেশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে কোনো ধরনের সহায়তা করবে, সেসব দেশের বিরুদ্ধেও তারা সামরিক হামলা চালাবে। ইরানের পক্ষ থেকে জারি করা এই রাষ্ট্রীয় সতর্কবার্তায় স্পষ্ট করে বলা হয়েছে, এমন কোনো ঘটনা ঘটলে সমগ্র উপসাগরীয় অঞ্চল যুদ্ধের আগুনে জ্বলে উঠতে পারে, যা একটি ব্যাপক আঞ্চলিক সংঘাতের দিকে মোড় নিতে পারে।  

 

 

ইরানের এক উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তা, যিনি নাম প্রকাশ না করার শর্তে কথা বলেছেন, তিনি রয়টার্সকে জানিয়েছেন যে ইরান আনুষ্ঠানিকভাবে ছয়টি প্রতিবেশী দেশকে সতর্কবার্তা পাঠিয়েছে। এই দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে তুরস্ক, কাতার, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ইরাক, বাহরাইন এবং কুয়েত। ইরানের পক্ষ থেকে এই দেশগুলোকে স্পষ্টভাবে জানানো হয়েছে যে, ইরানের বিরুদ্ধে কোনো হামলার জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে তাদের ভূখণ্ড বা আকাশসীমা ব্যবহার করতে দেওয়া যাবে না। যদি কোনো দেশ এই নির্দেশনা অমান্য করে, তাহলে ইরান সেই দেশকে শত্রু হিসেবে বিবেচনা করে কঠোর পাল্টা ব্যবস্থা নেবে। উল্লেখ্য, ইরানের বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর বেরিয়েছে যে কুয়েত ইতিমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রকে ইরানের বিরুদ্ধে কোনো ধরনের সহায়তা না করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। তবে তুরস্কের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে যে তারা ইরানের কাছ থেকে কোনো ধরনের সতর্কবার্তা পায়নি।  

 

 

এদিকে, মধ্য প্রাচ্য নিয়ে কাজ করা আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম মিডল ইস্ট আই জানিয়েছে যে সৌদি আরবসহ উপসাগরীয় অঞ্চলের বেশ কয়েকটি দেশ ইরানের বিরুদ্ধে হামলার জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে তাদের আকাশসীমা ব্যবহার করতে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, ইরান তার নিরাপত্তা নিয়ে অত্যন্ত সতর্ক অবস্থানে রয়েছে এবং প্রতিবেশী কোনো দেশ যদি যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ নেয়, তাহলে ইরান কঠোর প্রতিক্রিয়া দেখাতে প্রস্তুত। এমন পরিস্থিতিতে শুধু যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে পুরো অঞ্চল জুড়ে একটি বড় ধরনের যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।

 

এই উত্তপ্ত পরিস্থিতির মধ্যে ইরানের কট্টরপন্থী গণমাধ্যম কেহান ইন্টারন্যাশনাল, যাকে সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনীর মুখপাত্র হিসেবে বিবেচনা করা হয়, তারা একটি সম্পাদকীয় নিবন্ধে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে হত্যার হুমকি দিয়েছে। নিবন্ধটিতে ২০২০ সালে ইরানের কিংবদন্তী সামরিক কমান্ডার কাসেম সোলেইমানিকে ড্রোন হামলায় হত্যার প্রতিশোধের ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে। নিবন্ধে ট্রাম্পকে "মাথায় একের পর এক গুলি করে হত্যা করা হবে" বলে হুমকি দেওয়া হয়েছে এবং তাকে "অভিশপ্ত মৃত্যুর পাত্র" হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে। এছাড়াও, ট্রাম্পকে "উন্মাদ" বলে উল্লেখ করে নিবন্ধে দাবি করা হয়েছে যে তিনি ইরানকে হামলার হুমকি দিয়ে বারবার পিছু হটছেন এবং মার্কিন অর্থনীতিকে ধ্বংস করছেন।  

বর্তমান পরিস্থিতি অত্যন্ত নাজুক এবং যেকোনো অপ্রত্যাশিত ঘটনা পুরো অঞ্চলকে একটি ভয়াবহ যুদ্ধের দিকে ঠেলে দিতে পারে। ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে উত্তেজনা ক্রমাগত বাড়ছে, এবং এর মধ্যে তৃতীয় কোনো পক্ষ জড়িত হলে পরিস্থিতি আরও জটিল আকার ধারণ করতে পারে। বিশ্লেষকরা সতর্ক করে দিয়েছেন যে, এই সংঘাত শুধু দুই দেশের মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে পুরো মধ্য প্রাচ্য জুড়ে ছড়িয়ে পড়তে পারে, যা বিশ্ব রাজনীতিতে একটি বড় ধরনের সংকট তৈরি করবে।

 

সূত্র:https://youtu.be/UA28828OwGI?si=Wl6SjPi2cn4EAnAn

আঁখি

×