
ছবি: সংগৃহীত
ইসরাইলের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে বন্ধুত্বের পথে হাঁটছে সংযুক্ত আরব আমিরাত। রোববার (৬ এপ্রিল) আবুধাবিতে এক বৈঠকে হাসিমুখে মুখোমুখি হন আমিরাতের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী শেখ আব্দুল্লাহ বিন জায়েদ আল নাহিয়ান এবং ইসরাইলি পররাষ্ট্রমন্ত্রী গিরিদিয়ন স্যার। বৈঠকে দুই দেশের মধ্যকার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও জোরদার করার বিষয়ে মতৈক্যে পৌঁছান তারা।
যখন ফিলিস্তিনে ইসরাইলি আগ্রাসনে রক্ত ঝরছে, তখন মুসলিম পরিচয়ধারী একটি দেশের এমন কর্মকাণ্ড বিশ্ব মানবতার বিবেককে প্রশ্নের মুখে ফেলেছে।
সরকারি এমিরেটস নিউজ এজেন্সির তথ্যানুযায়ী, বৈঠকে গাজা উপত্যকার মানবিক সংকট, যুদ্ধবিরতির চুক্তি পুনরায় কার্যকর করা, এবং জিম্মিদের মুক্তি নিয়ে আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টার আলোচনা হয়। বলা হচ্ছে, তারা যুদ্ধবিরতি পুনরুজ্জীবনের পাশাপাশি বন্দী বিনিময় ও শান্তি আলোচনা শুরুর ওপরও গুরুত্ব দিয়েছেন।
তবে, বাস্তব চিত্র একেবারেই ভিন্ন। জানুয়ারিতে শুরু হওয়া যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপ মার্চের শুরুর দিকেই ভেঙে পড়ে। এরপর ১৮ মার্চ ইসরাইল নতুন করে গাজা আক্রমণ শুরু করে, যার ফলে যুদ্ধবিরতির আশা আর বাস্তবতার মধ্যে বিশাল ফারাক তৈরি হয়।
শেখ আব্দুল্লাহ যদিও যুদ্ধ থামাতে ও শান্তি আলোচনার কথা বলেন, কিন্তু সেই আলোচনার মঞ্চেই যখন বসানো হয় ইসরাইলের একজন উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধি, তখন সেটি ফিলিস্তিনিদের জন্য এক ধাক্কা। মুসলিম পরিচয়ধারী দেশটি এমন এক রাষ্ট্রের সঙ্গে বন্ধুত্ব গড়ে তুলছে, যারা মুসলিম ভাইবোনদের উপর দিনের পর দিন অত্যাচার চালিয়ে যাচ্ছে।
আবুধাবি দাবি করেছে তারা ফিলিস্তিনিদের ঐতিহাসিক সমর্থনে অটল আছে। কিন্তু বাস্তবে ইসরাইলের সঙ্গে ক্রমবর্ধমান কূটনৈতিক সম্পর্ক, সহযোগিতা এবং উষ্ণতার এই দৃশ্য যেন সেই দাবি খণ্ডন করে।
এই বৈঠক, এই ছবি, এই বার্তাই যথেষ্ট প্রমাণ— মধ্যপ্রাচ্যের একটি দেশ যখন মুসলিম ভাইবোনদের ওপর চলা নিপীড়নের সময় ইসরাইলের সঙ্গে কূটনৈতিক বন্ধনে আবদ্ধ হয়, তখন সেটি শুধু সম্পর্ক উন্নয়ন নয়, বরং মুসলিম বিশ্বের বিশ্বাসঘাতকতাকেই প্রকাশ করে।
বিশ্ব জুড়ে মুসলিম উম্মাহ যখন ফিলিস্তিনের জন্য কাঁদছে, তখন আরব আমিরাতের এই ভূমিকা ইতিহাসে বিশ্বাসঘাতকতার এক কলঙ্কজনক অধ্যায় হয়ে রইল।
ভিডিও দেখুন: https://youtu.be/wUtzqFHA7B8?si=CFbvcrvWVa80l0Oe
এম.কে.