
ছবিঃ সংগৃহীত
মিশরের সামরিক শক্তি নিয়ে ভয়ঙ্কর দুশ্চিন্তায় পড়ে গেছে মধ্যপ্রাচ্যের কসাই বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। এভাবে নিষ্ঠুরতা চালিয়ে ইসরায়েল যে রক্ষা পাবে না, তা স্পষ্ট করেই জানিয়ে দিয়েছে মিশর। ইসরায়েলকে দমনে সীমান্তের সিনাই উপত্যকায় সৈন্য আর সামরিক অবকাঠামো বৃদ্ধি করেছে কায়রো—এমন সংবাদ ফলাও করে প্রচারিত হচ্ছে ইসরায়েলি গণমাধ্যমে।
ইসরায়েল জানে, মিশর একবার ক্ষেপে গেলে নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর দেশ। ধ্বংস হয়ে যাবে তার সব ধরনের জারিজুরি। এমনকি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও বাঁচাতে পারবে না ইসরায়েলকে। সে কারণে এখন মিশরের সেনা সমাবেশ নিয়ে ষড়যন্ত্রের পাঁয়তারা করছে ইসরায়েল। দেশটি নাকি এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে নালিশও দিয়েছে। যদিও এসবে পাত্তা দিচ্ছে না কায়রো। উল্টো ইসরায়েলের ক্ষমতার মোহ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন মিশরের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বদর আব্দেলআত্তি।
গাজা, পশ্চিম তীর এবং এই অঞ্চলে ইসরায়েলি আগ্রাসন নিয়ে আলোচনা করতে ফিলিস্তিনের ফাতাহ প্রতিনিধি দলের সাথে মিশরের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বৈঠক করেছেন। পাশাপাশি সেই আলোচনায় স্থান পেয়েছে গাজা উপত্যকা ও পশ্চিম তীরের বর্তমান উন্নয়ন। প্রতিনিধি দলের নেতৃত্বে ছিলেন ফাতাহ কেন্দ্রীয় কমিটির সচিব মেজর জেনারেল জিবরিল রাজুব।
বৈঠকে আব্দেলআত্তি গাজায় যুদ্ধবিরতির জন্য মিশরের প্রচেষ্টা এবং মানবিক সাহায্য প্রবেশের বিষয়ে আলোচনা করেন। গাজা ও পশ্চিম তীরে চলমান ইসরায়েলি আগ্রাসন, সেই সাথে এই অঞ্চলে ইসরায়েলের আগ্রাসী নীতি—যার মধ্যে রয়েছে আন্তর্জাতিক মানবিক আইনের নীতিমালার প্রতি কোনো গুরুত্ব না দিয়ে সামরিক শক্তির অতিরিক্ত ব্যবহার—এটি প্রমাণ করে, তারা নিজেদের আইনের ঊর্ধ্বে একটি রাষ্ট্র হিসেবে বিবেচনা করছে।
তবে মিশরের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসরায়েলকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, ক্ষমতার বিভ্রম ইসরায়েলকে তার কাঙ্ক্ষিত নিরাপত্তা অর্জনে সাহায্য করবে না। তাদের নিষ্ঠুরতা কেবল ঘৃণা এবং এই অঞ্চলে প্রতিশোধের আকাঙ্ক্ষাকে উসকে দেবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
ফিলিস্তিনিদের জোর করে বাস্তুচ্যুতি প্রত্যাখ্যান করেছে মিশর। এমনকি গাজা উপত্যকা পুনর্গঠনে আরব-ইসলামিক পরিকল্পনার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। পরিশেষে আব্দেলআত্তি ফিলিস্তিনি ঐক্য জোরদারির গুরুত্ব এবং ফিলিস্তিনি জনগণের আকাঙ্ক্ষা পূরণের ওপর জোর দেন—যার মাধ্যমে ১৯৬৭ সালের ৪ জুনের সীমান্ত বরাবর পূর্ব আল-কুদসকে রাজধানী করে একটি স্বাধীন ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা হবে।
কিন্তু ইসরায়েল যদি এভাবে বর্বরতা চালিয়েই যায়, তাহলে ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার স্বপ্নই থেকে যাবে।
সীমান্তে মিশরীয় সৈন্য জড়ো হওয়া নিয়ে সপ্তাহের শুরুতে ইসরায়েলি গণমাধ্যমে দাবি করা হয়েছে, মিশর গাজার সীমান্তবর্তী উত্তর সিনাইতে সেনা উপস্থিতি বৃদ্ধি করেছে। শুধু তাই নয়, বন্দর এবং বিমানঘাঁটিতেও নতুন নতুন অবকাঠামো তৈরি করেছে দেশটি।
বৃহস্পতিবার বিষয়টি নিয়ে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী মিশরকে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন—মিশরকে ১৯৭৯ সালের ক্যাম্প ডেভিড চুক্তি লঙ্ঘন করতে দেবে না ইসরায়েল।
মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি স্থাপনে ১৯৭৯ সালের ২৬ মার্চ ঐতিহাসিক শান্তি চুক্তি করেছিল মিশর ও ইসরায়েল। যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় ওয়াশিংটনে সই হয়েছিল শান্তি চুক্তিটি।
ইমরান