
ছবি: সংগৃহীত।
দক্ষিণ সুদানের সব পাসপোর্টধারীর ভিসা বাতিল করছে যুক্তরাষ্ট্র এবং নতুন আগমনকারীদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হচ্ছে। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও জানিয়েছেন, দক্ষিণ সুদান যুক্তরাষ্ট্র থেকে বহিষ্কৃত নাগরিকদের ফিরিয়ে নিতে অস্বীকৃতি জানাচ্ছে। রোববার ওয়াশিংটন থেকে এ তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা এএফপি।
স্থানীয় সময় শনিবার এক বিবৃতিতে রুবিও জানান, মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর দক্ষিণ সুদানের পাসপোর্টধারীদের ভিসা বাতিল এবং নতুন ভিসা ইস্যু না করার পদক্ষেপ নিয়েছে।
এ পদক্ষেপটি এসেছে এমন এক সময়, যখন ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর প্রথমবার কোনো নির্দিষ্ট দেশের নাগরিকদের ওপর এমন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করলেন।
আফ্রিকার অন্যতম নবীন এবং দরিদ্র দেশ দক্ষিণ সুদান বর্তমানে রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। মার্কো রুবিও অভিযোগ করে বলেন, দক্ষিণ সুদানের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যুক্তরাষ্ট্রের সদ্ব্যবহার করছে। কোনো দেশ থেকে বহিষ্কৃত নাগরিকদের গ্রহণ করা তাদের দায়িত্ব, এবং দক্ষিণ সুদান সেই দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হচ্ছে।
তিনি আরও জানান, দক্ষিণ সুদান যদি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পূর্ণ সহযোগিতা করে, তবে ওয়াশিংটন এসব পদক্ষেপ পুনর্বিবেচনার জন্য প্রস্তুত থাকবে।
এএফপির মতে, এই সিদ্ধান্ত এমন সময়ে এলো, যখন আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা আশঙ্কা করছেন যে দেশটি আবারও ২০১৩–২০১৮ সালের ভয়াবহ গৃহযুদ্ধের পথে পা বাড়াতে পারে, যেখানে চার লাখ মানুষ প্রাণ হারিয়েছিল।
উল্লেখ্য, ট্রাম্পের পূর্বসূরি জো বাইডেনের প্রশাসন দক্ষিণ সুদানের নাগরিকদের ‘টেম্পোরারি প্রোটেক্টেড স্ট্যাটাস (টিপিএস)’ দিয়েছিল, যার মেয়াদ ছিল ২০২৫ সালের ৩ মে পর্যন্ত। যুদ্ধ, প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা অন্যান্য বিপর্যয়ের কারণে নিজ দেশে নিরাপদে ফিরতে না পারা বিদেশিদের জন্য এই স্ট্যাটাস দেওয়া হয়, যা তাদের নির্বাসন থেকে সুরক্ষা দেয়।
২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে মার্কিন হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগ জানায়, টিপিএস প্রোগ্রামের আওতায় যুক্তরাষ্ট্রে দক্ষিণ সুদানের ১৩৩ জন নাগরিক রয়েছেন এবং আরও ১৪০ জন আবেদন করার যোগ্য। তবে ট্রাম্প প্রশাসন টিপিএস বাতিলের প্রক্রিয়া শুরু করেছে। চলতি বছরের জানুয়ারিতে প্রায় ছয় লাখ ভেনেজুয়েলান নাগরিকের সুরক্ষা প্রত্যাহার করা হয়।
ট্রাম্প প্রশাসনের ফিরে আসার পর যুক্তরাষ্ট্র বিভিন্ন দেশের সঙ্গে তাদের নাগরিকদের প্রত্যাবাসন নিয়ে মতবিরোধে জড়িয়েছে। দক্ষিণ সুদান থেকে ক্রমবর্ধমান হারে আফ্রিকান অভিবাসনপ্রত্যাশীরা যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের চেষ্টা করায় দেশটির নাগরিকদের জন্য আলাদা করে কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, এসব অভিবাসী ইউরোপে বিপজ্জনক পথে পাড়ি না দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ সীমান্ত দিয়ে প্রবেশের চেষ্টা করছে।
সূত্র: এএফপি
সায়মা ইসলাম