
সংগৃহীত
দীর্ঘ ১৭ মাসের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ এবং গাজায় মানবতাবিরোধী হামলার পর, বিশ্বের বেশ কিছু প্রখ্যাত মুসলিম পণ্ডিত ইসরায়েলের বিরুদ্ধে "জিহাদ" ঘোষণা করেছেন। তারা মুসলিম দেশগুলোকে একত্রিত হয়ে গাজার পক্ষে যুদ্ধের মাধ্যমে ইসরায়েলের আক্রমণ থামানোর আহ্বান জানিয়েছেন। এই প্রেক্ষাপটে, ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন অফ মুসলিম স্কলার্স (IUMS) এর মহাসচিব আলি আল-ক্বারাদাগি এক গুরুত্বপূর্ণ ফতোয়া জারি করেছেন।
আলি আল-ক্বারাদাগি, যিনি মুসলিম বিশ্বের শীর্ষ ধর্মীয় নেতাদের মধ্যে অন্যতম, শুক্রবার বলেন, "মুসলিম দেশগুলোর উচিত অবিলম্বে গাজার জন্য সামরিক, অর্থনৈতিক এবং রাজনৈতিকভাবে হস্তক্ষেপ করা। গাজায় এই গণহত্যা এবং ব্যাপক ধ্বংসের বিরুদ্ধে মুসলিম বিশ্বকে ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।"
তিনি আরও উল্লেখ করেন, "আরব ও ইসলামিক দেশগুলোর পক্ষ থেকে গাজাকে সমর্থন না করা, যখন সেখানে ধ্বংসযজ্ঞ চলছে, এটি ইসলামী আইন অনুযায়ী একটি বড় অপরাধ। মুসলিম বিশ্বের শত্রু (ইসরায়েল) কে সহায়তা দেওয়া সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।" তার এই ফতোয়ায় তিনি আরও বলেন, "ইসরায়েলকে অস্ত্র বিক্রি, অথবা পণ্য পরিবহন সহজতর করা, সব কিছুই নিষিদ্ধ।"
ক্বারাদাগি একজন সম্মানিত ধর্মীয় নেতা, যিনি বিশ্বের ১.৭ বিলিয়ন সুন্নি মুসলিমদের মধ্যে ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করেছেন। তার দেয়া এই ফতোয়া মুসলিম সমাজে গভীর প্রভাব ফেলবে বলে মনে করা হচ্ছে। তিনি এবং তার সহকর্মী ১৪ জন প্রধান মুসলিম পণ্ডিত বিশ্বব্যাপী মুসলিম দেশগুলোকে আহ্বান জানিয়েছেন ইসরায়েলের সাথে তাদের শান্তি চুক্তি পর্যালোচনা করতে এবং গাজার পরিস্থিতি নিয়ে আরও কার্যকর ভূমিকা নিতে।
এছাড়া, তিনি বিশেষভাবে যুক্তরাষ্ট্রের মুসলিম জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন, যেন তারা প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ওপর চাপ প্রয়োগ করেন, যাতে তিনি তার নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী গাজার ওপর ইসরায়েলের আক্রমণ বন্ধ করেন এবং শান্তির জন্য উদ্যোগ নেন।
বর্তমানে, ইসরায়েল গাজায় হামলা অব্যাহত রেখেছে এবং এর ফলে হাজার হাজার মানুষ প্রাণ হারিয়েছে, এর মধ্যে অনেক শিশুও রয়েছে। স্থানীয় সূত্রে জানানো হয়েছে, গত শুক্রবার সকালে ইসরায়েলি বাহিনী আরও অন্তত ৩০ জনকে হত্যা করেছে। গাজার পরিস্থিতি দিন দিন ভয়াবহ হয়ে উঠছে এবং বহু ফিলিস্তিনি তাদের শেষ মুহূর্তের বার্তা বিশ্ববাসীর কাছে পাঠাচ্ছে, "আমরা নিশ্চিহ্ন হয়ে যাচ্ছি, আমাদের কণ্ঠস্বর শোনা হোক।"
ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ইতিমধ্যেই হামলা তীব্র করার পরিকল্পনা ঘোষণা করেছেন, যাতে হামাসকে আরও ছাড় দিতে বাধ্য করা যায়। এই পরিস্থিতিতে, মুসলিম পণ্ডিতরা গাজার পক্ষে তাদের অবস্থান স্পষ্ট করে জানিয়েছেন, এবং মুসলিম বিশ্বের বৃহত্তর ভূমিকার জন্য তাদের দাবি অব্যাহত রেখেছেন।
সূত্র:Middle East Eye
আফরোজা