
ছবি: সংগৃহীত।
শক্তিশালী সাত মাত্রার ভূমিকম্প মিয়ানমার এবং থাইল্যান্ডকে বিপর্যস্ত করে দিয়েছে। পুরনো সেতু ও বিভিন্ন স্থাপনা ভেঙে পড়েছে এবং জানালেও, হতাহতের সঠিক সংখ্যা এখনও জানা যায়নি।
ভূমিকম্পের সময় ও প্রভাব
এটি ২৮ মার্চ শুক্রবার দুপুর ১২:২১ মিনিটে মিয়ানমারে আঘাত হানে, যার উৎপত্তিস্থল ছিল মান্দালয়, মিয়ানমার, যা বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা থেকে ৫৯৭ কিলোমিটার দূরে। বাংলাদেশের চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন স্থানে ভূমিকম্পটি অনুভূত হয়েছে।
ভূমিকম্পটির একাধিক আফটারশকও অনুভূত হয়, যার মধ্যে একটি ৬.৪ মাত্রার ছিল। মিয়ানমারে রাজধানী নেইপিদুতে সড়কে বিশাল আকারের ফাটল দেখা গেছে, যার মধ্যে ২০ লেনের হাইওয়ে পর্যন্ত অন্তর্ভুক্ত।
মিয়ানমারে ক্ষয়ক্ষতি
মিয়ানমারের বাগো অঞ্চলে, জুমার নামাজ চলার সময় একটি মসজিদ আংশিকভাবে ভেঙে পড়ে, যার ফলে তিনজন নিহত হন। এছাড়া ৯১ বছরের পুরনো ব্রিটিশ আমলের সাগাইন সেতু ধ্বংস হয়েছে, যা মিয়ানমারের আভা সেতু নামে পরিচিত। এছাড়া নেইপিদু বিমানবন্দরের এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল টাওয়ারও ভেঙে পড়ে, যেখানে কর্মরত সকল কর্মকর্তারা নিহত হয়েছেন।
এছাড়া বৌদ্ধ মঠের অবকাঠামোও ধ্বংস হয়েছে, যেখানে শিশুসহ অন্তত পাঁচজন নিহত হয়েছেন। মিয়ানমারের বিভিন্ন শহর ও অঞ্চলে ভবন ভেঙে পড়েছে এবং বহু রাস্তাঘাট ধ্বংস হয়ে গেছে।
থাইল্যান্ডে প্রভাব
থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে, একটি নির্মাণাধীন ৩০ তলা ভবন ধ্বংস হয়ে গেছে। ভবনটিতে কর্মরত ৪৩ জন শ্রমিক নিখোঁজ রয়েছে বলে জানা গেছে। থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী পেতং তানসিনা ভূমিকম্পের পর জরুরি বৈঠক করতে তার নির্ধারিত সরকারি সফর স্থগিত করেছেন এবং জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছেন।
তথ্য সংগ্রহে প্রতিবন্ধকতা
মিয়ানমারে তথ্য সংগ্রহ করা কঠিন হয়ে পড়ায়, এখনও প্রমাণিতভাবে হতাহতের সঠিক সংখ্যা জানা যায়নি। দেশটির জান্তা সরকার প্রায় সব ধরনের গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রণ করে এবং ইন্টারনেট ব্যবহারের ওপর কঠোর বিধিনিষেধ রয়েছে।
ভূমিকম্পের ইতিহাস
মিয়ানমারে ভূমিকম্পের ঘটনা তুলনামূলকভাবে বেশি ঘটে থাকে, বিশেষ করে থাইল্যান্ডের তুলনায়। ১৯৩০ থেকে ১৯৫৬ সালের মধ্যে সাগাইং ফল্ট লাইনের আশপাশে সাত মাত্রার ছয়টি শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছিল। তবে থাইল্যান্ড ভূমিকম্পপ্রবণ এলাকা নয় এবং সেখানে যে ভূমিকম্পগুলি অনুভূত হয়, সেগুলি মূলত মিয়ানমার থেকে ছড়িয়ে পড়ে।
বাংলাদেশে এই ভূমিকম্পটি ৫.১ মাত্রায় অনুভূত হলেও, এখনও কোনো ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি।
নুসরাত