
ছবি: সংগৃহীত।
কানাডার প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কানাডার দীর্ঘদিনের সম্পর্ক শেষ হয়ে গেছে। বৃহস্পতিবার (২৭ মার্চ) মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর অটোয়ায় এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন বলে বিবিসির প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
কার্নি বলেন, "আমাদের অর্থনীতির গভীরতর সংহতকরণ, কঠোর নিরাপত্তা ও সামরিক সহযোগিতার ওপর ভিত্তি করে যে পুরনো সম্পর্ক ছিল, তা এখন আর নেই।"
সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরও বলেন, "মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্তের কারণে কানাডীয়দের অর্থনীতি সম্পর্কে নতুন করে ভাবতে হবে।"
প্রধানমন্ত্রী কার্নি জানান, "কানাডা প্রতিশোধমূলক শুল্ক আরোপ করবে, যা যুক্তরাষ্ট্রের ওপর সর্বোচ্চ প্রভাব ফেলবে।"
এর আগে, বুধবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা দেন যে, যুক্তরাষ্ট্রে আমদানি করা গাড়ি ও এর খুচরা যন্ত্রাংশের ওপর স্থায়ীভাবে ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হবে। হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, নতুন এই শুল্ক ২ এপ্রিল থেকে কার্যকর হবে, এবং পরদিন থেকেই গাড়ি আমদানিকারী ব্যবসাগুলোর ওপর চার্জ প্রযোজ্য হবে। যন্ত্রাংশের ওপর কর মে মাসে বা তার পরে কার্যকর হতে পারে।
লিবারেল পার্টির নেতা কার্নি ১৯৬৫ সালে স্বাক্ষরিত কানাডা-মার্কিন মোটরগাড়ি চুক্তিকে তার জীবদ্দশায় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বলে উল্লেখ করে বলেন, "নতুন শুল্কের মাধ্যমে এই চুক্তির কার্যকারিতা শেষ হয়ে গেল।"
তিনি আরও বলেন, "কানাডা তার অটোমোবাইল শিল্প টিকিয়ে রাখতে পারে যদি সরকার ও ব্যবসায়ীরা একসঙ্গে কাজ করে এই শিল্পকে পুনর্নির্মাণ করেন।"
কার্নি মনে করেন, কানাডাকে এমন একটি অর্থনীতি গড়ে তুলতে হবে, যা কানাডিয়ানদের নিয়ন্ত্রণে থাকবে এবং এতে অন্যান্য বাণিজ্য অংশীদারদের সঙ্গে সম্পর্ক পুনর্বিবেচনা করাও অন্তর্ভুক্ত থাকবে।
তিনি বলেন, "ভবিষ্যতে কানাডা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে শক্তিশালী বাণিজ্য সম্পর্ক বজায় রাখতে পারবে কি না, তা এখনও অনিশ্চিত।"
প্রধানমন্ত্রী কার্নি জানান, নতুন শুল্কের প্রেক্ষিতে তিনি আগামী মাসের সাধারণ নির্বাচনের প্রচারণার কৌশল পরিবর্তন করবেন।
উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্র ইতোমধ্যে সব ধরনের অ্যালুমিনিয়াম ও ইস্পাত আমদানির ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে। অন্যদিকে, কানাডা যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন পণ্যের ওপর প্রায় ৬০ বিলিয়ন কানাডিয়ান ডলার (৪২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার) শুল্ক আরোপ করেছে।
সূত্র: বিবিসি
সায়মা ইসলাম