ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ৩০ মার্চ ২০২৫, ১৬ চৈত্র ১৪৩১

গাজায় হামাসের মুখপাত্রকে হত্যা, সিরিয়ার লাতাকিয়া শহরে বোমা হামলা, নতুনভাবে বিপর্যস্ত গাজা

প্রকাশিত: ১৫:১০, ২৭ মার্চ ২০২৫; আপডেট: ১৫:১১, ২৭ মার্চ ২০২৫

গাজায় হামাসের মুখপাত্রকে হত্যা, সিরিয়ার লাতাকিয়া শহরে বোমা হামলা, নতুনভাবে বিপর্যস্ত গাজা

ছবিঃ সংগৃহীত

ইসরায়েলি বাহিনী গত রাতে গাজা উপত্যকায় হামলা চালিয়ে হামাসের মুখপাত্র আবদুল-লাতিফ আল-কানৌয়া সহ ২০ জনের বেশি ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে। জাতিসংঘের রিপোর্ট অনুযায়ী, ইসরায়েলের পুনরায় হামলা শুরু হওয়ার পর গত এক সপ্তাহে গাজার ১৪২,০০০ এরও বেশি মানুষ গৃহহীন হয়েছে।

গাজায় সাংবাদিকদের লক্ষ্য করা হচ্ছে: একটি নতুন তদন্ত
আন্তর্জাতিক সাংবাদিকদের নেটওয়ার্ক 'ফরবিডেন স্টোরিজ' গাজার সাংবাদিকদের উপর ইসরায়েলের হামলা নিয়ে একটি নতুন তদন্ত প্রকাশ করেছে। এতে বলা হয়েছে, ইসরায়েলি বাহিনী অনেক সাংবাদিককে লক্ষ্য করে, বিশেষ করে যারা ড্রোন ব্যবহার করছেন।

গবেষণায় তিনজন প্রাক্তন ইসরায়েলি সৈন্য সাক্ষাৎকার দিয়েছেন, যারা গত বছর গাজা বা তার আশেপাশে মোতায়েন ছিলেন। তারা জানান, ইসরায়েলি বাহিনী সাধারণত বেসামরিক মানুষ এবং জঙ্গিদের মধ্যে তফাৎ করে না, এবং এই পরিস্থিতি সাংবাদিকদের জন্যও বিপজ্জনক হয়ে দাঁড়িয়েছে।

গাজার প্রতিবাদ: যুদ্ধের ক্লান্তি
গাজার সাম্প্রতিক প্রতিবাদগুলি যুদ্ধের দীর্ঘস্থায়ীত্ব এবং হাজার হাজার মানুষের বারবার বাস্তুচ্যুতি থেকে মানুষের ক্লান্তির পরিচায়ক। কাতার বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক লুসিয়ানো জাকারা আল জাজিরাকে বলেছেন, "প্রতিবাদকারীরা বলছে: আমরা ইসরায়েলকে বাধা দিতে পারি না, তবে হামাসকে আমরা আরও কিছু করার জন্য বলতে পারি। পরিস্থিতি অস্থিতিশীল হয়ে গেছে।"

এছাড়াও, ইসরায়েলেও সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ হচ্ছে, তবে প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর সরকার এখনও শক্তিশালী বলে মনে হচ্ছে।

হামাসের মুখপাত্রের মৃত্যু
গাজার উত্তরে জাবালিয়া শহরে একটি সন্ত্রাসী হামলায় হামাসের মুখপাত্র আবদুল-লাতিফ আল-কানৌয়া নিহত হয়েছেন। হামাস জানিয়েছে, "আমাদের নেতাদের এবং মুখপাত্রদের লক্ষ্য করে হামলা চালানো ইসরায়েলের উদ্দেশ্য, কিন্তু এই ধরনের হত্যাকাণ্ড আমাদের আত্মবিশ্বাস কমাবে না, বরং আমাদের প্রতিরোধের ইচ্ছাকে আরও শক্তিশালী করবে।"

গাজায় আরও একবার পালাতে বাধ্য করা হচ্ছে পরিবারগুলো
গাজার কেন্দ্রীয় শহর দেইর এল-বালাহ থেকে রিপোর্ট করা হয়েছে যে, ইসরায়েলি বাহিনী একের পর এক গাজার আবাসিক এলাকা এবং শিবিরে বিমান হামলা চালাচ্ছে। বহু পরিবার নতুন করে গাজার শহর এলাকাগুলি ছেড়ে দক্ষিণে পালানোর নির্দেশ পেয়েছে, তবে পরিবারগুলো বলছে যে তারা কোথায় যাবে তা জানে না, কারণ দক্ষিণেও হামলা চলছে।

লেবাননের উপর ইসরায়েলের ড্রোন হামলা
ইসরায়েল লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলীয় ইয়োহমোর আল-শাকিফ শহরের একটি গাড়িতে ড্রোন হামলা চালিয়ে কমপক্ষে তিনজনকে হত্যা করেছে। স্থানীয় সংবাদ মাধ্যম আল-মায়াদিন জানিয়েছে, হামলাটি হিজবুল্লাহ জঙ্গিদের বিরুদ্ধে পরিচালিত হয়েছে, যদিও হামলার প্রকৃতি সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু জানানো হয়নি।

পশ্চিম তীরে ব্যাপক ধরপাকড়
ইসরায়েলি বাহিনী পশ্চিম তীরে তল্লাশি ও ধরপাকড় চালিয়ে অন্তত ১২ জন ফিলিস্তিনিকে গ্রেপ্তার করেছে। পশ্চিম তীরের তুলকারেম ও রামাল্লার আশেপাশের বিভিন্ন এলাকায় এই অভিযান চালানো হয়েছে, এবং স্থানীয় দোকানেও হামলা করা হয়েছে।

এই পরিস্থিতি একদিকে যেমন ফিলিস্তিনিদের জন্য গভীর বিপর্যয়ের সৃষ্টি করেছে, তেমনি ইসরায়েলের জন্যও এর রাজনৈতিক পরিণতি হতে পারে, কারণ দেশটির অভ্যন্তরে সরকারবিরোধী বিক্ষোভের চাপ বাড়ছে।

তথ্যসূত্রঃ https://www.aljazeera.com/news/liveblog/2025/3/27/live-israels-relentless-bombardment-kills-26-palestinians-in-gaza

মারিয়া

×