ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৬ মার্চ ২০২৫, ১২ চৈত্র ১৪৩১

৭০ গাজাবাসীকে ইউরোপে পাঠিয়ে দিয়েছে ইসরাইল

নিজ ভূমি থেকে ফের উচ্ছেদ হচ্ছেন ফিলিস্তিনিরা

জনকণ্ঠ ডেস্ক

প্রকাশিত: ২৩:৪৭, ২৪ মার্চ ২০২৫

নিজ ভূমি থেকে ফের উচ্ছেদ হচ্ছেন ফিলিস্তিনিরা

নিজ ভূমি থেকে ফের উচ্ছেদ হচ্ছেন ফিলিস্তিনিরা

নিজ ভূমি থেকে ফের উচ্ছেদ হচ্ছেন ফিলিস্তিনিরা। গাজা উপত্যকা থেকে ইউরোপে স্থানান্তর পরিকল্পনার আওতায় প্রথম দফায় ৭০ ফিলিস্তিনিকে সরিয়ে দিয়েছে দখলদার ইসরাইল। গত ২০ মার্চ অত্যন্ত গোপনীয়তার সঙ্গে ইসরাইলের র‌্যামন বিমানবন্দর থেকে রোমানিয়ার একটি সামরিক বিমানে করে তাদের ইউরোপের উদ্দেশে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। সোমবার এ সংক্রান্ত খবর প্রথমবারের মতো প্রকাশ্যে আসে। খবর জেএনএস অনলাইনের। 
তেল আবিবের দাবি, গাজা ছেড়ে অন্যত্র যেতে ইচ্ছুক ফিলিস্তিনিদের স্থানান্তরের পরিকল্পনা আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়েছে। তবে জোরপূর্বক কাউকে পাঠানো হয়নি। ইসরাইলি কর্তৃপক্ষ জানায়, তারা তাদের অভিবাসন নীতির অংশ হিসেবে গাজার ফিলিস্তিনিদের অন্য দেশে স্থানান্তরের প্রক্রিয়ায় সহায়তা করছে। তবে সমালোচকদের দাবি, এটি গাজার জনসংখ্যাকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত করার একটি প্রচেষ্টা। ইসরাইলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরাইল কাটজ বলেন, আমরা মার্কিন প্রেসিডেন্টের পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য সর্বাত্মকভাবে কাজ করছি এবং যে কোনো গাজাবাসীকে তৃতীয় দেশে যেতে চাইলে সে সুযোগ দেব।
তিনি আরও বলেন, ২০২০ সালে ডোনাল্ড ট্রাম্পের আমলে গৃহীত এক পরিকল্পনার কথা উল্লেখ করেন, যেখানে গাজার জনসংখ্যা স্থানান্তরের মাধ্যমে অর্থনৈতিক উন্নয়নকে উৎসাহিত করার কথা বলা হয়েছিল। ইসরাইলের নিরাপত্তা মন্ত্রিসভা গাজার ফিলিস্তিনিদের তৃতীয় দেশে পাঠানোর জন্য একটি বিশেষ অধিদপ্তর গঠনের অনুমোদন দিয়েছে।

এটি কাটজের নেতৃত্বে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সমন্বিতভাবে পরিচালিত হবে। ইসরাইলি অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোট্রিচ প্রতিদিন ১০ হাজার গাজাবাসীকে স্থানান্তরের উচ্চাভিলাষী পরিকল্পনার প্রস্তাব দেন। তবে কোনো তৃতীয় দেশ এখন পর্যন্ত বড় সংখ্যক শরণার্থী গ্রহণের বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে সম্মতি দেয়নি।
সমালোচকরা সতর্ক করেছেন যে, এই কর্মসূচি গাজার জনসংখ্যাকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুতির দিকে ঠেলে দিতে পারে, যা আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন হতে পারে। তবে ইসরাইলি সরকার দাবি করছে, এটি সম্পূর্ণ স্বেচ্ছাসেবী অভিবাসন কর্মসূচি, যেখানে গাজাবাসীদের ‘নিরাপদ ও তত্ত্বাবধানে’ অন্য দেশে যাওয়ার সুযোগ দেওয়া হচ্ছে।

ইসরাইলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে পরিচালিত এই কর্মসূচি আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর সঙ্গে সমন্বয় করে গাজা থেকে স্থানান্তরের অবকাঠামো তত্ত্বাবধান করবে। ভূমি, সমুদ্র ও আকাশপথে স্থানান্তরের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে এবং শীঘ্রই এই কার্যক্রম পরিচালনার জন্য একজন বিশেষ কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া হবে।
এ সম্পর্কে বিশ্লেষকরা মনে করছেন, গাজায় নতুন করে সামরিক অভিযান এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের চাপের মধ্যে ইসরাইল তাদের অভিবাসন পরিকল্পনা আরও ত্বরান্বিত করছে। তবে ফিলিস্তিনিরা এটিকে তাদের মাতৃভূমি থেকে বিতাড়িত করার ষড়যন্ত্র হিসেবে দেখছেন।

×