
ছবি: সংগৃহীত।
একসময় বিশ্বের অন্যতম পরাশক্তি ছিল ইরান। আগের মতো সেই প্রভাব না থাকলেও দেশটির সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনির নেতৃত্বে এখনো মার্কিন ও ইসরায়েলি আধিপত্যের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে ইরান।
বিশেষ করে, ইসরায়েল যখন গাজার নিরীহ মানুষের ওপর নির্বিচারে হামলা চালাচ্ছে, তখন একমাত্র ইরানই দৃঢ়ভাবে মজলুমদের পাশে দাঁড়িয়েছে। তেলআবিবের বিরুদ্ধে আরও কঠোর প্রতিক্রিয়া জানাতে এবং প্রতিরোধ গড়ে তুলতে ইরান নতুন সামরিক পরিকল্পনা করছে। মধ্যপ্রাচ্যের এই দেশটির পাশে শক্ত অবস্থানে রয়েছে বিশ্বের দুই পরাশক্তি—চীন ও রাশিয়া।
হোয়াইট হাউসে ফিরে আসার পর থেকেই ইরানকে দমনে সক্রিয় হয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি ইরানের পরমাণু কর্মসূচি সীমিত করতে নানা রকম চাপ প্রয়োগ করে চলেছেন। ইসরায়েলের সঙ্গে মিলে তেহরানকে একের পর এক হুমকি দিয়ে যাচ্ছেন তিনি এবং ইতোমধ্যে ইরানের বিরুদ্ধে নতুন নিষেধাজ্ঞাও জারি করেছেন। ট্রাম্প স্পষ্টভাবে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, তেহেরান থেকে যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থের ওপর কোনো হামলা হলে তার কঠিন পরিণতি ভোগ করতে হবে ইরানকে।
এর আগে কোনো মার্কিন প্রেসিডেন্ট এতটা প্রকাশ্যে ইরানকে হুমকি দেওয়ার সাহস দেখাননি, তবে ট্রাম্প এখন এই সংঘাতে ঝুঁকি বাড়িয়ে তুলছেন। সিরিয়া, লেবানন ও গাজায় ইরানের অবস্থান তুলনামূলকভাবে দুর্বল হয়ে পড়ায় মার্কিন প্রশাসন সেই সুযোগ কাজে লাগানোর চেষ্টা করছে।
তবে চীন ও রাশিয়ার সমর্থন পেয়ে ইরানও শক্ত অবস্থান বজায় রেখেছে। ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনি স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, "ইরান কখনোই সংঘাত শুরু করে না, তবে কেউ সংঘাত শুরু করলে তার কঠোর জবাব দেওয়া হবে।" বিশেষজ্ঞদের মতে, যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল ইরানকে যে কৌশলগত চাপের মুখে ফেলতে চাইছে, তা দীর্ঘস্থায়ী হবে না।
ইতোমধ্যে লেবাননও ইসরায়েলের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে। লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোও ইসরায়েলি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ চালিয়ে যাচ্ছে। ইরানের মিত্ররা একের পর এক ইসরায়েলবিরোধী প্রতিরোধ গড়ে তুলছে, যা মধ্যপ্রাচ্যে আরও অস্থিরতা তৈরি করছে।
গাজায় দ্বিতীয় দফায় গণহত্যা চালাতে ইসরায়েলকে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছেন ট্রাম্প, যা মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা আরও বাড়িয়ে তুলছে। অন্যদিকে, ইরান তার অবস্থানকে আরও সুসংহত করতে চায়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিশ্বস্ত মিত্রদের হারিয়ে ইরান এখন আহত বাঘের মতো, তবে একবার নিজেকে শৃঙ্খলমুক্ত করতে পারলে দেশটি অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠবে।
এই পরিস্থিতিতে ইরানের পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে ওয়াশিংটন ও তেলআবিব উদ্বেগে রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল চায় যে কোনো মূল্যে ইরানকে পরমাণু অস্ত্র তৈরি থেকে বিরত রাখতে। তবে ইরান ইতোমধ্যে চীন ও রাশিয়ার সমর্থন পেয়ে সামরিক সক্ষমতা বাড়িয়ে তুলেছে। রাশিয়া ইরানকে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির Su-35 যুদ্ধবিমান সরবরাহ করছে এবং দুই মাসব্যাপী সামরিক মহড়ায় অংশ নিয়েছে।
এছাড়া, ইরানের বৃহৎ সামরিক মহড়ায়ও মস্কো ও বেইজিং অংশ নিয়েছে। ফলে স্থল ও আকাশপথের পাশাপাশি নৌপথেও ইসরায়েলের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে প্রস্তুত ইরান।
সূত্র: https://www.youtube.com/watch?v=0LZawvGiWqA
সায়মা ইসলাম