
ছবি:সংগৃহীত
ইরান যেন ফিনিক্স পাখির মতো, হাজার হুমকি সত্ত্বেও দৃঢ়ভাবে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে। পশ্চিমাদের শক্তি কোনভাবেই ইরানকে দমাতে পারছে না। ফিলিস্তিনে যখন ইসরাইল আবারও বর্বরতা চালিয়েছে, তখন আরব বিশ্বের অনেকের কাছ থেকে নিন্দা জানানোর বিবেকটুকুও জাগেনি। ঠিক সেই মুহূর্তে প্রথম প্রতিরোধটা এসেছে ইরানের বলয়ের এক শক্তিশালী অংশ থেকে। ইয়েমেনের আন্দোলন তো ইরানি আদর্শেই উজ্জীবিত, যাদের মিসাইলে কেঁপে উঠেছে ইসরাইল। ইয়েমেনের পাশাপাশি গাজা এবং লেবানন থেকেও ইসরাইলের দিকে ছুটে আসছে মিসাইলের ঝড়।
ইয়েমেনের প্রতিরোধ গোষ্ঠীর ব্যাপারে ভীত-সন্ত্রস্ত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরানকে হুশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, এই সংগঠনের যেকোনো হামলার জন্য ইরান দায়ী থাকবে। ইরানের উপর চাপ বাড়ানোর পদক্ষেপের অংশ হিসেবে এই হুশিয়ারি দিয়েছেন ট্রাম্প। তিনি ক্রুথ সোশ্যালে লিখেছিলেন, "কেউ বোকা হবেন না, ইয়েমেনের শত শত আক্রমণ ইরান থেকে উদ্ভূত, আর তারা ইরানেরই তৈরি।" যদিও ইরান বলেছে, ইয়েমেনের প্রতিরোধ গোষ্ঠী নিজেদের স্বাধীন সিদ্ধান্তে আঘাত হানছে।
ইয়েমেন ছাড়াও, ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন এবং লেবানন থেকেও ইসরাইলের দিকে ছুটে গেছে মিসাইলের বৃষ্টি। চারদিকে ইসরাইলকে ঘিরে ধরেছে ইরানের প্রক্সি বাহিনী। ফিলিস্তিন যে একা নয়, সেটি বারবার প্রমাণ করে দিচ্ছে "এক্সিস অফ রেজিস্টেন্স"। সবচেয়ে বেশি আঘাত হানছে ইয়েমেনের প্রতিরোধ গোষ্ঠী, যারা ৪৮ ঘন্টায় অন্তত তিনবার ইসরাইলে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে। তৃতীয় দফায় তারা প্যালেস্টাইন টু হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে হামলা চালিয়েছে, যা ইসরাইলের তেল আবিবের কাছের বেনগুড়িয়ন বিমানবন্দরে আঘাত হেনেছে।
শুক্রবার রাতে ইসরাইলি সেনাবাহিনী জানায়, তারা ইয়েমেন থেকে ছোড়া একটি ক্ষেপণাস্ত্র ভূপাতিত করেছে, যা ইসরাইলি ভূখণ্ডে প্রবেশের আগেই ধ্বংস করা হয়। শুধু ইসরাইল নয়, লোহিত সাগরে মোতায়েন মার্কিন বিমানবাহী রণতরী ইউএসএস হ্যারি এস ট্রুম্যানের দিকেও কয়েক দফায় হামলা চালিয়েছে ইয়েমেনের প্রতিরোধ গোষ্ঠী। ফিলিস্তিনে ইসরাইলের আগ্রাসন বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত সাগরে তান্ডব চলবে বলেও হুশিয়ারি দিয়েছে তারা।
এরই মধ্যে গাজা আগ্রাসনের জবাবে ইসরাইলের বাণিজ্যিক কেন্দ্র তেল আবিবে রকেট হামলা চালিয়েছে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন। শনিবার লেবাননের প্রতিরোধ গোষ্ঠীও ইসরাইলের দিকে পাঁচটি রকেট ছুড়েছে এবং রকেট হামলার জবাব দেয়ার হুশিয়ারি উচ্চারণ করেছে। ইসরাইল এই হুশিয়ারি শুনে উদ্বিগ্ন। লেবাননের প্রধানমন্ত্রী নাওয়াফ সালাম বিবৃতি দিয়ে বলেছেন, লেবানন নতুন এক যুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে আছে। দেশের দক্ষিণে সামরিক নিরাপত্তা বলয় গড়ে তুলতে ব্যবস্থা গ্রহণের উপর জোর দিয়েছেন তিনি।
আঁখি