
ছবি:সংগৃহীত
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিদেশ সফর ও এর অর্থনৈতিক প্রভাব নিয়ে সম্প্রতি রাজনৈতিক মহলে তীব্র বিতর্ক তৈরি হয়েছে। গত তিন বছরে প্রধানমন্ত্রী মোদী ২৮টি দেশ সফর করেছেন, যার মোট খরচ হয়েছে ২৫৮ কোটি ৯৭ লক্ষ ৮ হাজার ৪ টাকা। বিরোধীদের চাপের মুখে সংসদে এই তথ্য জানিয়েছেন বিদেশ মন্ত্রকের রাষ্ট্রমন্ত্রী পবিত্র মার্গারিটা। এই খরচের পরিমাণ নিয়ে বিরোধী দলগুলি প্রশ্ন তুলেছে এবং জনগণের করের টাকা এইভাবে ব্যয়ের ন্যায্যতা নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে।
বিরোধীদের যুক্তি হলো, দেশে কোটি কোটি মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করছেন, বেকারত্বের হার উদ্বেগজনক হারে বেড়ে চলেছে। এমন পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রীর বিদেশ সফরে এত বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয়ের যৌক্তিকতা নিয়ে তারা প্রশ্ন তুলেছেন। তাদের মতে, জনগণের করের টাকা এইভাবে অপচয় করার কোনো অর্থ হয় না।
বিদেশ মন্ত্রকের রাষ্ট্রমন্ত্রী পবিত্র মার্গারিটা সংসদে জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রীর বিদেশ সফরে থাকা ও অন্যান্য খরচের মধ্যে শুধুমাত্র থাকার জন্য ব্যয় হয়েছে ১০০ কোটি ২২ লক্ষ ২২ হাজার ৭২৬ টাকা। এছাড়াও, বিবিধ খাতে ব্যয় হয়েছে ৭৫ কোটি ৭০ লক্ষ ৫০ হাজার ৭২৬ টাকা। মোদীর সফর করা দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে আমেরিকা, জার্মানি, ফ্রান্স, রাশিয়া, ইউক্রেন, ইতালি, পোল্যান্ড, নেপাল, ডেনমার্ক, জাপান, অস্ট্রেলিয়া, মিশর, গ্রিস এবং ব্রাজিলের মতো ২৮টি দেশ।
মার্গারিটা আরও উল্লেখ করেছেন যে, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের সময়ে বিদেশ সফরে বেশি খরচ হতো। উদাহরণস্বরূপ, ২০১১ সালে মনমোহন সিংয়ের আমেরিকা সফরে খরচ হয়েছিল ১০ কোটি ৭৪ লক্ষ টাকা, যেখানে মোদীর দু’বার আমেরিকা সফরে খরচ হয়েছে ৩৮ কোটি ২৩ লক্ষ ৪৪ হাজার ৮৫৭ টাকা। এই তুলনামূলক তথ্য দিয়ে তিনি বোঝানোর চেষ্টা করেছেন যে মোদীর বিদেশ সফর তুলনামূলকভাবে কম খরচে হয়েছে।
তবে বিরোধী দলগুলি এই যুক্তি মানতে নারাজ। তাদের মতে, দেশের অভ্যন্তরীণ সমস্যাগুলো সমাধানের দিকে মনোযোগ দেওয়া উচিত ছিল, বিশেষ করে দারিদ্র্য, বেকারত্ব এবং অর্থনৈতিক বৈষম্য দূর করার দিকে। প্রধানমন্ত্রীর বিদেশ সফর নিয়ে এই বিতর্ক ভারতের রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে এবং জনগণের করের টাকা কীভাবে ব্যয় করা হচ্ছে তা নিয়ে নতুন করে আলোচনার সূত্রপাত করেছে।
আঁখি