ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২২ মার্চ ২০২৫, ৮ চৈত্র ১৪৩১

যুক্তরাষ্ট্র ইসরাইলের এজেন্ট নয়, যুক্তরাষ্ট্র নিজেদের স্বার্থেই সিদ্ধান্ত নেয়-মার্কিন দূত অ্যাডাম বোহলার

প্রকাশিত: ০৮:৩৯, ২২ মার্চ ২০২৫; আপডেট: ০৯:১১, ২২ মার্চ ২০২৫

যুক্তরাষ্ট্র ইসরাইলের এজেন্ট নয়, যুক্তরাষ্ট্র  নিজেদের স্বার্থেই সিদ্ধান্ত নেয়-মার্কিন দূত অ্যাডাম বোহলার

ছবি:সংগৃহীত

মধ্যপ্রাচ্যের রাজনীতি একটি উত্তপ্ত দাবানলের মতো, যার আগুন মুহূর্তেই বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়তে পারে। সম্প্রতি এই অঞ্চলের রাজনীতিতে নতুন মোড় নিয়েছে, বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইলের মধ্যে দীর্ঘদিনের মিত্রতার সম্পর্কে টানাপোড়েন দেখা দিয়েছে। এই উত্তেজনার মূল কারণ হলো যুক্তরাষ্ট্রের গোপনে হামাসের সাথে সরাসরি আলোচনায় বসা, যা ইসরাইলের জন্য অপ্রত্যাশিত এবং অগ্রহণযোগ্য।

 

 

দীর্ঘদিন ধরে যুক্তরাষ্ট্র ইসরাইলের স্বার্থ রক্ষায় কাজ করে আসলেও, এবার তারা ইসরাইলের আপত্তি উপেক্ষা করে হামাসের সাথে আলোচনায় বসেছে। সম্প্রতি কাতারের দোহায় অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে মার্কিন দূত অ্যাডাম বোহলার হামাসের প্রতিনিধিদের সাথে কথা বলেন। এই বৈঠকের মূল লক্ষ্য ছিল একজন জীবিত মার্কিন সেনা ও চারটি মৃতদেহের মুক্তি নিশ্চিত করা। তবে হামাস স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে যে তারা বিনিময়ে শত শত ফিলিস্তিনি বন্দির মুক্তি চায়।

 

 

এই বৈঠকের খবর ফাঁস হওয়ার পর ইসরাইলি গণমাধ্যমে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা যায়। ইসরাইলের অনেক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা হামাসের সাথে যে কোনো আলোচনার বিরোধিতা করেছেন। তবে মার্কিন দূত অ্যাডাম বোহলার কঠোর জবাব দিয়ে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র ইসরাইলের এজেন্ট নয়, বরং তারা নিজেদের স্বার্থেই সিদ্ধান্ত নেয় এবং ইসরাইলের অনুমতি নেওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই। এই মন্তব্য ইসরাইলি প্রশাসনে হতাশা ও ক্ষোভ সৃষ্টি করেছে।

 

টাইমস অফ ইসরাইলের প্রতিবেদন অনুযায়ী, মার্কিন দূতের বক্তব্যে অনেক ইসরাইলি কর্মকর্তা বিস্মিত হয়েছেন। কারণ দীর্ঘদিন ধরে ইসরাইল যুক্তরাষ্ট্রকে তার সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ মিত্র হিসেবে দেখে আসছে। অন্যদিকে, হামাসের সাথে এই আলোচনার ফলে গাজায় যুদ্ধ পরিস্থিতিতে নতুন মোড় আসতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। মার্কিন প্রশাসনের কর্মকর্তারা বিশ্বাস করেন যে হামাস শেষ পর্যন্ত অস্ত্র ও রাজনৈতিক ক্ষমতা ত্যাগ করবে এবং জিম্মিদের মুক্তির বিষয়ে চুক্তি করবে।

 

 

তবে ইসরাইল হামাসের সাথে যে কোনো সমঝোতাকে দুর্বলতার লক্ষণ হিসেবে দেখছে এবং আলোচনার বিপক্ষে শক্ত অবস্থান নিয়েছে। এই উত্তেজনার মধ্যেই কাতার ও মিশরের মধ্যস্থতায় হামাস ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে পরোক্ষ আলোচনা চলছে। যদিও অ্যাডাম বোহলার কোনো নির্দিষ্ট তথ্য প্রকাশ করতে রাজি হননি, তবে তিনি ইসরাইলি জনসাধারণকে আশ্বাস দিয়েছেন যে যুক্তরাষ্ট্র কখনোই তাদের ভুলে যায়নি।

এই পরিস্থিতি মধ্যপ্রাচ্যের রাজনীতিতে নতুন উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে এবং যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইলের মধ্যে সম্পর্কের ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। গাজা সংকটের সমাধান এবং আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নজর এখন এই আলোচনার দিকে।

আঁখি

×