ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২২ মার্চ ২০২৫, ৮ চৈত্র ১৪৩১

মার্কিন কংগ্রেসনাল অ্যাওয়ার্ড পেলেন ডাঃ লুডমিলা সরদার

প্রকাশিত: ০৫:২০, ২২ মার্চ ২০২৫; আপডেট: ০৫:৩৬, ২২ মার্চ ২০২৫

মার্কিন কংগ্রেসনাল অ্যাওয়ার্ড পেলেন ডাঃ লুডমিলা সরদার

ছবিঃ সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রের সেন্ট্রাল ফ্লোরিডার স্বাস্থ্যসেবা এবং সমাজ সেবায় অসামান্য অবদানের জন্য মর্যাদাপূর্ণ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসনাল অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন ইন্টারনাল মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডাঃ লুডমিলা সরদার। 

বিশেষ নারী ইতিহাস মাস উপলক্ষে বিভিন্ন খাতে গরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য ১০ জন নারীকে এই কংগ্রেসনাল অ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হয়। বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সাবেক বৈদেশিক উপদেষ্টা জাহিদ এফ সরদার সাদীর সহধর্মিণী ডাঃ লুডমিলা সরদার এর হাতে এই অ্যাওয়ার্ড তুলে দেন মার্কিন কংগ্রেসম্যান ড্যারেন সোটো।

স্বাস্থ্যসেবা, ব্যবসা, প্রকৌশল এবং সামরিক পরিসেবা সহ বিভিন্ন খাতে নারীদের গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখার স্বীকৃতি স্বরুপ এ অ্যাওয়ার্ড এর মাধ্যমে তাদের সম্মানিত করা হয়। অনুষ্ঠানে কংগ্রেসম্যান সোটো বলেন, "আপনাদের অর্জন এবং নাম আমেরিকান ইতিহাসের অংশ হয়ে থাকবে।”

ডাঃ লুডমিলা সরদার বর্তমানে ল্যাকল্যান্ড রিজিওনাল হেলথ-এ ইন্টারনাল মেডিসিন বিভাগের রেসিডেন্ট ফিজিশিয়ান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। বিশেষ করে অপ্রাপ্ত জনগোষ্ঠীর জন্য স্বাস্থ্যসেবা সহজলভ্য করার ক্ষেত্রে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছেন। ক্যান্সার চিকিৎসার আর্থিক প্রতিবন্ধকতা দূরীকরণে তাঁর প্রচেষ্টা অসংখ্য পরিবারের জীবনে আশার আলো জ্বালিয়েছেন।

এইচসিএ ফ্লোরিডা ওসিওলা হাসপাতাল, অ্যাডভেন্টহেলথ ক্যান্সার ইনস্টিটিউট, উইন্টার হ্যাভেন হাসপাতাল এবং লেকল্যান্ড রিজিওনাল হেলথে তার কাজের মাধ্যমে চিকিৎসা গবেষণা এবং সমাজ সেবা অবদানের জন্য তিনি এই স্বীকৃতি অর্জন করেছেন। 

এছাড়াও, তিনি অসহায় ও বঞ্চিত মানুষের জন্য স্বাস্থ্যসেবা সম্প্রসারণে একাধিক উদ্যোগের নেতৃত্ব দিয়েছেন। ওসিওলা ক্যান্সার সেন্টার ও কিসিমি মহিলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে স্বেচ্ছাসেবী চিকিৎসক হিসেবে কাজ করে যাচ্ছেন।

তিনি জনপ্রিয় বই “ইন্টার্ন মেসট্রি: এ রোডম্যাপ ফ্রম মেড স্কুল টু পিজিওয়াই-১ ইন্টারনাল মেডিসিন এক্সিলেন্স”-এর সহ-লেখক, যা মেডিকেল শিক্ষার্থীদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ গাইড।

ডাঃ লুডমিলা সরদার আমেরিকান কলেজ অব ফিজিশিয়ানস-এর সদস্য এবং এসিপি-এর শিক্ষার্থীদের গবেষণা উপস্থাপনার বিচারক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়াও তিনি হোলিস ক্যান্সার সেন্টার প্রমিজ রান ও ডিজনি ম্যারাথনস-এর মতো বড় ইভেন্টে স্বেচ্ছাসেবী চিকিৎসক হিসেবে অংশগ্রহণ করেন।

একজন কৃতী চিকিৎসক ও গবেষক হওয়ার পাশাপাশি তিনি দুই সন্তানের মা এবং একজন পরিপূর্ণ গৃহিণী, যিনি কর্মজীবন ও পারিবারিক জীবন দক্ষতার সঙ্গে সামলাচ্ছেন।

সম্মাননা পাওয়ার পর ডাঃ লুডমিলা সরদার বলেন, "মার্কিন কংগ্রেস থেকে এই স্বীকৃতি পেয়ে আমি গভীরভাবে সম্মানিত। এই স্বীকৃতি শুধু আমার একার নয়, বরং তাদেরও যারা জনসেবায় নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। নারী ইতিহাস মাস আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় নারীদের শক্তি, সহনশীলতা ও সমাজে তাঁদের অবদান। আমি আজ গর্বিত ঐ সকল মানুষের জন্য যাদের কারণে আজ আমি এখানে দাঁড়িয়ে।”

কংগ্রেসম্যান সোটো তাঁর প্রশংসা করে বলেন, "সেন্ট্রাল ফ্লোরিডার মানুষের জীবনমান উন্নয়নে আপনার অবদান অনন্য। চিকিৎসা ক্ষেত্রে আপনার পরামর্শ এবং স্বেচ্ছাসেবী কাজের জন্য আপনাকে আমরা কৃতজ্ঞচিত্তে সম্মান জানাই।"

ডাঃ লুডমিলা সরদার বিশ্বসেরা জনস হপকিন্স ইউনিভার্সিটি স্কুল অব মেডিসিন ও স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটি স্কুল অব মেডিসিনসহ বেশ কয়েকটি স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠানে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করেছেন।

যুক্তরাষ্ট্র কংগ্রেস কর্তৃক এ স্বীকৃতি শুধু ডাঃ লুডমিলা সরদারের ব্যক্তিগত অর্জনই নয়, বরং বিশ্বমঞ্চে বাংলাদেশি পরিবারের সাথে সম্পর্কিত আমেরিকানদের ক্রমবর্ধমান ভূমিকারও প্রতিফলন।

ইমরান

×