ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২০ মার্চ ২০২৫, ৬ চৈত্র ১৪৩১

গাজায় স্থল অভিযান চালাচ্ছে ইসরায়েল, নিহত আরও ৭০

প্রকাশিত: ০৮:৪২, ২০ মার্চ ২০২৫

গাজায় স্থল অভিযান চালাচ্ছে ইসরায়েল, নিহত আরও ৭০

ছবি:সংগৃহীত

ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনীর ব্যাপক হামলা অব্যাহত রয়েছে। বিমান হামলার পর এখন স্থল অভিযান শুরু করেছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। যুদ্ধবিরতি চুক্তি ভেঙে টানা হামলায় মঙ্গলবার থেকে এখন পর্যন্ত ৪৩০ জনের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। শুধু বুধবার এক দিনেই নিহত হয়েছে ৭০ জনের বেশি মানুষ। বৃহস্পতিবার বিবিসি ও আল জাজিরার প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।


ইসরায়েল প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) জানিয়েছে, তাদের সেনারা গাজাকে উত্তর ও দক্ষিণে বিভক্তকারী নেটজারিম করিডোরে প্রবেশ করেছে। তারা উত্তর ও দক্ষিণ গাজার মধ্যে আংশিক বাফার জোন তৈরি করতে স্থল অভিযান শুরু করেছে। গাজার বাসিন্দাদের স্থল সীমান্তের তিন পাশের বিশাল এলাকা ছেড়ে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই নির্দেশকে ইসরায়েলের আরও বড় স্থল অভিযানের ইঙ্গিত হিসেবে দেখা হচ্ছে।


বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, ইসরায়েলের নির্দেশ গাজার বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে। অনেক পরিবার যুদ্ধের কারণে বারবার বাস্তুচ্যুত হয়েছেন এবং যুদ্ধবিরতির সময় বাড়ি ফিরে এসেছিলেন। এখন আবারও তাদের নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে হেঁটে, গাড়িতে বা অন্যান্য যানবাহনে করে বেরিয়ে যেতে দেখা গেছে।

 


ইসরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োয়াভ গ্যালান্ট বুধবার একটি ভিডিও বার্তায় ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে 'শেষ সতর্কতা' জারি করেছেন। তিনি হামাসের কাছে আটক অবশিষ্ট জিম্মিদের মুক্তি দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। ইসরায়েলের দাবি, হামাস এখনও ৫৯ জন জিম্মিকে ধরে রেখেছে, যাদের মধ্যে ২৪ জন জীবিত বলে ধারণা করা হচ্ছে। গ্যালান্ট সতর্ক করে বলেছেন, যদি হামাস জিম্মিদের মুক্তি না দেয়, তাহলে ইসরায়েলের বিকল্প হবে 'সম্পূর্ণ ধ্বংস ও ধ্বংসযজ্ঞ'।


গত ১৯ জানুয়ারি গাজায় ছয় সপ্তাহের যুদ্ধবিরতি চুক্তি কার্যকর হয়। এরপর দুপক্ষের মধ্যে আলোচনা চলছিল চুক্তির মেয়াদ বাড়ানোর জন্য। কিন্তু মঙ্গলবার ইসরায়েল ব্যাপক হামলা শুরু করে। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, তারা পূর্ণশক্তিতে যুদ্ধ পুনরায় শুরু করেছেন এবং যেকোনো যুদ্ধবিরতি আলোচনা এখন 'আগুনের মুখেই' হবে।


ইসরায়েল এবং হামাস যুদ্ধবিরতি কীভাবে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে তা নিয়ে একমত হতে ব্যর্থ হয়েছে। উভয় পক্ষই একে অপরকে দায়ী করছে। হামাসের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে ইসরায়েল গাজায় প্রবেশকারী সমস্ত খাদ্য, জ্বালানি ও চিকিৎসা সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছে। এখন ইসরায়েল কঠোর সামরিক শক্তি ব্যবহার করে হামাসকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবিত যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে স্বাক্ষর করতে বাধ্য করার চেষ্টা করছে।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাস ইসরায়েলে হামলা চালায়। এতে প্রায় ১,২০০ ইসরায়েলি নিহত এবং ২৫১ জনকে জিম্মি করা হয়। জিম্মিদের মধ্যে ২৫ জনকে যুদ্ধবিরতির প্রথম পর্যায়ে জীবিত মুক্তি দেওয়া হয়েছে। এর জবাবে ইসরায়েল ব্যাপক সামরিক আক্রমণ শুরু করে। হামাস-নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ইসরায়েলের হামলায় ৪৮ হাজার ৫০০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে এবং গাজার ঘরবাড়ি ও অবকাঠামো ব্যাপকভাবে ধ্বংস হয়েছে।
 

আঁখি

×