
ইসরাইলি বিমান হামলায় গত ২৪ ঘণ্টায় অন্তত ৭০ জন নিহত হয়েছে, যখন প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু সামরিক অভিযান আরও বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন এবং যুদ্ধ আরও বিস্তৃত হতে পারে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। সাম্প্রতিক এই হামলা গত কয়েক মাসের মধ্যে সবচেয়ে মারাত্মক আক্রমনগুলো একটি, যা অবরুদ্ধ ফিলিস্তিনি অঞ্চলে মানবিক সংকটকে আরও গুরুতর করে তুলেছে।
ভয়াবহ বোমাবর্ষণ এবং বেসামরিক হতাহতের সংখ্যা
ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের মতে, ইসরাইলি হামলা ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় পরিচালিত হয়েছে, যার ফলে নারীদের ও শিশুদের উল্লেখযোগ্য সংখ্যক বেসামরিক ব্যক্তি নিহত হয়েছে। গাজার হাসপাতালগুলো ক্রমবর্ধমান আহত রোগীদের সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে, যখন ওষুধ ও বিদ্যুতের তীব্র সংকট চলছে।
ইসরাইলের সামরিক বাহিনী (আইডিএফ) জানিয়েছে যে বিমান হামলাগুলো হামাসের ঘাঁটিগুলো লক্ষ্য করে চালানো হয়েছে, এবং তারা অভিযোগ করেছে যে সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো বেসামরিক অবকাঠামোকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে। "আমরা হামাসের সামরিক ক্ষমতাকে ধ্বংস করতে এবং ইসরাইলি নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সব ধরনের ব্যবস্থা নিচ্ছি,"।
নেতানিয়াহুর হুঁশিয়ারি: ‘এই যুদ্ধ শেষ হয়নি’
এক টেলিভিশন ভাষণে নেতানিয়াহু ঘোষণা করেন যে ইসরাইল হামাসের বিরুদ্ধে "দীর্ঘ এবং কঠোর যুদ্ধ" চালিয়ে যাবে। তিনি বলেন, “এই যুদ্ধ শেষ হয়নি। আমাদের লক্ষ্যে পৌঁছানো পর্যন্ত এটি সম্পূর্ণ শক্তি নিয়ে চলবে।” প্রধানমন্ত্রী আরও ইঙ্গিত দিয়েছেন যে প্রয়োজনে সামরিক অভিযানের পরিধি গাজার বাইরেও বাড়ানো হতে পারে।
এই নতুন সংঘর্ষের সূত্রপাত হয় মিশর ও কাতারের মধ্যস্থতায় অনুষ্ঠিত যুদ্ধবিরতির আলোচনা ব্যর্থ হওয়ার পর, যেখানে উভয় পক্ষ একে অপরকে চুক্তি ভঙ্গের জন্য দায়ী করেছে।
আন্তর্জাতিক নিন্দা এবং মানবিক উদ্বেগ
সাম্প্রতিক ইসরাইলি হামলার বিরুদ্ধে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা নিন্দা প্রকাশ করেছে। জাতিসংঘ সতর্ক করে দিয়েছে যে গাজা "ভয়াবহ মানবিক সংকটের" সম্মুখীন, যেখানে চলমান সংঘর্ষের ফলে ৮০% এর বেশি জনগণ বাস্তুচ্যুত হয়েছে।
মিশর, যা পূর্বে যুদ্ধবিরতির মধ্যস্থতা করেছিল, অবিলম্বে সহিংসতা বন্ধের আহ্বান জানিয়েছে এবং ইসরাইলকে তার সামরিক কৌশল পুনর্বিবেচনা করতে অনুরোধ করেছে। অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্র বেসামরিক হতাহতের সংখ্যা বাড়ার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করলেও ইসরাইলের আত্মরক্ষার অধিকারের প্রতি সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছে।
ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা: কূটনীতি নাকি আরও সংঘর্ষ?
যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনা অনিশ্চিত অবস্থায় থাকায়, সংঘাতের অবসান এখনো অনির্দিষ্ট। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, উভয় পক্ষ যদি কোনো ছাড় দিতে রাজি না হয়, তাহলে এই যুদ্ধ আরও দীর্ঘায়িত হতে পারে।
এই মুহূর্তে, গাজা তীব্র বোমাবর্ষণের সম্মুখীন, এবং এর বাসিন্দারা ক্রমবর্ধমান সংকটের মধ্যে দিন কাটাচ্ছে, যেখানে সংঘাতের শেষ কোথায়, তা অনিশ্চিত রয়ে গেছে।
সাজিদ