
ছবি:সংগৃহীত
ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনীর হামলা অব্যাহত রয়েছে। বিমান হামলা ছাড়াও গাজা শহরের আকাশে ইসরায়েলি ড্রোনের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। মঙ্গলবারের হামলায় এক দিনেই ৪০০ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে বলে ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের বুধবারের প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রায় দুই মাসের আপেক্ষিক শান্তির পর ফের উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে গাজা উপত্যকা। ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু সতর্ক করে বলেছেন, ‘যুদ্ধ কেবল শুরু’। তিনি হামাসকে দায়ী করে বলেছেন, হামাস যুদ্ধবিরতি বাড়ানোর প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় ইসরায়েল হামলা চালাচ্ছে। নেতানিয়াহু গাজাবাসীদের নিরাপদ এলাকায় সরে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
আল জাজিরার প্রতিবেদন অনুযায়ী, গাজার উত্তরাঞ্চলে ইসরায়েলি ড্রোনের উপস্থিতি স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। গাজা শহরের উত্তরাঞ্চলের একটি তাঁবুতে বোমা হামলার শব্দ শোনা গেছে, যেখানে বেসামরিক নাগরিকদের হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। এছাড়া, গাজার পূর্বাঞ্চল ও উত্তরাঞ্চলে সরকারি স্থাপনাগুলোতে হামলার ফলে আরও বেসামরিক হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। এসব হামলার কারণে গাজার পশ্চিমাঞ্চলে আরও বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হচ্ছেন।
রয়টার্স জানিয়েছে, গাজায় আটকা পড়া ২৫০ জন জিম্মির মধ্যে ৫৯ জনকে এখনও হামাস ধরে রেখেছে। ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু বলেছেন, ইসরায়েল হামাসের বিরুদ্ধে ক্রমবর্ধমান শক্তি প্রয়োগ করবে এবং আলোচনা আক্রমণের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে। তিনি বলেন, ‘গত ২৪ ঘণ্টায় হামাস ইতোমধ্যেই আমাদের শক্তির আঘাত অনুভব করেছে। এটি কেবল শুরু।’
গাজা উপত্যকার উত্তর থেকে দক্ষিণ পর্যন্ত ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় বাড়িঘর ও তাঁবু ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, মঙ্গলবার গভীর রাতে ইসরায়েলি বিমান গাজা শহরে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়। এছাড়া, সীমান্তের ওপার থেকে ইসরায়েলি ট্যাঙ্কগুলোর গোলাবর্ষণের কথাও জানা গেছে।
২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ইসরায়েলি হামলায় গাজায় নিহতের সংখ্যা সাড়ে ৪৮ হাজার ছাড়িয়েছে। আহতের সংখ্যা ১ লাখ ১২ হাজারের বেশি। গত ১৯ জানুয়ারি যুদ্ধবিরতি শুরু হলেও ইসরায়েল থেমে থেমে হামলা চালিয়ে আসছিল। এবার ফের ব্যাপক হামলা শুরু হয়েছে। হামাসের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেছেন, ইসরায়েলের এই হামলার অর্থ হলো, তারা একতরফাভাবে যুদ্ধবিরতি বাতিল করেছে।
এদিকে, ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে মধ্যস্থতামূলক আলোচনা চললেও এখনও কোনো সমঝোতা হয়নি। গাজার পরিস্থিতি দিন দিন উত্তপ্ত হয়ে উঠছে এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উদ্বেগ বাড়ছে।
আঁখি