ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৯ মার্চ ২০২৫, ৫ চৈত্র ১৪৩১

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের লাগাম টেনে ধরেছিল যে যুদ্ধ

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশিত: ০৭:৪৯, ১৯ মার্চ ২০২৫; আপডেট: ০৭:৫৯, ১৯ মার্চ ২০২৫

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের লাগাম টেনে ধরেছিল যে যুদ্ধ

ছবিঃ সংগৃহীত

অপারেশন ভার্সিটি, এটি এমন একটি যুদ্ধ যা ইউরোপে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের লাগাম টেনে ধরেছিল। ঐ অঞ্চলে বিশ্বযুদ্ধের সমাপ্তি ত্বরান্বিত করেছিল। যদিও এই যুদ্ধ সম্পর্কে সাধারণ মানুষের খুব বেশি জানা শোনা নেই, তবে সামরিক ইতিহাস প্রেমীদের কাছে এটি খুবই পরিচিত। ২৪ মার্চ ১৯৪৫, এই দিনটিতে যুক্তরাজ্য, কানাডা এবং যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন যৌথবাহিনী ইংল্যান্ডের বিভিন্ন বিমান ঘাঁটি থেকে উড্ডয়ন করেছিলো। পরে সরাসরি তাদের নামিয়ে দেয়া হয় জার্মান বাহিনীর প্রতিরক্ষা রেখার উপর। সেদিন তারা দ্রুত সাফল্য অর্জন করলেও অসংখ্য প্রাণহানি হয়। দীর্ঘ ছয় সপ্তাহ পর পশ্চিমা ঐ মিত্র বাহিনী বার্লিনে গিয়ে রুশ বাহিনীর সাথে মিলিত হয়। এবং ইউরোপের দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ সমাপ্ত ঘোষণা করে। যৌথবাহিনীর তৃতীয় ব্যাটালিয়নের প্যারাস্যুট রেজিমেন্টে কাজ করেছেন ক্রিস বুলক। ইংল্যান্ডের এসেক্সে আর এ এফ রিভেনহলে অনুষ্ঠিত ওই স্মরণসভায় তিনি বলেছিলেন এটি এক অজানা গল্প। যখন দেখি রিভেনহলে সৈনিকেরা তাদের শেষ কাপে চা পান করছেন। বিজয়ী চিহ্ন দেখাচ্ছেন। এবং জানতাম যে কয়েক ঘন্টার মধ্যে তাদের কেউ ফিরে আসবেন না। এই গল্পটি বলা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মনে হয়। বর্তমানে এক`শ দুই বছর বয়সী পিটার ডেভিস অপারেশন ভার্সিটিতে অংশ নিয়েছিলেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন ব্রিটিশ গ্লাইডার পাইলট রেজিমেন্টে যোগ দিয়েছিলেন তিনি। কারণ এটি তার কাছে আর্মির সাধারণ দায়িত্বের চেয়ে আরও উত্তেজনাপূর্ন মনে হয়েছিলো। যুদ্ধের সেই মূহুর্তের স্মৃতি মনে করে ডেভিস বলেন, ‘গ্লাইডার চালানো মানে ছিলো একটি ইটের মত শুধু নিচের দিকে উড়ে যাওয়া। প্রচন্ড বিমান বিধ্বংসী গোলাবর্ষণের মুখে আমরা নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেছিলাম। আর শত্রুর মাঝখানে গিয়ে পরেছিলাম। মাটিতে আছড়ে পরার পর আমরা একদম ভুল স্থানে এক দল ক্রুদ্ধ জার্মানের মাঝখানে ছিলাম। চারপাশে বিশৃঙ্খল ছিলো চরম পর্যায়ে।’ অপারেশন ভার্সিটি ছিলো ইতিহাসের সব থেকে বড় একক বিমান বাহিত অভিযান। এর মাধ্যমে এক দিনে ১৬ হাজারের বেশি সৈন্য পশ্চিম জার্মানিতে অবতরণ করেছিলো। এর লক্ষ্য ছিলো রাইন নদীর ওপারে একটি শক্ত ঘাঁটি গড়ে তোলা। যাতে মিত্রবাহিনী দ্রুত জার্মানির ভেতরে প্রবেশ করতে পারে। এবং রুশ বাহিনীর সঙ্গে মিলিত হতে পারে। পাঁচ মাস আগের ব্যর্থ যুদ্ধে ৯০% গ্লাইডার পাইলট রেজিমেন্টের প্রাণহানি ঘটার পরই অপারেশন ভার্সিটির পরিকল্পনা করা হয়েছিলো। এর ফলে যোদ্ধা বিমানের প্রশিক্ষণরত শত শত আর এ এফ পাইলট গ্লাইডার পাইলট হিসেবে যোগ দিতে বাধ্য হন। ঐ যুদ্ধে গ্লাইডার পাইলট রেজিমেন্টের ৮৯০ জন সৈন্যের মধ্যে বিশ শতাংশের বেশি নিহত বা আহত হন। সে সময় মার্কিন ১৭ তম বিমান বাহিনী এবং ব্রিটিশ ষষ্ঠ বিমান বাহিনীর অন্তত ১০৭০ জন সদস্য নিহত হন। আহত হন আরও হাজার হাজার। কিন্তু ৪-৫ ঘন্টার মধ্যেই অপারেশন ভার্সিটির প্রধান লক্ষ্য অর্জিত হয়েছিল।

মুমু

×