
ছবি : সংগৃহীত
আর্মেনিয়া ও আজারবাইজান একটি শান্তি চুক্তি স্বাক্ষরের ঘোষণা দিয়েছে। সোমবার দেশ দুটি জানিয়েছে, কয়েক দশকব্যাপী সংঘাত নিরসনের লক্ষ্যে তারা আলোচনা করেছে এবং উভয় পক্ষই একটি সম্ভাব্য চুক্তির শর্তাবলিতে একমত হয়েছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, চুক্তি স্বাক্ষরিত হলে প্রতিবেশী দুই দেশের সম্পর্ক স্বাভাবিক করার ক্ষেত্রে একটি বড় অগ্রগতি হবে। বিশেষ করে যেখানে রাশিয়া, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাষ্ট্র ও তুরস্কের মতো প্রভাবশালী পক্ষগুলো প্রভাব বিস্তারের জন্য লড়াই করে আসছে। খবর রয়টার্সের।
আজারবাইজান ও আর্মেনিয়ার বিরোধের মূলে রয়েছে নাগার্নো-কারাবাখ অঞ্চল যা পূর্ব ইউরোপ ও এশিয়ার মাঝে দক্ষিণ ককেশাস অঞ্চলে কৃষ্ণসাগর ও কাস্পিয়ান সাগরের মধ্যে অবস্থিত। এটি আজারবাইজানের অংশ হলেও এর সংখ্যাগরিষ্ঠ অধিবাসী জাতিগতভাবে আর্মেনীয়। এটি বিশ্বের সবচেয়ে দীর্ঘস্থায়ী সংঘাতের কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর অঞ্চলটির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে আজারবাইজান ও আর্মেনিয়া সংঘাতে জড়িয়ে পড়ে এবং ১৯৮০ ও ১৯৯০-এর দশকে দেশ দুটির মধ্যে দুটি বড় যুদ্ধ হয়। এরপর ২০২০ সালে এসে আবারও যুদ্ধে জড়ায় তারা। ছয় সপ্তাহের ওই যুদ্ধে প্রাণ হারায় কয়েক হাজার মানুষ। রুশ শান্তিরক্ষী বাহিনীর হস্তক্ষেপে যুদ্ধবিরতি ঘোষিত হয়। কিন্তু এরপরও দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা কমেনি। এরপর ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর মাসে মাত্র ২৪ ঘণ্টার সামরিক অভিযানে নাগরনো-কারাবাখ অঞ্চল দখল করে নেয় আজারবাইজান। এর ফলে অঞ্চলটি থেকে প্রায় এক লাখ আর্মেনীয় আর্মেনিয়ায় পালিয়ে যায়। এরপর জোরেশোরে শান্তি আলোচনা শুরু হয়। আর্মেনিয়া ও আজারবাইজান উভয়ই বারবার বলেছে, তারা দীর্ঘস্থায়ী সংঘাতের অবসান ঘটাতে একটি বিস্তৃত শান্তি চুক্তির কাছাকাছি পৌঁছে গেছে। কিন্তু আলোচনা শেষ পর্যন্ত একটি খসড়া চুক্তির বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছতে ব্যর্থ হয়। অবশেষে এ ব্যাপারে বড় অগ্রগতির খবর আসে গত ১৩ মার্চ।