
ছবি : সংগৃহীত
মার্কিন জাতীয় গোয়েন্দা প্রধান তুলসী গ্যাভার্ড দায়িত্ব নিতে না নিতেই চলে গেছেন ভারত সফরে। তার দিল্লি সফর নিয়ে শুরু হয়েছে তোলপাড়। বৈঠক করেছেন ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভালের সঙ্গে।
তুলসী দায়িত্ব নেয়ার আগেই জানা গেছে, তিনি একজন ইসকন সদস্য এবং হিন্দু ধর্মাবলম্বী ভারতের প্রধান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সাথে তার বেশ ঘনিষ্ঠতা রয়েছে। এর আগে আমেরিকা সফরেও তুলসীর সাথে বৈঠক করেছেন নরেন্দ্র মোদি। এবার সরাসরি দিল্লিতে পৌঁছে গেছেন তুলসী।
ভারতীয় গণমাধ্যম টাইমস অফ ইন্ডিয়া জানিয়েছে, দুই কর্মকর্তার বৈঠকে ভারত-যুক্তরাষ্ট্র কৌশলগত বোঝাপড়াকে আরো নিবিড় করতে গোয়েন্দা তথ্য আদানপ্রদানের উপর বিশেষ জোর দেয়ার কথা বলা হয়েছে। রোববার দুই পক্ষের বৈঠকে সন্ত্রাসবাদ এবং উদীয়মান প্রযুক্তি হুমকি মোকাবেলায় কাজ করতে সম্মত হয়েছেন তারা। তাদের আলোচনাকে ইতিবাচক বলে জানিয়েছে সংবাদ সংস্থা পিটিআই।
বর্তমানে ভারত-আমেরিকার মাথা ব্যথার কারণ সন্ত্রাসবাদ। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সন্ত্রাসবাদের প্রসার কমাতে গোয়েন্দা তথ্য গুরুত্বপূর্ণ। দুই দেশই এই ব্যাপারে একে অপরকে সাহায্য করবে বলে ঐক্যমতে পৌঁছেছে নয়া দিল্লি এবং ওয়াশিংটন।
এমনকি বিভিন্ন সূত্র বলছে, তুলসীর সঙ্গে বৈঠকে আমেরিকা সহ বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে খালিস্তানপন্থী এবং অন্য বিচ্ছিন্নতাবাদীদের ভারত বিরোধী কার্যকলাপ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন দোভাল। এছাড়া ইন্দো-প্যাসিফিক নিরাপত্তা, সন্ত্রাসবাদ দমনে অর্থায়ন, দুর্নীতি দমন সহ নানা ইস্যুতে আলোচনা হয়েছে তাদের।
তবে প্রতিবেশী দেশে এসে বাংলাদেশ সম্পর্কে তাদের মধ্যে কোন আলোচনা হয়েছে কিনা, সেটি এখনো স্পষ্ট নয়। তুলসী আগেও বাংলাদেশ নিয়েছিলেন উচ্চকণ্ঠ। নিজের টুইটারে ও বাংলাদেশ প্রসঙ্গে মন্তব্য করেছিলেন। শুধু তাই নয়, সাম্প্রতিক যুক্তরাষ্ট্র সফরে ট্রাম্পের সঙ্গেও বাংলাদেশ ইস্যুতে আলোচনা করেছেন নরেন্দ্র মোদি।
এদিকে আজ ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং এর সঙ্গে বৈঠক করেছেন তুলসী গ্যাবার্ড। এই বৈঠকে যোগ দিতে ভারতে এসেছেন অস্ট্রেলিয়া, জার্মানি, নিউজিল্যান্ড সহ ২০ দেশের গোয়েন্দা প্রধানেরাও।
অবশ্য উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে ভারতীয় মন্ত্রী বা কর্মকর্তাদের সঙ্গে তাঁর কী কথা হয়েছে, তা জনসমক্ষে আসেনি। যদিও ভারতে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশি সংখ্যালঘুদের ওপর অত্যাচার নিয়ে কথা বলেছেন তুলসি গ্যাবার্ড। এই আবহে আজ রাজনাথ সিংয়ের সঙ্গে বৈঠকের পর বাংলাদেশ প্রসঙ্গে তুলসি বলেন, “হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান এবং অন্যান্য ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের উপর দীর্ঘকাল ধরে চলা দুর্ভাগ্যজনক নির্যাতন, হত্যা এবং অত্যাচার নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র খুবই উদ্বিগ্ন।”
ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয়বার আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর এই প্রথম কোন শীর্ষ স্থানীয় মার্কিন কর্মকর্তা এলেন ভারত সফরে। নিরাপত্তা বৈঠকে সম্ভাব্য আলোচ্য সূচিতে বাংলাদেশ প্রসঙ্গ আছে বলেও জানিয়েছে দা ইকোনোমিক টাইমস।
ভারতের পর জাপান, থাইল্যান্ড এবং ফ্রান্স সফরে তুলসীর যাওয়ার কথা রয়েছে। তুলসী গ্যাভার্ড মার্কিন কংগ্রেসের প্রথম হিন্দু নির্বাচিত সদস্য ছিলেন। পরে ডেমোক্রেট দল ছেড়ে যোগ দেন ট্রাম্প শিবিরে। ভোটে জিতেই তুলসীকে মার্কিন গোয়েন্দা প্রধানের পদে বসান ট্রাম্প। সে কারণে তুলসীর ভারত সফরের বিষয়টি বেশ তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে।
মো. মহিউদ্দিন