
ছবি:সংগৃহীত
যুক্তরাষ্ট্র আদালতের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে ভেনেজুয়েলার ২৩৮ নাগরিকসহ মোট ২৬১ ব্যক্তিকে এল সালভাদরে পাঠিয়েছে। ট্রাম্প প্রশাসনের এই পদক্ষেপের সমালোচনা করেছে ভেনেজুয়েলা এবং বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন। এল সালভাদরের প্রেসিডেন্ট নায়েব বুকেলে এবং যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও পৃথক বিবৃতিতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
নায়েব বুকেলে জানান, প্রত্যর্পণ করা ব্যক্তিদের মধ্যে ভেনেজুয়েলার ট্রেন ডি আরাগুয়া গ্যাংয়ের ২৩৮ সদস্য এবং আন্তর্জাতিক গ্যাং এমএস-১৩-এর ২৩ সদস্য রয়েছে। এসব ব্যক্তিকে এল সালভাদরের একটি উচ্চ নিরাপত্তাসম্পন্ন কারাগারে রাখা হবে। এই প্রক্রিয়ায় এল সালভাদর যুক্তরাষ্ট্র থেকে আর্থিক সহায়তা পাবে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ট্রেন ডি আরাগুয়ার সদস্যদের দ্রুত প্রত্যর্পণের জন্য ১৭৯৮ সালের ভিনদেশি শত্রু আইন (এলিয়েন এনেমিস অ্যাক্ট) ব্যবহারের নির্দেশ দেন। এই আইনটি যুদ্ধকালীন আইন হিসেবে পরিচিত। তবে ওয়াশিংটনের কেন্দ্রীয় সরকারের বিচারক জেমস বোসবার্গ এই আইনের ব্যবহার ১৪ দিনের জন্য স্থগিত রাখার নির্দেশ দেন। তিনি বলেছেন, এই আইন অন্য দেশের দ্বারা সংঘটিত ‘শত্রুতাপূর্ণ কর্মকাণ্ডকে’ বোঝায়, যা ‘যুদ্ধের সমতুল্য’।
এল সালভাদরের প্রেসিডেন্ট নায়েব বুকেলে আদালতের নির্দেশনা নিয়ে মন্তব্য করেন, ‘উফ... অনেক দেরি হয়ে গেছে’। তিনি আরও জানান, যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রত্যর্পণ করা ব্যক্তিদের এক বছরের জন্য সন্ত্রাসবাদ বন্দিশিবিরে (সেকট) পাঠানো হয়েছে এবং প্রয়োজনে তাদের আটকাদেশ বাড়ানো হতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্র এবং এল সালভাদরের মধ্যে গত মাসে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়, যার মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানরত অন্য দেশের অপরাধীদের এল সালভাদরের কারাগারে রাখা হবে। মার্কো রুবিও এই চুক্তিকে ‘অভূতপূর্ব ও অসাধারণ অভিবাসন চুক্তি’ বলে অভিহিত করেছেন।
ভেনেজুয়েলা যুক্তরাষ্ট্রের এই পদক্ষেপের তীব্র সমালোচনা করে বলেছে, এটি ভেনেজুয়েলার অভিবাসীদের অন্যায়ভাবে অপরাধী সাব্যস্ত করার একটি প্রচেষ্টা। ভেনেজুয়েলার সরকারি বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এই পদক্ষেপ দাসপ্রথা এবং নাৎসি বন্দিশিবিরের মতো মানবতার ইতিহাসের অন্ধকার অধ্যায়ের স্মৃতি জাগিয়ে তোলে।
এদিকে, বার্তা সংস্থা এপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রেন ডি আরাগুয়ার ৩০০ অভিযুক্ত সদস্যকে এক বছর জেলে রাখতে এল সালভাদরকে ৬০ লাখ ডলার দিতে সম্মত হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এই ঘটনাটি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মধ্যে বিতর্ক ও সমালোচনার সৃষ্টি করেছে।
আঁখি