ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ১৭ মার্চ ২০২৫, ৩ চৈত্র ১৪৩১

হিজাববিহীন নারীদের ধরতে ড্রোন-অ্যাপ

প্রকাশিত: ০৭:০৩, ১৭ মার্চ ২০২৫

হিজাববিহীন নারীদের ধরতে ড্রোন-অ্যাপ

ছবি:সংগৃহীত

ইরান নারীদের জন্য বাধ্যতামূলক হিজাব আইন কঠোরভাবে প্রয়োগ করতে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করছে। দেশটির কর্তৃপক্ষ নজরদারি ও শাস্তিমূলক ব্যবস্থার মাধ্যমে এই আইন লঙ্ঘনকারীদের লক্ষ্য করছে।

 

সম্প্রতি জাতিসংঘের একটি প্রতিবেদনে ইরানের প্রযুক্তি নির্ভর নজরদারি পদ্ধতির উদ্বেগজনক চিত্র তুলে ধরা হয়েছে, যা নারীদের আচরণ নিয়ন্ত্রণ ও তাদের উপর নজরদারি করতে ব্যবহৃত হচ্ছে।

 

 

এই দমনমূলক ব্যবস্থার কেন্দ্রে রয়েছে ‘নাজের’ নামের একটি মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন, যা সরকারি সহায়তায় তৈরি করা হয়েছে। এই অ্যাপের মাধ্যমে নাগরিক ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী হিজাব আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ জানাতে পারে। ব্যবহারকারীরা গাড়ির নম্বর প্লেট, অবস্থান ও সময়সহ গুরুত্বপূর্ণ তথ্য আপলোড করতে পারে, যা পরে অনলাইনে গাড়িগুলোকে ‘ফ্ল্যাগ’ করতে এবং কর্তৃপক্ষকে সতর্ক করতে ব্যবহৃত হয়। অ্যাপটি গাড়ির মালিককে একটি টেক্সট মেসেজ পাঠায়, তাদের আইন লঙ্ঘনের জন্য সতর্ক করে এবং সতর্কতা উপেক্ষা করলে গাড়ি জব্দের হুমকি দেয়।

 

 

এই নজরদারি পদ্ধতি অ্যাম্বুল্যান্স, ট্যাক্সি ও পাবলিক ট্রান্সপোর্টে নারীদের লক্ষ্য করে আরও সম্প্রসারিত হয়েছে, যা তাদের ব্যক্তিগত স্বাধীনতা ও স্বায়ত্তশাসনকে আরও ক্ষুণ্ণ করছে। এছাড়াও, ইরানি কর্তৃপক্ষ তেহরান ও দক্ষিণ ইরানে জনসমাগমস্থলে ড্রোন ব্যবহার করে হিজাব আইনের আনুগত্য নিশ্চিত করছে। তেহরানের আমিরকাবির বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবেশদ্বারে ফেসিয়াল রিকগনিশন সফটওয়্যার ইনস্টল করা হয়েছে, যা নারী শিক্ষার্থীদের নজরদারি করে এবং তাদের পোশাকবিধি মেনে চলা নিশ্চিত করে।

 

 

জাতিসংঘের প্রতিবেদনে ইরানের পদ্ধতিগত মানবাধিকার লঙ্ঘন ও মানবতাবিরোধী অপরাধের সমালোচনা করা হয়েছে, বিশেষ করে ভিন্নমত দমন এবং নারী ও কিশোরীদের লক্ষ্য করে নজরদারি ও শাস্তিমূলক ব্যবস্থার বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে। প্রতিবেদনে ইরানের বাধ্যতামূলক হিজাব আইনের বিধ্বংসী প্রভাবের কথা উল্লেখ করা হয়েছে, যা ব্যাপক বিক্ষোভ ও শত শত প্রাণহানির কারণ হয়েছে।

 

 

ইরানের প্রস্তাবিত ‘হিজাব ও সতীত্ব’ আইনটি নারী ও কিশোরীদের জন্য মারাত্মক হুমকি সৃষ্টি করতে পারে। এই আইনটি পাস হলে, আইন লঙ্ঘনকারীদের জন্য ১০ বছরের কারাদণ্ড ও ১২ হাজার মার্কিন ডলারের সমপরিমাণ জরিমানার মতো কঠোর শাস্তির বিধান থাকবে। এছাড়াও, এই আইন নিরাপত্তা বাহিনীকে আরও শক্তিশালী করার সুযোগ দেবে, যা নারীদের আচরণ নিয়ন্ত্রণ ও নজরদারিতে প্রযুক্তির ব্যবহার আরও বাড়াবে। ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে অভ্যন্তরীণ বিতর্কের পর এই আইনটি স্থগিত করা হয়।

আঁখি

×