ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ১৬ মার্চ ২০২৫, ২ চৈত্র ১৪৩১

এক রাতেই হারিয়ে গেল আস্ত একটি নদী!

প্রকাশিত: ১৯:৪২, ১৬ মার্চ ২০২৫

এক রাতেই হারিয়ে গেল আস্ত একটি নদী!

ছবি: সংগৃহীত

ভাবতে অবাক লাগলেও বাস্তবে ঘটেছে এমনই একটি ভয়াবহ ঘটনা। জাম্বিয়ার বাণিজ্যিক নগরী কিতওয়ায় একটি কপার খনির বাঁধ ধসে পড়ে কাফুয়ে নদীতে ছড়িয়ে পড়ে বিষাক্ত বর্জ্য। নিমিষেই শুকিয়ে যায় নদীর পানি, এসিডের প্রভাবে মৃত্যু হয় লাখ লাখ জলজ প্রাণীর। 

পরিবেশবিদরা সতর্ক করে বলেছেন, ভয়াবহ পরিবেশ বিপর্যয়ের মুখে পড়েছেন নদীর তীরবর্তী মানুষ ও বন্যপ্রাণী।

১৮ ফেব্রুয়ারি, চীনা মালিকানাধীন একটি কপার খনির ড্যাম ধসে পড়ে। এতে থাকা প্রায় ৫০ মিলিয়ন লিটার অ্যাসিডযুক্ত বিষাক্ত বর্জ্য ও ভারী ধাতু মিশে যায় খনির পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া কাফুয়ে নদীতে। কিছু বুঝে ওঠার আগেই ঘটে যায় বিপর্যয়! মাত্র ৩০ মিনিটের মধ্যে পুরো ড্যাম ধসে পড়ে, এবং বিষাক্ত এসিড নদীর পানির সাথে মিশে যায়।

এই ঘটনায় ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কাফুয়ে নদীর তীরবর্তী বাসিন্দারা। কৃষিকাজ ও মাছ ধরার সাথে জড়িত মানুষজন এখন শুধুই হাহাকার করছেন। দূষণের ফলে ভেসে উঠেছে হাজার হাজার মৃত মাছ, নষ্ট হয়ে গেছে ভুট্টা ও চিনাবাদামের ক্ষেত।

পরিবেশবিদদের মতে, এটি একটি ভয়াবহ পরিবেশগত বিপর্যয়! বিষাক্ত বর্জ্যের কারণে নদীর পানি ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। মাটির সাথে মিশে নষ্ট হয়েছে কৃষকদের ফসল। মারা গেছে লাখ লাখ টাকার মাছ। শুধু তাই নয়, বিভিন্ন প্রজাতির বন্যপ্রাণীর জীবনও পড়েছে সংকটে।

একজন ক্ষতিগ্রস্ত মাছচাষি বলেন, "ড্যাম ধসের পর আমার পুকুরে চুনের মতো বর্জ্য প্রবাহিত হতে দেখেছি। সব মাছ মরে ভেসে উঠেছে! আমি শুধু অসহায়ভাবে দাঁড়িয়ে ভাবছিলাম, আমার বিনিয়োগের এত টাকা এখন কী হবে?"

এই পরিবেশগত বিপর্যয়ের পর পরিস্থিতি সামাল দিতে উদ্যোগ নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। তবে কাফুয়ে নদী থেকে ধরা মাছ না খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছে জাম্বিয়ার মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ বিভাগ। তা সত্ত্বেও স্থানীয়রা এখনো আতঙ্কে রয়েছেন, কারণ নদীর পানির পুনরুদ্ধার কতটা সম্ভব, তা নিয়ে রয়েছে অনিশ্চয়তা।

শিলা ইসলাম

×