ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ১৬ মার্চ ২০২৫, ২ চৈত্র ১৪৩১

রাশিয়ার দাবি: দুটি গ্রাম পুনরুদ্ধার! কী ঘটছে যুদ্ধক্ষেত্রে?

প্রকাশিত: ০৮:১৯, ১৬ মার্চ ২০২৫

রাশিয়ার দাবি: দুটি গ্রাম পুনরুদ্ধার! কী ঘটছে যুদ্ধক্ষেত্রে?

রাশিয়ার কুরস্ক অঞ্চলে ইউক্রেনীয় বাহিনী এখনো প্রতিরোধ চালিয়ে যাচ্ছে, তবে দেশটির উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সুমি অঞ্চলে নতুন আক্রমণের আশঙ্কা রয়েছে বলে জানিয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি।

সামরিক বিশ্লেষকদের মতে, গত আগস্টে বড় ধরনের সীমান্ত অভিযান চালিয়ে ইউক্রেনীয় বাহিনী পশ্চিম রাশিয়ার কুরস্ক অঞ্চলে প্রবেশ করেছিল। তবে এখন রাশিয়া তাদের সেখান থেকে পুরোপুরি উৎখাতের দ্বারপ্রান্তে রয়েছে। এ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সতর্ক করে বলেছিলেন যে, ‘হাজার হাজার ইউক্রেনীয় সৈন্য সম্পূর্ণভাবে ঘেরাও হয়ে পড়েছে।’রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তারা সুমি অঞ্চলের কাছের সুদঝা শহরের কাছে আরও দুটি গ্রাম পুনরুদ্ধার করেছে। এদিকে, রাশিয়ার জরুরি ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সুদঝা সংলগ্ন এলাকা থেকে ৩০০-এরও বেশি বাসিন্দাকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

জেলেনস্কি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জানান, তার প্রধান সামরিক কমান্ডারের ব্রিফিং অনুসারে, কুরস্কে ইউক্রেনীয় বাহিনী ঘেরাও হয়নি। তবে রাশিয়া ওই এলাকায় নতুন হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে। তিনি বলেন, ‘এটি আমাদের সুমি অঞ্চলে হামলার ইঙ্গিত দেয়। আমরা এ সম্পর্কে অবগত এবং উপযুক্ত জবাব দেব।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমি চাই আমাদের আন্তর্জাতিক মিত্ররা পরিষ্কারভাবে বুঝুক পুতিন কী পরিকল্পনা করছেন, কীসের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন এবং কী উপেক্ষা করছেন।’

এদিকে, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন জানিয়েছেন, তিনি মূলত ট্রাম্পের ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবকে সমর্থন করেন, তবে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ শর্ত পূরণ না হওয়া পর্যন্ত যুদ্ধ চালিয়ে যাবেন।

যুদ্ধের প্রস্তুতি বাড়াচ্ছে পশ্চিমারা

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কেয়ার স্টারমার জানিয়েছেন, ইউক্রেনের সম্ভাব্য শান্তিচুক্তির ক্ষেত্রে ইউরোপীয় দেশ ও পশ্চিমা মিত্ররা সহায়তা জোরদার করছে। আগামী সপ্তাহে প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা শক্তিশালী পরিকল্পনা চূড়ান্ত করবেন।

জেলেনস্কি বলেন, ‘রাশিয়ার সেনা সমাবেশ ইঙ্গিত দিচ্ছে যে মস্কো কূটনৈতিক প্রচেষ্টা উপেক্ষা করেই যুদ্ধ দীর্ঘায়িত করতে চায়।’

যুদ্ধক্ষেত্রে স্থিতিশীলতা

ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় গুরুত্বপূর্ণ শহর পোকরোভস্কের পরিস্থিতি স্থিতিশীল হয়েছে বলে জানান জেলেনস্কি। এছাড়া, দেশটি নতুনভাবে তৈরি লং-রেঞ্জ ক্ষেপণাস্ত্র প্রথমবারের মতো সফলভাবে ব্যবহার করেছে।

তিনি জানান, ইউক্রেনের ‘লং নেপচুন’ ক্ষেপণাস্ত্রের পাল্লা ১,০০০ কিলোমিটার পর্যন্ত, যা দেশটির প্রতিরক্ষা সক্ষমতা বাড়াবে। ইউক্রেন তাদের সামরিক শিল্প প্রসারিত করার পরিকল্পনা করছে, যাতে পশ্চিমা মিত্রদের ওপর নির্ভরশীলতা কমানো যায়।

এদিকে, রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় দাবি করেছে, তারা সুদঝার নিকটবর্তী রুবানশ্চিনা ও জাওলেশেঙ্কা নামের দুটি গ্রাম পুনরুদ্ধার করেছে।

রাশিয়া গত আগস্ট থেকে কুরস্ক অঞ্চলে ইউক্রেনীয় বাহিনীকে উৎখাতের প্রচেষ্টা জোরদার করেছে, যেখানে ইউক্রেন প্রায় ১০০টি বসতি দখল করেছিল।

ইউক্রেনীয় সামরিক বাহিনীর জেনারেল স্টাফ জানিয়েছে, কুরস্ক অঞ্চলে শনিবার ১১টি সশস্ত্র সংঘর্ষ হয়েছে, যার মধ্যে তিনটি এখনো চলছে। এছাড়া, রাশিয়ার বাহিনী ২১টি বিমান হামলা, ৩২টি নির্ভুল বোমা হামলা চালিয়েছে এবং ইউক্রেনীয় অবস্থানে ১৫০ বার গোলাবর্ষণ করেছে।

রাজু

×