ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১৫ মার্চ ২০২৫, ১ চৈত্র ১৪৩১

জালিয়াতি করে বোনকে সম্পত্তি দিতে চেয়েছিলেন টিউলিপ!

প্রকাশিত: ২৩:৪২, ১৪ মার্চ ২০২৫; আপডেট: ২৩:৪৪, ১৪ মার্চ ২০২৫

জালিয়াতি করে বোনকে সম্পত্তি দিতে চেয়েছিলেন টিউলিপ!

ছবি: সংগৃহীত

যুক্তরাজ্যের সাবেক সিটি মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে সম্পত্তি হস্তান্তরের সময় জাল নোটারি নথি ব্যবহারের অভিযোগ এনেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সংস্থাটির তদন্তে উঠে এসেছে, তিনি নকল নোটারি পাবলিক ব্যবহার করে তার বোন আজমিনা সিদ্দিকের নামে সম্পত্তি হস্তান্তর করেছেন। এতে ব্যবহৃত আইনজীবীর স্বাক্ষরও জাল বলে অভিযোগ করেছে দুদক।

শুক্রবার (১৪ মার্চ) যুক্তরাজ্যের সংবাদমাধ্যম ফিন্যান্সিয়াল টাইমস-এর এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য প্রকাশ করা হয়।

দুদকের দাবি, বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বোনের মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিক তার রাজনৈতিক প্রভাব ব্যবহার করে ঢাকার পূর্বাচল নিউ টাউন প্রকল্পের সরকারি প্লট নিজ ও পরিবারের জন্য নিশ্চিত করেন। সংস্থাটির মতে, এভাবে তিনি রাষ্ট্রীয় সম্পত্তির অবৈধ বরাদ্দ থেকে উপকৃত হয়েছেন। দুদকের তদন্ত অনুযায়ী, টিউলিপ সিদ্দিক ঢাকায় পূর্ব থেকেই একটি সম্পত্তির মালিক ছিলেন, ফলে পূর্বাচল প্রকল্পে প্লট পাওয়ার যোগ্য ছিলেন না। তবে তিনি নিয়ম পরিবর্তন ও বিধিনিষেধ উপেক্ষা করে এই জমি বরাদ্দ নেন। সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য নির্ধারিত জমির লটারির প্রক্রিয়া এড়িয়ে তিনি ও তার পরিবারের সদস্যরা প্লটের মালিক হয়েছেন।

দুদকের আরও অভিযোগ, টিউলিপ সিদ্দিক একটি ভুয়া নোটারি নথি ব্যবহার করে ঢাকার গুলশানের একটি ফ্ল্যাট তার বোন আজমিনা সিদ্দিকের নামে হস্তান্তর করেছেন। ওই নথিতে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী গাজী সিরাজুল ইসলামের সিল ব্যবহার করা হয়েছে, তবে তিনি স্বাক্ষর জালিয়াতির অভিযোগ এনেছেন। চার্জশিটে বলা হয়েছে, সিরাজুল ইসলাম দাবি করেছেন, “যদিও সিলটি আমার নামে, কিন্তু স্বাক্ষরটি আমার নয়। আমি শুধুমাত্র আমার চেম্বারে বসে নোটারি নথি অনুমোদন করি এবং টিউলিপ বা আজমিনা সিদ্দিকের সঙ্গে আমার কোনো পরিচিতি ছিল না।”

টিউলিপ সিদ্দিক চলতি বছরের জানুয়ারিতে যুক্তরাজ্যের মন্ত্রীত্ব থেকে পদত্যাগ করেন। তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগগুলোর মধ্যে অন্যতম ছিল, তিনি আওয়ামী লীগের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সুবিধাভোগী ছিলেন। ব্যাপক রাজনৈতিক চাপে পড়ে তিনি পদত্যাগ করতে বাধ্য হন। তবে তিনি বরাবরই তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

দুদক জানিয়েছে, শেখ হাসিনার পরিবারের একাধিক সদস্যের বিরুদ্ধেও তদন্ত চলছে। সংস্থার চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আব্দুল মোমেন বলেন, “এটি কেবল আইসবার্গের চূড়া। আরও অনেক অভিযোগ তদন্তাধীন রয়েছে, যা সাবেক প্রধানমন্ত্রী এবং তার পরিবারের বিরুদ্ধে বিশাল দুর্নীতির চিত্র তুলে ধরবে।”

দুদকের দাবি, শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্যরা সরকারি জমির নিয়ম লঙ্ঘন করে নিজেদের স্বার্থে জমি বরাদ্দ নিয়েছেন। পূর্বাচল নিউ টাউন প্রকল্প থেকে শেখ হাসিনা, তার সন্তান ও ঘনিষ্ঠ আত্মীয়দের নামে অবৈধভাবে ৬০ কাঠা (প্রায় এক একর) সরকারি জমি বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

দুদকের এসব অভিযোগের বিষয়ে টিউলিপ সিদ্দিক বা শেখ হাসিনার পরিবারের পক্ষ থেকে এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি। চার্জশিট আদালতে আনুষ্ঠানিক অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। অনুমোদন পেলে মামলাটি বিচারিক প্রক্রিয়ায় প্রবেশ করবে।

সূত্র: https://youtu.be/DR_QNCtTHf4?si=H4uetggzSYkRqb2d

এম.কে.

×